মুক্তাগাছার মণ্ডা
- মৃত্যুঞ্জয় রায়
- ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
জানো, মণ্ডা বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি। বলতে পারো এটি একধরনের সন্দেশ। কাঁচাগোল্লার মতোই ওটা। তবে দানাটা ফেটিয়ে খুব মিহি করা হয়। অনেকটা প্যারা সন্দেশের মতোই, তবে কোনো জোড়া থাকে না। প্রতিটি সন্দেশ একটি করে পাতলা র্যা পিং পেপারে বা মোড়ক কাগজে মুড়ে বিক্রি করা হয়। মুক্তাগাছার মণ্ডা খুবই বিখ্যাত। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মণ্ডা ছিল এককালে জমিদারদের অন্যতম খাবার ঐতিহ্য। এখন তা সাধারণের। মণ্ডার মতো কাঁচাগোল্লাকে ছোট ছোট বলের আকারে গোল করে মোড়ক কাগজে মুড়ে বিক্রি করা হয়। কোথাও কোথাও তাকে বলে ‘বল সন্দেশ’। মুক্তাগাছার মণ্ডাও এ ধরনের। আজ তোমরা জানবে, এ ম-া সম্পর্কে একটি কাহিনী। জানা যায়, আনুমানিক ২০০ বছর আগে মুক্তাগাছার বিখ্যাত মণ্ডার জনক গোপাল পাল এক রাতে স্বপ্নাদিষ্ট হন। তিনি স্বপ্নে দেখেন, তার মাথার কাছে এক ঋষি দাঁড়িয়ে তাকে মণ্ডা তৈরির আদেশ দিচ্ছেন। পরদিন গোপাল তার আদেশে চুল্লি তৈরি করেন। দৈবাৎ সেখানে এক সাধু হাজির হন। তিনি সেই চুল্লিতে হাত বুলিয়ে দেন, গোপালকে শিখিয়ে দেন মণ্ডা তৈরি করার কলাকৌশল। গোপাল তার মণ্ডা তৈরি করে মুক্তাগাছার জমিদার মহারাজা সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরীর রাজদরবারে পরিবেশন করেন। মণ্ডা খেয়ে মহারাজা খুবই খুশি হন। সেই থেকে শুরু হলো মুক্তাগাছার মণ্ডা তৈরি।
কথিত আছে, গোপাল বাংলা ১২০৬ সালে মুর্শিদাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে তিনি চলে আসেন রাজশাহীতে। ১২৩০ সালে শুরু করেন মণ্ডা তৈরি করার কাজ। মণ্ডার মূল উপাদান দুধ আর চিনি। চুলার আদি স্থানটি এখনো আছে। মুক্তাগাছার মণ্ডা তৈরির কাজ বংশপরম্পরায় চলে আসছে। পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান, পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ডা. বিধানচন্দ্র রায়, প্রখ্যাত সরোদবাদক ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ প্রমুখ মুক্তাগাছার মণ্ডা খেয়ে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছিলেন। মিষ্টিবিলাসী সবার কাছে মুক্তাগাছার মণ্ডা এখনো লোভনীয় এক ব্যাপার।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা