০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০ মাঘ ১৪৩১, ৩ শাবান ১৪৪৬
`

ম্যার ডাল্স

ম্যার ডাল্স -

হ্রদটিকে নিকারাগুয়ানরা আদর করে ডাকে ‘ম্যার ডাল্স’ (মিষ্টি সাগর); আসলে হ্রদটির নাম নিকারাগুয়া হ্রদ।
আবার, নিকারাগুয়া একটি দেশের নাম। এ দেশের প্রাকৃতিক ললনা নিকারাগুয়া হ্রদ। দেশের নাম ও হ্রদের নাম একই। হ্রদটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর বিশালতায় অনন্য। যে পর্যটক দেখেছে সে-ই হ্রদের রূপে মজেছে। হ্রদ হলেও এটি নিকারাগুয়ার নিজস্ব সাগর হিসেবে পরিচিত।
সত্যি বলতে কি, সাগরের অনেক গুণ রয়েছে এ হ্রদের। এর এক কূল থেকে অন্য কূল দেখা যায় না; কূলপিয়াসী চোখে ভাসে শুধু নীল দূর দিগন্ত। অনন্ত যেন তার সীমানা।
মিঠাপানির হ্রদে যেন সাগরের দুরন্ত ঢেউ খেলে, কখনো বা ভয়ঙ্কর ঝড় ওঠে। কার সাধ্য, এ ঝড়ে হ্রদ পাড়ি দেয়! হ্রদে বিশ্বের একমাত্র মিঠাপানির হাঙর আছে। এ ছাড়া আছে বিভিন্ন ধরনের জলজ প্রাণী ও মাছ।
সাগরগুনা হ্রদটির জলরাশিতে রয়েছে অসংখ্য দ্বীপ, দ্বীপপুঞ্জ। এখানকার উল্লেখযোগ্য দ্বীপের নাম ওপেটেপে, নাহুত্ল ভাষায় যার অর্থ দ্ইু পর্বত। ধারণা করা হয়, খ্রিষ্টের জন্মের প্রায় দুই হাজার বছর আগেই এখানে জনবসতি গড়ে ওঠে। ১৬ শতকে স্প্যানিশরা মধ্য আমেরিকা দখল করলে দ্বীপটি জলদস্যুদের আক্রমণের শিকার হয়। দস্যুরা দ্বীপের নারী অপহরণ করে, পশু ও অন্যান্য সম্পদ নিয়ে যায়। কিছু দস্যুদল তাদের আশ্রয় সংহত করতে দ্বীপের উপকূলে বসতি স্থাপন করে। এখানে স্প্যানিশ, ইংরেজ ও ফরাসি জলদস্যুদের আনাগোনা ছিল।
সান জুয়ান নদী নিকারাগুয়া হ্রদের পানি নির্গমনপথ। নদীটি ক্যারিবিয়ান সাগরের সাথে হ্রদকে যুক্ত করেছে। আটলান্টিক মহাসাগরের অংশ ক্যারিবিয়ান সাগর থেকে জলদস্যুরা এ নদীপথে নিকারাগুয়া হ্রদে ঢুকে পড়ত। বর্তমানে এ হ্রদ আর এখানকার দ্বীপগুলো আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। হ্রদের সলেনটেইন দ্বীপপুঞ্জের চোখ ধাঁধানো রূপ মনোমুগ্ধকর।
হ্রদের আয়তন প্রায় ৮ হাজার ৬৬৪ বর্গকিলোমিটার। এটি আয়তনে ল্যাটিন আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং বিশ্বের একুশতম হ্রদ। এর দৈর্ঘ্য ১৬০ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ৭২ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ গভীরতা ২৬ মিটার। সাগর সমতল থেকে হ্রদের উচ্চতা প্রায় ৩২ মিটার। টিপিটাপা নদী নিকারাগুয়া হ্রদ এবং মানাগুয়া হ্রদের সংযোজক। নিকারাগুয়া হ্রদ থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের দূরত্ব কম, কিন্তু এ মহাসাগরের সাথে সংযোগ নেই। আটলান্টিক মহাসাগরের দূরত্ব বেশি হলেও নদীপথে সংযুক্ত।


আরো সংবাদ



premium cement