হারানো দিনের তুলোট কাগজ
- মৃত্যুঞ্জয় রায়
- ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০৫
জানো, ‘কাগজ’ কথাটা ফার্সি। এ দেশে ত্রয়োদশ শতাব্দীর আগে কোনো কাগজ তৈরি হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ ভূখণ্ডে কাগজের প্রচলন করেন মুঘল শাসকরা। তবে প্রাচীনকালে, বিশেষ করে দশম শতাব্দী থেকে শুরু করে আঠারো শতকে ছাপাখানা তৈরি হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সময়টা ছিল পুঁথি সাহিত্যের যুগ।
বাংলায় পুঁথি লেখার কাগজকে বলা হতো তুলোট কাগজ। এক সময় এ কাগজ তুলা থেকে তৈরি করা হতো বলে সে কাগজের নাম ছিল তুলোট কাগজ। তবে শুধু তুলাই নয়, তুলোট কাগজ তৈরি হতো পাট, শণপাট, তুঁতগাছের বাকল, পুরনো কাপড়, ঘাস, খড় ইত্যাদি থেকেও মণ্ড তৈরি করে তা তুলোট কাগজ তৈরিতে ব্যবহার করা হতো। সে যুগে ঢেঁকিতে পাট, শণপাট ইত্যাদি ছেঁচে মণ্ড তৈরি করা হতো। নারী-পুরুষ সবাই মিলে মণ্ড ও তুলোট কাগজ তৈরি করত বলে জানা যায়। মণ্ড থেকে তৈরি করা কাগজ প্রথমে রোদে শুকানো হতো এবং পরে তা লাউ বা তেঁতুলের বিচির কষ ও হরিতাল মেখে হলুদ রঙের করা হতো। এর ফলে সেসব কাগজ পোকায় কাটত না। হলুদ রঙ করা হতো বলে এ ধরনের কাগজকে হরিতালি কাগজও বলা হতো।
প্রাচীনকালে ঢাকা ছিল তুলোট কাগজ তৈরির প্রাণকেন্দ্র। যারা এ কাজ করতেন তাদের বলা হতো কাগজী। ঢাকায় যে এলাকায় কাগজী সম্প্রদায়ের লোকেরা বাস করত সে এলাকার নাম কালক্রমে হয়ে যায় কাগজীটোলা। মধ্যযুগে এ ধরনের তুলোট কাগজেই পুঁথি লেখা হতো। কলের কাগজ আসার পর এ ঐতিহ্য লুপ্ত হয়ে গেছে। জাদুঘরে রক্ষিত পুরোনো পুঁথিগুলো দেখলে তুলোট কাগজ সম্পর্কে ধারণা আরো পরিষ্কার হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা