০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ পৌষ ১৪৩১, ৩ রজব ১৪৪৬
`

তোরাজা মানুষ

-

ইন্দোনেশিয়ার একটি নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী ‘তোরাজা’। দক্ষিণ সুলাউইসির পার্বত্য অঞ্চলে এদের বসবাস।
তোরাজা শব্দটি এসেছে বাগিস ভাষার রিয়াজা শব্দ থেকে, যার অর্থ উচ্চ ভূমির মানুষ। ১৯০৯ সালে ডাচ ঔপনিবেশিক সরকার এ জনগোষ্ঠীর নামকরণ করে।
তোরাজা জনসংখ্যা প্রায় ১১ লাখ । এর ৪ লাখ ৫০ হাজার বাস করে রিজেন্সি অব তানা তোরাজায় (তোরাজাদের ভূমি)।
তোরাজারা কথা বলে প্রধানত সাদান তোরাজা ভাষায়। ইন্দোনেশিয়ান এদের সরকারি ভাষা। এ সম্প্রদায় এ ভাষায়ও কথা বলতে পারে। তানা তোরাজা এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় তোরাজা ভাষা শিক্ষা দেয়া হয়। কিছু তোরাজা কালুমপাং, মামাসা, তারে, তালোন্দো ও তোয়ালা ভাষায় কথা বলে।
তোরাজা জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগ খ্রিষ্ট ধর্ম অনুসরণ করে। কিছু পালন করে ইসলাম। সর্বপ্রাণবাদের অনুসারীও আছে। ২০ শতকে তোরাজারা ব্যাপকভাবে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করে। ডাচ মিশনারিদের চেষ্টায় তোরাজা সমাজে ব্যাপকভাবে খ্রিষ্টধর্ম প্রবেশ করে। বর্তমানে মোট তোরাজা জনসংখ্যার প্রায় ৬৫ শতাংশ খ্রিষ্টান।
১৭ শতক থেকে ডাচরা সুলাউইসিতে ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে। ২০০ বছরের বেশি সময় ধরে এরা মধ্য সুলাউইসির পার্বত্য এলাকাকে অবজ্ঞা করে যেখানে তোরাজাদের বাস। পরবর্তীকালে ডাচরা তোরাজাদের খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালায়।
তস্কোন্যান তোরাজা পূর্বপুরুষের ঐতিহ্যবাহী ঘর। উচ্চ কাঠের খুঁটিতে এ ঘর তৈরি করা হয়। ছাদ দেয়া হয় বাঁশের ফালি দিয়ে, যা খিলানের মতো। বাইরের দেয়ালে কাঠের খোদাই থাকে। এগুলোতে লাল, কালো ও হলুদ রঙ দেয়া হয়।
কাঠ খোদাইয়ের কাজে তোরাজারা বেশ দক্ষ। খোদাইয়ে এরা বিভিন্ন প্রাণী ও গাছপালা ফুটিয়ে তোলে।
তোরাজা সমাজে অনেক প্রাচীন ঐতিহ্য এখনো অনুসরণ করা হয়। এ সমাজে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া বা দাফনের ধর্মীয় আচার বিস্তৃত ও ব্যয়বহুল। ধনী ও মহৎ মানুষের মৃত্যুর পর ভোজের অনুষ্ঠানে হাজার হাজার মানুষ যোগদান করে এবং এটি চলে কয়েক দিন।
তোরাজারা নাচ ও গান পছন্দ করে। এদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নাচের আয়োজন করা হয়। ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও এরা নাচে। এর মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির প্রতি দুঃখ ও সম্মান প্রকাশ করা হয়।
এক সময় কৃষিকাজ তোরাজা অর্থনীতির ভিত্তি ছিল। আজকাল পর্যটন শিল্পে এরা অনেক এগিয়ে গেছে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল