১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

বিশ্ব ঐতিহ্য টিস্কেব্রিগেন

বিশ্ব ঐতিহ্য টিস্কেব্রিগেন -

বলছি টিস্কেব্রিগেনের কথা। এর অপর নাম কী? ব্রিগেন। এটি মধ্যযুগের গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থাপনা, এক বিস্ময়। নরওয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বার্গেনে আসার পথে ফজোর্ডের পূর্ব ধারে এর অবস্থান। ফজোর্ড হচ্ছে এক ধরনের দীর্ঘ ও সরু জলাশয়, যার ধার বেশ খাড়া।
টিস্কেব্রিগেন বলতে বোঝায় এক ধরনের অবকাঠামো বা স্থাপনা, যা কোনো পোতাশ্রয়ের উপকূলে জাহাজে মাল ভরা ও খালাসের কাজে ব্যবহার করা হয়। এতে থাকে সারিবদ্ধ বিশেষ ধরনের দালান বা পণ্যসামগ্রীর গুদাম। তার মানে টিস্কেব্রিগেন হচ্ছে বিশেষ ধরনের বন্দর।
বার্গেন শহর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১০৭০ সালে। আর এখানে হ্যানসিটিক লিগের একটি কন্টর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৩৬০ সালে। হ্যানসিটিক লিগ বলতে বোঝায় উত্তর ইউরোপের নগরগুলোর বাণিজ্যিক সঙ্ঘ, যা টিকে ছিল ১৩ থেকে ১৭ শতক পর্যন্ত। আর কন্টর হচ্ছে বৈদেশিক বাণিজ্য কেন্দ্র। ধরা যাক, হ্যানসিটিক লিগের যুগে জার্মানির হামবুর্গ শহর নরওয়ের বার্গেন নগরে একটি বাণিজ্য কেন্দ্র খুলল। তাহলে সাধারণ অর্থে এটি হলো বার্গেনে হামবুর্গের একটি কন্টর।
একসময় টিস্কেব্রিগেনের প্রশাসনিক ভবনগুলোয় অনেক কেরানির বাসস্থানের ব্যবস্থা হয়েছিল। এরা হ্যানসিটিক লিগের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছিল। তবে বেশি এসেছিল জার্মানি থেকে। টিস্কেব্রিগেনের গুদামগুলো পণ্যসামগ্রীতে ভরা থাকত। এখানে বেশি পাওয়া যেত নরওয়ের মাছ এবং ইউরোপের অন্যান্য এলাকার শস্যকণা। ইতিহাসের যুগপরিক্রমায় বার্গেন শহর বহুবার আগুনে পুড়েছে। এখানকার বেশির ভাগ বাড়ি ছিল কাঠের তৈরি। বার্গেনের অগ্নিকাণ্ডের বিশেষ কারণ ছিল টিস্কেব্রিগেন।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ১৭০২ সালে টিস্কেব্রিগেন অগ্নিদগ্ধ হয়। এর ফলে বার্গেন হয় ক্ষতিগ্রস্ত। ১৯৫৫ সালে সর্বশেষ টিস্কেব্রিগেন পুড়ে। তবে ঐতিহ্য ঠিক রেখে এটি পুনর্নির্মাণের চেষ্টা করা হয়। এখন টিস্কেব্রিগেনের পুরনো ভূ-দৃশ্যসহ মাত্র ৬২টি বাড়ি টিকে আছে। আর এগুলোই বিশ্ব ঐতিহ্যের বিশেষ অংশ। ১৯৭৯ সালে ব্রিগেন (টিস্কেব্রিগেন) সাংস্কৃতিক কারণে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য স্থানের মর্যাদায় ভূষিত হয়।


আরো সংবাদ



premium cement