বিশ্ব ঐতিহ্য হাট্রা
- সেলিম বুলবুল চৌধুরী
- ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
বলছি হাট্রার কথা। এটি একটি পার্থিয়ান নগরী। এর অবস্থান ইরাকে। ইরাক এক সময় পার্থিয়ান সাম্রাজ্য বা ইরানের অধীন ছিল। ধ্বংসপ্রাপ্ত এ নগরীতে জার্মান প্রতœতত্ত্ববিদরা খননকাজ শুরু করে ১৯০৭ সালে। এ সময় ইরাক ছিল ওসমানীয় সাম্রাজ্যের (তুরস্ক) অংশ। অনুসন্ধান চলে কয়েক দশকব্যাপী। ১৯৮৫ সালে এ নগরী ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য স্থানের মর্যাদায় ভূষিত হয়। খ্রিষ্ট-পূর্ব তিন শতকে সেলিসিউড বা আলেকজান্ডারের উত্তরসূরিরা হাট্রা প্রতিষ্ঠা করে। খ্রিষ্ট-পূর্ব দ্বিতীয় শতকে নানান ঘটনাপ্রবাহে নগরীটি পার্থিয়ানদের অধীনে যায়। এ সময় এটি সমৃদ্ধ নগরীতে পরিণত হয়।
১৯৯০-এর দশকে ইরাক সরকার হাট্রার পুনরুদ্ধার প্রকল্প শুরু করে। এতে নগরীর অনেক হারিয়ে যাওয়া বিষয় উদ্ধার হয়।
হাট্রা বেশ বড় ছিল। এর কার্যক্রম চলত কাছাকাছি দু’টি বৃত্তাকার দেয়ালের অভ্যন্তরে। বাইরের দেয়াল ছিল প্রায় ৮ কিলোমিটার লম্বা, ব্যাসার্ধ দুই কিলোমিটার এবং এটি ছিল মাটির তৈরি। বাইরের দেয়াল ও ভেতরের দেয়ালের মাঝে একটি গভীর পরিখা ছিল, যার প্রস্থ ছিল ৩০০ থেকে ৫০০ মিটার। ভেতরের দেয়াল পাথরের তৈরি ছিল এবং এর উচ্চতা ছিল দুই মিটার। এতে ছিল প্রায় ১৬৩টি প্রতিরক্ষা বুরুজ এবং এগুলোর দূরত্ব ৩৫ মিটারের বেশি ছিল না। নগরীর অভ্যন্তরে আত্মরক্ষার্থে প্রবেশের জন্য চারটি গেট ছিল। হাট্রার নগরকেন্দ্রে কয়েকটি মন্দির ছিল। মন্দির-এলাকার আয়তন ছিল প্রায় ১২ হাজার বর্গমিটার। এখানে মেসোপটেমীয় ধর্মের দেবতা নেরগাল, গ্রিক ধর্মের দেবতা হারমিস, অ্যারামীয় ধর্মের দেবতা আতারগাতিস, আরব ধর্মের দেবতা ছিল আল-লাত ও শামিয়াহ। এদেরকে খুব শ্রদ্ধা করা হতো। অন্যান্য মন্দির উৎসর্গ করা হয়েছিল শাহিরু, মিথ্রা, মারান, শিউ ও সাকায়াকে। হাট্রায় বিভিন্ন ধর্মের সহাবস্থান ছিল এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। এভাবে হাট্রা ওই সময় বিখ্যাত হয়। একে বলা হতো বেত এলাহা (ঈশ্বরের বাড়ি)।
হাট্রার স্থাপত্য ও শিল্পকর্মে আরব, অ্যাসিরিয়া, গ্রিস, সর্বোপরি পার্থিয়ান প্রভাব লক্ষণীয়।
হাট্রা নগরী প্রথম আরব রাজ্যের রাজধানী ছিল। তবে এটি পার্থিয়ানদের করদরাজ্য ছিল। আরব রাজবংশের পরিচালনায় হাট্রার সৈনিকরা সাহসী ছিল। এরা রোমান আক্রমণ প্রতিহত করে। তবে ১১৬ খ্রিষ্টাব্দে হাট্রা রোমানদের অধীনে যায়। পরে রোমান অধিকার থেকে বেরিয়ে আসে এবং ইরানিদের পরাজিত করে। পরে হাট্রার রাজকুমারীর অপরিণামদর্শিতার জন্য রাজ্যটি সাসানীয় (ইরানি) শাসক প্রথম শাপুরের অধীনে যায়। নগরটি কবে ধ্বংস হয়েছিল তা স্পষ্ট নয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা