পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি মামলায় অধিকতর তদন্ত করবে দুদক
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২:২০
ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের কার্যাদেশ পাইয়ে দেয়ার অভিযোগে রাজধানীর বনানী থানায় দায়ের করা মামলাটি পুনঃ তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এ তথ্য জানান মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় ২০১২ সালে মামলা করা হয়। দুই বছর পর মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়েছিল। সেটি নতুন করে তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আক্তার হোসেন বলেন, তদন্তে তথ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় তখন চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়েছিল। এখন পদ্মা সেতুর অনিয়ম নিয়ে তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ কারণে মামলাটি পুনঃ তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা একে-অপরকে আর্থিক লাভবান করার অসৎ উদ্দেশ্যে ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্মাণকাজে পরামর্শক নিয়োগসংক্রান্ত দরপত্রের অন্যতম দরদাতাকে কার্যাদেশ পাইয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন।
এসব ব্যক্তির মধ্যে আছেন সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মো: মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (নদীশাসন) কাজী মো: ফেরদাউস, সড়ক ও জনপথ সওজ অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: রিয়াজ আহমেদ জাবের, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোস্তফা, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড প্ল্যানিং কনসালট্যান্ট লিমিটেডের (ইপিসি) পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল, এসএনসি নাভালিন ইন্টারন্যাশনাল ইনকের সাবেক পরিচালক রমেশ শাহ ও সাবেক সহসভাপতি কেভিন ওয়ালেস।
দুদক মহাপরিচালক বলেন, ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করে দুদক। ওই সময় এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়ার মতো দালিলিক প্রমাণ ছিল না। এ কারণে প্রায় দুই বছর তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে নতুন করে কিছু তথ্য উঠে এসেছে। ফলে দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে মামলাটির অধিকতর তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
তিনি বলেন, উল্লেখিত অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে ঘুষ লেনদেন ও ষড়যন্ত্রমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তারা পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্মাণকাজে তদারকি পরামর্শক নিয়োগ সংক্রান্ত দরপত্রের অন্যতম দরদাতা লাভালিন ইন্টারন্যাশনাল ইনককে (এসএনসি) কার্যাদেশ পাইয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করার অভিপ্রায়ে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করেছেন। যে কারণে তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারার অপরাধ সংঘটনের ষড়যন্ত্রের দায়ে দণ্ডবিধির ১২০ (বি) ধারায় বনানী থানায় ২০১২ সালে মামলা করা হয়। তদন্ত শেষে আদালতে এফআরটি দাখিল করা হয় ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেবর।