০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ জিলহজ ১৪৪৫
`

শিরোপা পুনরুদ্ধার করল ভারত, প্রোটিয়াদের স্বপ্নভঙ্গ

২য় বারের মতো টি-২০ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত - ছবি : সংগৃহীত

অবশেষে অপেক্ষা ঘুচলো ভারতের, ফিরে পেল সিংহাসন। ১৭ বছর পর শিরোপা পুনরুদ্ধার করল রোহিত শর্মার দল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নতুন চ্যাম্পিয়ন তারা। প্রোটিয়াদের আরো একবার দুঃখ রজনী উপহার দিয়ে উল্লাসে মাতলো ব্লু জার্সিধারীরা।

খুব কাছে গিয়েও শিরোপা দখলে নেয়া হলো না দক্ষিণ আফ্রিকার। বার্বাডোজে তাদের হার ৭ রানে। টসে হেরে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৭৬ রান করে ভারত। জবাবে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রানে থামে প্রোটিয়াদের ইনিংস। মাহেন্দ্র সিং ধোনির পর রোহিতও বিশ্বকাপ উপহার দিলেন দেশবাসীকে।

‘চোকার্স’ শব্দটা ফাইনালেও পিছু ছাড়ল না দক্ষিণ আফ্রিকার। সাত সাতবারে চেষ্টায় ফাইনালে আসা প্রোটিয়াদের প্রথম সুযোগেই খুব ভালো করেই ছিল শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা। ৩০ বলে ৩০ রান, হাতে ৬ উইকেট! এমন সমীকরণে কেবল তারাই হারতে পারে।

রান তাড়ায় শুরুটাই ভালো হয়নি প্রোটিয়াদের ২.৩ ওভারে মাত্র ১২ রানে জোড়া উইকেট হারিয়ে বসে তারা। দ্বিতীয় ওভারেই রেজা হেনড্রিকসকে ফেরান বুমরাহ, ৫ বলে ৪ রানে আউট হন তিনি৷ পরের ওভারে অধিনায়ক মার্করামকে (৫) তুলে নেন আর্শদ্বীপ সিং।

সেই চাপ থেকে দলকে উদ্ধার করেন ডি কক ও ট্রিস্টান স্টাবস। পরের ৩৭ বলে ৫৮ রানের জুটি আসে দু'জনের মাঝে। তবে স্টাবস স্ট্যাম্প ছেড়ে খেলতে গিয়ে ৮.৫ ওভারে ফেরেন অক্ষরের বলে। ২১ বলে ৩১ রানে শেষ হয় তার ইনিংস।

তবে হেনরিখ ক্লাসেন সেই ধাক্কা বুঝতে দেননি। ডি কককে নিয়ে ১২ ওভারে পাড়ি দেন তিন অঙ্কের ঘর। কমিয়ে আনার চেষ্টা করেন বল আর রানের ব্যবধান। তবে ডি কক পারেননি ইনিংসটা বড় করতে। থামেন ৩১ বলে ৩৯ রানে। ১৩ ওভার শেষে সংগ্রহ ১০৯/৪।

সেখান থেকে পরের দুই ওভারে ঝড় তুলেন ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার। কুলদীপের ওভারে ১৪ রানের পর অক্ষরের ওভারে নেন ২৪। তাতে সমীকরণ চলে আসে হাতের মুঠোয়। শেষ ৩০ বলে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন দেখা দেয় ৩০ রানের, হাতে ৬ উইকেট।

তবে এরপর বুমরাহ টেনে ধরেন রানের গতি। পরের ওভারে এসে গলার কাঁটা হয়ে উঠা ক্লাসেনকে ফেরান হার্দিক। ২৩ বলে ফিফটি তুলা এই প্রোটিয়া ফেরেন ২৭ বলে ৫২ রানে। এরপর মার্কো জানসেন ফেরেন ৪ বলে ২ রানে। পরের ৩ ওভারে আসে মোটে ১০ রান।

শেষ ২ ওভারে সমীকরণ বেড়ে দাঁড়ায় ২০ রানে। তবে ১৯তম ওভারে মাত্র ৪ রান আসলে বিপদ আরো বাড়ে। শেষ ওভারের প্রথম বলেই ফেরেন ডেভিড মিলার, দক্ষিণ আফ্রিকা যেন হারিয়ে ফেলে শেষ সম্বলটাও। ১৭ বলে ২১ করে সূর্য কুমারের ক্যাচ হয়ে ফেরেন তিনি।

২ বলে যখন ৯ রান প্রয়োজন, তখন রাবাদা ৩ বলে ৪ রানে ফিরলে এক বল হাতে রেখেই হার নিশ্চিত হয়ে যায় প্রোটিয়াদের। হার্দিক পান্ডিয়া ৩, জাসপ্রিত বুমরাহ ও আর্শদ্বীপ নেন জোড়া উইকেট করে।

এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে চাপে পড়ে ভারতও। যদিও বার্বাডোজে ১.৩ ওভারে ২৩ রান তুলে বড় কিছুর আভাস দিয়েছিল তারা৷ তবে এরপরই আসে ধাক্কা। ৩ বলের ব্যবধানে হারায় ২ উইকেট। দারুণ ছন্দে থাকা অধিনায়ক রোহিত শর্মা ফেরেন ৫ বলে ৯ রানে।

একবল পর রিশাভ পান্তের উইকেট হারায় ভারত। ২ বল খেলেও রানের খাতা খুলা হয়নি তার। সেই ধাক্কা সামলে উঠার আগে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্লাসেনের দারুণ ক্যাচে পরিণত হন সূর্যকুমার যাদব (৩)। ৪.৩ ওভারে সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৪/৩।

যেই কোহলি আসর জুড়ে নিজেকে হারিয়ে খুঁজেছেন, তিনিই ফাইনালে পথ দেখালেন ভারতকে। অক্ষর প্যাটেলকে নিয়ে শক্ত করেন ইনিংসের মেরুদণ্ড। ৫৪ বলে গড়েন ৭২ রানের জুটি। তবে দারুণ খেলতে থাকা অক্ষরকে ফিরতে হয় রান আউট হয়ে।

১৩.৩ ওভারে অক্ষর ফেরেন ৪১ বলে ৪৭ রানে। এরপর শিভাম দুবেকে নিয়ে এরপর থেকে দলকে টানেন কোহলি। ৪৮ বলে পূরণ করেন ফিফটি। তাতে বসে যান বাবর আজমের পাশে, বনে যান টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ফিফটির মালিক (৩৯)।

এরপর আরো আগ্রাসী হয়ে উঠেন কোহলি। পরের ১০ বলে তুলেন ২৬ রান। যদিও অপরাজিত থেকে ফেরা হয়নি, ১৯তম ওভারে ফেরেন ৫৯ বলে ৭৬ রানে। দুবে ফেরেন পরের ওভারে ১৬ বলে ২৭ রানে৷ কেশভ মহারাজ ও এনরিখ নর্টযে নেন জোড়া উইকেট।


আরো সংবাদ



premium cement