২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ইতিহাস গড়ে সেমিফাইনালে আফগানিস্তান, বিদায় বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার

- ছবি : সংগৃহীত

ইতিহাস গড়ল আফগানিস্তান। স্বপ্নের সেমিফাইনালে রশিদ খানের দল। বাংলাদেশকে সমীকরণের গোলকধাঁধায় আটকে প্রথমবারের মতো কোনো আসরের শেষ চারে তারা। যা তাদের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় অর্জন। তাতে সুপার এইট থেকেই বিদায় অস্ট্রেলিয়ারও।

ভাগ্য একটা সুযোগ করে দিয়েছিল বাংলাদেশকে। জোড়া হারের পরও খুলে দিয়েছিল শেষ চারের সম্ভাবনার দুয়ার। তবে সমীকরণের মারপ্যাঁচ মেলাতে পারেনি টাইগাররা। বরং সেই লক্ষ্যে ছুটতে গিয়ে ৮ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ।

এর আগে, সেন্ট ভিনসেণ্টে আজ মঙ্গলবার টসে জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় আফগানিস্তান। তবে বাংলাদেশের বোলারদের চাপের মুখে খুব বেশিদূর দৌড়াতে পারেনি রশিদ খানের দল। ৫ উইকেটে ১১৫ রান তুলে শেষ হয় তাদের ইনিংস। কিন্তু বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশের জন্যে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৯ ওভারে ১১৪। তবে টাইগারদের ইনিংস থামে ১৭.৫ ওভারে ১০৫ রানে।

জয়টা মোটেও সহজে আসেনি। ১১৬ রানের লক্ষ্যে দু’দল লড়াই করেছে চোখে চোখ রেখে। তবে স্বপ্নবাজ আফগানদের নিরাশ করেনি ভাগ্য। গ্রুপ-১ থেকে ভারতের সাথে শেষ চারে তারা। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা।

আবার ম্যাচে ফেরা যাক। বাজে সময়ের ঘূর্ণিপাকে যেন আটকা পড়েছেন তানজিদ তামিম। আবারো ডাক মারলেন তিনি। ভারতের বিপক্ষে গত ম্যাচে ২৯ রানের ইনিংস খেলে ফর্মে ফেরা ইঙ্গিত দিলেও, আজ ফের পারেননি রানের খাতা খুলতে। গত চার ম্যাচে এটা তার তৃতীয় ডাক!

তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্তও। আগের দুই ম্যাচে চল্লিশোর্ধ রানের ইনিংস খেলা বাংলাদেশ অধিনায়ক ফিরেছেন মাত্র ৫ রানে। ২.৪ ওভারে মাত্র ২৩ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চিন্তার ভাঁজ বাংলাদেশের কপালে।

পরের বলেই নাভিনের বলে তার হাতে ক্যাচ দিয়েই ফিরেছেন তিনি। তার গোল্ডেন ডাক বেশ চাপে ফেলে দিয়েছে দলকে। সৌম্য সরকার এসে চেষ্টা করলেও ১০ রানের বেশি আসেনি তার ব্যাটে। রশিদ খান স্ট্যাম্প ভেঙে দেন তার। ৬.৩ ওভারে ৪৮ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

সেখান থেকে বাংলাদেশকে সেমিফাইনালের দৌড়ে আর ফিরতে দেননি রশিদ। দ্রুতই পরের তিনটা উইকেটও নেন তিনি, ভেঙে দেন বাংলাদেশের ইনিংসের মেরুদণ্ড। দারুণ ছন্দে থাকা তাওহীদ হৃদয়কে ফিরিয়েই মূলত ঘুরিয়ে দেন ম্যাচের মোড়। ৯ বলে ১৪ রান করেন হৃদয়।

এরপর নড়বড়ে মাহমুদউল্লাহকে ১০.৫ ওভারে ফেরানোর পর, পরের বলেই গোল্ডেন ডাক উপহার দেন রিশাদকে। ১১ ওভারে ৮০ রানে ৭ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৯২ রানের মাথায় গুলবাদিন নাইব তানজিম সাকিবকে ফেরালে চাপ আরোবাড়ে। যদিও তখনো ভরসা হয়েই দলকে আগলে ছিলেন লিটন দাস।

লিটন দাস ছিলেন শেষ পর্যন্ত, তবে দলকে জেতাতে পারেননি তিনি। তাকে দর্শক বানিয়ে অপরপ্রান্ত থেকে তাসকিন ও মোস্তাফিক আউট হয়ে যান। লিটন ৪৯ বলে ৫৪ রানে অপরাজিত থাকলেও তা জয়ের জন্য যথেষ্ট হয়নি।

এর আগে, টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে আফগানরা পেয়ে যায় ভালো শুরু। ১০. ৪ ওভারে রিশাদ হোসেনের হাত ধরে আসে প্রথম উইকেট। জমে ওঠা আফগানদের ৫৯ রানের উদ্বোধনী জুটি ভেঙেছেন তিনি। তানজিমের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান ইবরাহিমকে। ২৯ বলে ১৮ করে আউট হন এই ব্যাটার।

ইবরাহিম আউট হতেই চাপ আরো বাড়ে আফগানদের। পরের ১৮ বলে আসে মাত্র ৪ রান! সেই চাপ ধরে রেখে দ্রুত আরো কয়েকটা উইকেট তুলে নেয় টাইগাররা। মোস্তাফিজ এই ফাঁকে ফেরান আজমতুল্লাহ ওমরজাইকে। ১২ বলেন ১০ রান আসে তার ব্যাটে।

পরের ওভারে আবারো দৃশ্যপটে রিশাদ। ১৬.১ ওভারে থিতু হয়ে যাওয়া গুরবাজকে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই ফেরান তিনি। ৫৫ বলে ৪৩ রানে আউট হন গুরবাজ। এক বল পর গুলবাদিন নাইবকেও (৪) ফেরান এই লেগ স্পিনার। পরের ওভারে তাসকিনের শিকার হন মোহাম্মদ নাবি (১)।

শেষ দিকে রাশিদ খানের ১০ বলে ১৯* রানের ঝড়ে ১১৫ পর্যন্ত পৌঁছায় আফগানিস্তান। ৩ উইকেট নেন রিশাদ।


আরো সংবাদ



premium cement