২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১, ২৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ : ব্যাটারদের রাজ্যে বোলারদের আধিপত্য

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ : ব্যাটারদের রাজ্যে বোলারদের আধিপত্য - ছবি : সংগৃহীত

ব্যাটারদের অঘোষিত রাজত্ব চলছে আধুনিক ক্রিকেটে। টি-টোয়েন্টিতে যা আরো একধাপ এগিয়ে। রান বন্যার এই ফরম্যাট কখনো কখনো বোলাররা হয়ে যান অসহায়। ব্যাটারদের দাপটে কিছুই করার থাকে না তাদের আর। যদিও এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন রূপ।

বিশ্বকাপে রান বন্যা হবে এমনটাই ধারণা করা হচ্ছিলো আসর শুরুর আগে। তবে টুর্নামেন্টের পর্দা উঠতেই দেখা গেল ভিন্নতা। কালেভদ্রে দুই-একটা ম্যাচে রানের দেখা মিললেও বাকি খেলাগুলো শেষ হয়েছে স্বল্প রানে। যদিও তাতে উত্তেজনার কমতি ছিল না, বোলাররা মাতিয়ে রেখেছেন আসর।

বিশ্বকাপে ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে গ্রুপ পর্বের খেলা। যেখানে ২০ দল মিলে ৪ গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলেছে মোট ৪০ ম্যাচ। যদিও ফল এসেছে ৩৬টি ম্যাচ থেকে। যেখানে দুই শ' পেরোনো ইনিংস হয়েছে মাত্র তিনবার। সর্বোচ্চ ২১৮ রান আসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের থেকে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে।

দেড় শ' পেরোনোই যেখানে রীতিমতো স্বপ্নের সমান। সেখানে দুই শ’ বেশ বড় সংগ্রহই বটে। যার প্রভাব পড়েছে ব্যক্তিগত পারফর্মেন্সেও। এখন পর্যন্ত কারো ব্যাটে আসেনি একটা শতকও। সর্বোচ্চ ৯৮ রানের ইনিংস আসে নিকোলাস পুরানের ব্যাটে।

এখন পর্যন্ত ফিফটি হয়েছে মাত্র ২৬টি। জোড়া ফিফটি আছে কেবল রহমানুল্লাহ গুরবাজ, স্টয়নিস ও বেন্ডন ম্যাকমিলানের। সবচেয়ে বেশি স্ট্রাইকরেটও স্টয়নিসের, ১৯০.২৪। তাছাড়া হ্যারি ব্রুক ১৮৬ ও ফিলিপ সল্ট ১৭৭ স্ট্রাইকরেটে করেন যথাক্রমে ৬৭ ও ৬০ রান।

এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান রাহমানুল্লাহ গুরবাজের, ৪ ইনিংসে ১৬৭। ১৬৪ রান নিয়ে দুইয়ে নিকোলাস পুরান। তিনে থাকা স্টয়নিসের রান ১৫৬। তাছাড়া ১৫২ রান করেছেন আরেক আফগান ইবরাহীম জাদরান। ১৪৮ রান নিয়ে পাঁচে ট্রাভিস হেড।

বিশ্বকাপ এখন পর্যন্ত দেখেছে মোট ৩২৮টা ছক্কা, চার এসেছে ৬৩৪টি। সর্বোচ্চ ১৩টি করে ছক্কা মারেন এরন জোন্স ও নিকোলাস পুরান। সর্বোচ্চ ১৭টি বাউন্ডারি মেরেছেন ইবরাহীম জাদরান। ১৪টি চার মারেন ট্রাভিস হেড।

সর্বোচ্চ উইকেটে সংগ্রাহকের তালিকাতেও শীর্ষে আছে আফগানিস্তান। ১২ উইকেট নিয়ে সবার উপরে ফজলে হক ফারুকী। ৯ উইকেট নিয়ে দুইয়ে আছেন তানজিম সাকিব, ট্রেন্ট বোল্ট, এনরিখ নর্খিয়া, আকিল হোসেন, অ্যাডাম জাম্পা ও আলজারি জোসেফ।

সর্বনিম্ন ইকোনমি টিম সাউদির, ৩.০০। এরপরই আছেন মোস্তাফিজুর রহমান, ৩.৩৮ ইকোনমি তার। মোস্তাফিজ প্রতি উইকেট পেতে খরচ করেছেন মোটে ৭.৭১ রান। যদিও তার উপরে আছেন আরো পাঁচজন। একধাপ নিচে থাকা তানজিম সাকিব উইকেট তুলেছেন ৮.০০ গড়ে।

এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে সেরা বোলিং করেছেন ফজলে হক ফারুকী, ৯ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট। আকিল হোসেনের আছে ১১ রানে ৫ উইকেট। এই দু'জনেই কেবল পেয়েছেন ৫ উইকেটের দেখা। তাছাড়া তিনে থাকা তানজিম সাকিব মাত্র ৭ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট।

এবারের বিশ্বকাপে ঘটেছে দুটো অদ্ভুত ঘটনা। যেখানে নেপালের বিপক্ষে মাত্র ১০৬ রানের পুঁজি নিয়েও ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এতো কম রান সংগ্রহ করে জেতেনি কোনো দল। টাইগারদের জয় ২১ রানে।

আর অন্যটি হলো, চার ওভার বল করে সবগুলো মেইডেন করে বিশ্ব রেকর্ড গড়েন নিউজিল্যান্ডের লকি ফার্গুনসন। ২৪ বলের প্রতিটি ডট দিয়ে তোলে নেন ৩ উইকেট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তানজিম সাকিব ডট দিয়েছেন ২১টি, তার উইকেট সংখ্যা ৪। তবে এবারে আসরে সর্বোচ্চ ডট এখনো মোস্তাফিজের, ৬৭টি।

গ্রুপ পর্ব শেষে সুপার এইটে উঠেছে আট দল। বাকী ১২ দল বিদায় নিয়েছে এবারের আসর থেকে। যেখানে আছে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার মতো দলও। গ্রুপ পর্ব থেকে ফিরেছে নিউজিল্যান্ডও। তাছাড়া, আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ডও আছে তালিকায়।

বাকি দলগুলো দুই ভাগে ভাগ হয়ে খেলবে সুপার এইট পর্ব। যেখানে গ্রুপ ওয়ানে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তানের সাথে আছে বাংলাদেশ। বিপরীতে গ্রুপ ২ তে আছে যুক্তরাষ্ট্র, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ।


আরো সংবাদ



premium cement