ইতিহাস গড়া জয়ে সুপার এইটে বাংলাদেশ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৭ জুন ২০২৪, ১০:১৭
ঈদের খুশি মাটি হতে দিলেন না সাকিব-মোস্তাফিজরা। ১০৬ রানের পুঁজি যথেষ্ট বানিয়ে দিয়েছেন তারা। নেপালকে রেকর্ড গড়েই হারিয়েছে বাংলাদেশ, প্রায় দেড় যুগ পর সুপার এইটে উঠেছে টাইগাররা। বিশ্বকাপে এতো কম পুঁজি নিয়ে জয়ের রেকর্ড নেই অন্য কোনো দলের।
সোমবার আরনস ভেল গ্রাউন্ডে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ১৯.৩ ওভারে ১০৬ রানেই আটকে যায় বাংলাদেশ। জবাবে নেপালকে ১৯.২ ওভারে মাত্র ৮৫ রানে গুটিয়ে দেন সাকিব-মোস্তাফিজরা। ২১ রানের জয়ে কোনো সমীকরণ ছাড়াই সুপার এইটে বাংলাদেশ।
প্রথম ইনিংসের পর অবশ্য ভয়েই ছিল বাংলাদেশ। ছিলো ঈদের আনন্দ মাটি হবার শঙ্কায়। তবে সেই শঙ্কার সমাধান হয়ে আসেন তানজিম সাকিব। একাই কাঁপিয়ে দেন নেপালের ব্যাটিং অর্ডার। তার বোলিংয়ে রীতিমতো চোখে সর্ষেফুল দেখতে থাকে গোয়ার্খালিরা।
ধারাভাষ্যকার স্যামুয়েল বাদ্রি পিচ রিপোর্টে বলেছিলেন, এই উইকেট স্পিনারদের জন্য স্বর্গরাজ্য। অথচভসেই উইকেটেই পেস আগুন ঝরান তানজিম সাকিব। সেই উত্তাপ কতটা প্রখর তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে নেপাল। মাত্র ৭ রান দিয়ে চার উইকেট নেন তানজিম।
তৃতীয় ওভারেই দলকে জোড়া উইকেট এনে দেন তানজিম। বোলিং আর শরীরী ভাষা দিয়ে তিনি কাঁপিয়ে দেন নেপালকে। সেই ধাক্কা আর তারা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। ফেরান কুশল ভুড়েল (২) ও অনিল শাহকে ডাক উপহার দিয়ে।
পরের ওভারে এসেও ধরে রাখেন চাপ। নেপাল অধিনায়ক রোহিতকে ফেরান মাত্র ১ রানে। একাই টানা তিন উইকেট নেয়ার পর তার সাথে জুটি গড়েন মোস্তাফিজ। থিতু হয়ে যাওয়া আসিফ শেখকে ১৭ রানে ফেরান তিনি। তবে সাকিব ঝড় থামেনি, নিজের শেষ ওভার করতে এসে সন্দীপ ঝরাকে ফেরান এই বোলার।
৭ ওভারে মাত্র ২৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো ধুঁকছিল নেপাল। তবে সেখান থেকে কুশাল মাল্লা ও দিপেন্দ্র সিং মিলে নেপালকে জয়ের আশা দেখাতে থাকেন। দুজনে মিলে গড়ে ফেলেন অর্ধশত রানের জুটিও। ৫২ রানের জুটির পর ফিজ সেই জুটি ভাঙেন। ৪০ বলে ২৭ রান করেন মাল্লা। গুলশান ঝা করেন শূন্য।
তখনও অবশ্য টাইগারদের গলার কাঁটা হয়ে টিকে ছিলেন দিপেন্দ্র সিং। তবে ১৯তম ওভারে দিপেন্দ্রকে ফিরিয়ে স্বস্তি এনে দেন মোস্তাফিজ। ৩১ বলে ২৫ করে আউট হন দিপেন্দ্র। ওই ওভারে কোনো রান আসেনি। ফলে শেষ ওভারে জয়ে জন্য প্রয়োজন ছিল ২২ রান, হাতে ২ উইকেট। তবে পরপর দুই বলে দুউ উইকেট তোলে সব শঙ্কা শেষ করেন সাকিব আল হাসান।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এতো কম রানের পুঁজি নিয়ে জেতেনি আগে কখনো কোনো দল। ফলে রেকর্ড গড়া জয় পায় বাংলাদেশ। এই জয়ে সুপার এইট তো বটেই, এক আসরে সর্বোচ্চ ম্যাচ জয়ের কীর্তি গড়লো টাইগাররা। এবারের আসরে ৪ ম্যাচের তিনটাতে জিতেছে শান্ত বাহিনী।
এর আগে ব্যাট হাতে মোটেও ভালো হয়নি বাংলাদেশের ইনিংস। প্রথম বলেই আত্মহত্যা করেন তানজিদ তামিম। সোমপালকে তার বলেই ক্যাচ দিয়ে গোল্ডেন ডাক নিয়ে ফেরেন তিনি। ওই ওভারে ফিরতে পারতেন লিটনও, রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান এই ব্যাটার।
লিটন সেবার বাঁচলেও বাঁচেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। দীপেন্দ্র সিংহের বল না বুঝে বোল্ড হয়েছেন দ্বিতীয় ওভারর তৃতীয় বলেই। ৫ বলে ৪ করে আউট হন তিনি। বাংলাদেশ অধিনায়কের যেন রান করার দিন আসছেই না!
লিটন দাস আর শান্তের মাঝে যেন প্রতিযোগিতা চলছে, কে কার চেয়ে বেশি খারাপ করতে পারে। যেখানে লিটন একটু পিছিয়েই থাকলেন, ১২ বলে ১০ রানে তিনি আউট হয়েছেন। ব্যর্থতার চোরাবালিতে দু'জনে যেন আটকা পড়েছেন।
থিতু হতে পারেননি তাওহীদ হৃদয়ও। দলের প্রয়োজনের সময়ে অহেতুক শট খেলে ফিরেছেন ভালো শুরু করেও। ৭ বলে ৯ রানে আউট হন তিনি। ৩১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে পাওয়ার প্লে শেষ করে বাংলাদেশ।
এরপর অবশ্য মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে ইনিংস গড়ার চেষ্টা করছিলেন সাকিব। তবে সেই সাকিবের ভুলেই কপাল পুড়ে মাহমুদউল্লাহর। সাকিবের কলে সাড়া দিতে গিয়ে রান আউট হয়ে ফেরেন ১৩ বলে ১৩ রানে। ৯ ওভারে ৫২ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় টাইগাররা।
ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে পারেননি সাকিব। ১১.৪ ওভারের মাথায় দলকে ৬১ রানে রেখে ফেরেন তিনিও। ২২ বলে ১৭ রান করে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়ে শেষ হয় তার ইনিংস। এরপর ফেরেন তানজিম সাকিব ৩ রানে ধরেন সাজঘরের পথ।
জাকের আলির দৌড় থামে ২৬ বলে ১২ রানে৷ এছাড়া রিশাদ হোসেন করেন ১৩ রান। শেষ দিকে তাসকিন আহমেদের ১২ রানে তিন অংকের ঘরে পৌঁছায় বাংলাদেশ। মোস্তাফিজ রান আউট হন ৬ রানে
লামিচানে, রোহিত পাড়েল, সোমপাল কামি ও দীপেন্দ্র সিং প্রত্যেকেই নেন দুটি করে উইকেট।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা