সাকিব-রিশাদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ পাকিস্তানি কিংবদন্তিরা
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৪ জুন ২০২৪, ২৩:৪৭
নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে প্রশংসায় ভাসছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে জয়ের দুই নায়ক সাকিব আল হাসান আর রিশাদ হোসেনকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে সর্ব মহলে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশীদেরও বাহবা আদায় করে নিয়েছেন তারা। বিশেষ করে পাকিস্তানিরা যেন প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
বৃহস্পতিবার রাতে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ২৫ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। এই জয়ে সুপার এইটের পথ অনেকটাই সুগম করেছে টাইগাররা। ডাচদের হারাতে ব্যাট হাতে দারুণ ভূমিকা রাখেন সাকিব, খেলেন ৪৬ বলে ৬৪* রানের ইনিংস। বিপরীতে বল হাতে ৩ উইকেট নেন রিশাদ।
ম্যাচ জুড়ে দু'জনের পারফরম্যান্স নজর কেড়েছে সবার। ফলে আলোচনার টেবিলে এই দু'জনের বন্দনায় মেতেছেন পাকিস্তানের সাবেক তারকা ক্রিকেটাররা। আলাদা অনুষ্ঠানে সাকিব-রিশাদকে নিয়ে মুখ খোলেন ইউনিস খান, মোহাম্মদ হাফিজ, মিসবাহ উল হক ও শোয়েব মালিক।
এক অনুষ্ঠান্ব মিসবাহ বলেন, ‘সাকিব মনে হয় ১৭ বছর ধরে খেলছে। বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলেছে। ওর আত্মবিশ্বাসের জন্য রান পাওয়া দরকার ছিল। শুধু রানই করেনি, কর্তৃত্বও দেখিয়েছে। শুরুতেই উইকেট চলে গিয়েছিল, সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠে বাংলাদেশকে ১৬০ রান করার মতো মঞ্চ গড়ে দিয়েছে।’
মিসবাহ আরো বলেন, ‘মোস্তাফিজ দারুণ বোলিং করেছে। বাংলাদেশের উইকেটের মতো উইকেট, ওর স্লোয়ার ব্যাটসম্যান বুঝতেই পারেনি। রিশাদও দুর্দান্ত বোলিং করেছে। সামনের ম্যাচ জিতে এরা যদি সুপার এইটে যায়, ওয়েস্ট ইন্ডিজে তারা খুব কার্যকর হতে পারে, কন্ডিশনও তাদের জন্য মানানসই হবে।’
অন্য এক অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের আরেক কিংবদন্তী ক্রিকেটার ইউনিস বলেন, ‘ব্যাটিং কিংবা বোলিং, এ ম্যাচে বাংলাদেশ সব জায়গায় ভালো খেলেছে। আমি শুধু একা সাকিবের কথা বলতে চাই না, সবাই খুব ভালো খেলেছে, বিশেষ করে সাকিব এবং রিশাদ।’
এদিকে নিজের মুগ্ধতার কথা জানিয়ে হাফিজ বলেন, ‘সাকিব আসার সাথে সাথেই নিজের শট খেলেছে। সে একজন অনবদ্য ক্রিকেটার। সাকিব যখন পারফরম্যান্স করে তখন দল জেতে। ইম্প্যাক্টফুল ক্রিকেট খেলা জরুরি, যেখানে আপনার পারফরম্যান্স দলকে জয় এনে দেয়। এবং ওরা এই ম্যাচে সে কাজটাই করেছে। ওরা যেকোনো বড় টিমকেই চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে।’
সাকিব-রিশাদের প্রশংসা করেছেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার ও কোচ বরুণ অরুণ। ক্রিকইনফোতে তিনি বলেন, ‘সাকিবের ফর্মে ফেরা বাংলাদেশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ব্যাটিং ও বোলিং দুটোই আজ সাকিব ভালো করেছে। উইকেট পায়নি, তবে উইকেট ওর প্রাপ্য ছিল। শেষ দুই ওভারে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ১০ রান দিয়েছে।’
রিশাদকে নিয়েও মুগ্ধতার কথা জানিয়ে বলেন, ‘শুরু থেকেই রিশাদ ভালো বোলিং করছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও প্রভাব ফেলার মতো পারফরম্যান্স ছিল তার। আধুনিক লেগ স্পিনাররা ফ্লাট বোলিং করেন, তবে রিশাদ হাওয়ায় ভাসিয়ে বল বাঁক খাওয়ানোর চেষ্টা করে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ বোলিং বিভাগ খুব ভালো করছে। একে অন্যকে সমর্থন করছে।’
পাকিস্তানের আরেক কিংবদন্তী শোয়েব মালিক অবশ্য খুঁজে নিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মোস্তাফিজুর রহমানকে। সাকিব-রিশাদের আড়ালে চলে যাওয়া ম্যাচের মোড় ঘুরানো এই দুই ক্রিকেটারের বিশেষত্ব বর্ণনা করেন তিনি।
এই নিয়ে তিনি বলেন, ‘ম্যাচে অধিনায়কত্ব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ওদের বিক্রমজিত যখন সাকিবের বলে দুটি ও রিশাদের বলে একটি ছক্কা মেরেছে। অধিনায়ক তখন তৎপর ছিল। সাথে সাথে সে মাহমুদউল্লাহকে বোলিংয়ে নিয়ে আসে। কারণ, বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে ডানহাতি স্পিনাররা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। সেটাই হয়েছে। মাহমুদউল্লাহ এসেই উইকেট নিয়ে নেয়।’
মোস্তাফিজকে নিয়ে মালিক বলেন, ‘বাংলাদেশের কাছে মোস্তাফিজ আছে, ওর স্লোয়ার বল বুঝাটা কঠিন। সেটাই দেখা গেছে ম্যাচে। নেদারল্যান্ডসের ব্যাটসম্যানদের জন্য স্লোয়ার কঠিন হয়ে গিয়েছিল। যে কারণে মোস্তাফিজ ৪ ওভার বোলিং করে মাত্র ১২ রান দিয়েছে, ১ উইকেট নিয়েছে।'