১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মুখোমুখি দক্ষিণ আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কা : শক্তিমত্তায় এগিয়ে কারা

- ছবি - ইন্টারনেট

বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেটের দেখা মিললেও বড় দলগুলোর মাঝে কেবল মাঠে নেমেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাপুয়ানিউগিনির বিপক্ষে কষ্ট করে জিতলেও খুব একটা উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারেনি। তবে দ্বিতীয় দিনেই ফিরছে আকর্ষণ; শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের দিকে তাকিয়ে সবাই।

আজ সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় নিউইয়র্কের নাসাউ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে এই দু’দল। যা বিশ্বকাপের জন্য তৈরি হওয়া এই মাঠে প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ। এর আগে বাংলাদেশ ও ভারত মধ্যকার খেলা গড়ালেও, তা ছিল গা গরমের প্রস্তুতি ম্যাচ। ফলে ভিন্ন এক রোমাঞ্চ থাকছেই।

মাঠের খেলা ক্রিকেটে খাতা-কলমের হিসাবকেও রাখতে হয় বিবেচনায়। যেখানে শ্রীলঙ্কার চেয়ে এগিয়ে আছে দক্ষিণ আফ্রিকাই। র‍্যাঙ্কিং, পরিসংখ্যান বা শক্তিমত্তা; সব দিকেই একটু এগিয়ে প্রোটিয়ারা। র‍্যাঙ্কিংয়ে অবশ্য খুব বেশি পার্থক্য নেই। প্রোটিয়ারা সাত আর লঙ্কানদের অবস্থান আটে।

দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে এসেছে শক্তিশালী এক দল নিয়ে। দলে তারকা ক্রিকেটার আর বিগ হিটারদের ছড়াছড়ি। সদ্য শেষ হওয়া আইপিএলেও যারা ফুটিয়েছেন রানের ফুলঝুরি। এইডেন মার্করাম, হেনরি ক্লাসেন, কুইন্টন ডি কক, ডেভিড মিলার ও ট্রিস্টান স্টাবসরা ব্যাটিং লাইনআপ করেছেন শক্তিশালী।

দলের স্পিন বিভাগ সামলাবেন কেশব মহারাজ, বিয়র্ন ফরচুইন ও তাবরাইজ শামসি। দলে একমাত্র অলরাউন্ডার হিসেবে আছেন মার্কো জানসেন। পেস আক্রমণে আছেন কাগিসো রাবাদা, জেরাল্ডে কোয়েৎজি, পেসার অটনিল বার্টম্যান ও এনরিখ নরকিয়া।

দলটার দূর্বল দিক সাম্প্রতিক সময়ের পারফরম্যান্স। গত দেড় বছরে খুব বাজে তাদের টি-টোয়েন্টি পরিসংখ্যান।

২০২২ সালের আগস্টে এই ফরম্যাটে সবশেষ কোনো সিরিজ জিতেছিল দলটি। এরপর পাঁচ সিরিজের চারটিতে হার ও একটি ড্র করে তারা। সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে হোয়াইটওয়াশ হয় ৩-০ ব্যবধানে।

শ্রীলঙ্কা এগিয়ে আছে আবার এই দিক থেকে। সাম্প্রতিক সময়ে টি-টোয়েন্টিতে দারুণ ছন্দে আছে লঙ্কানরা। এ বছর তিনটি সিরিজে মাঠে নেমেছিল তারা। জিম্বাবুয়ে, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন সিরিজই ২-১ ব্যবধানে জিতেছে লঙ্কানরা।

লঙ্কানদের এবারের দলটাও বেশ সমৃদ্ধ। অভিজ্ঞতা আর তারুণ্যে মিশেলে বেশ চ্যালেঞ্জিং। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার এই দলে আছেন সাবেক দুই অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ও দাসুন শানাকাও। কুশল মেন্ডিস, পাথুম নিশাঙ্কাও আছেন।

অলরাউন্ডারে ভরপুর লঙ্কান স্কোয়াডে পেস আক্রমণে থাকছেন মাথিশা পাতিরানা, দিলশান মাদুশঙ্কা, দুষ্মন্ত চামিরা ও নুয়ান থুশারা। হাসারাঙ্গার সাথে স্পিনে আছেন তরুণ দুনিথ ওয়েলালাগেকে। যদিও দলটার বড় সমস্যার নাম চোট। একাধিক ক্রিকেটার দলে আছেন চোট সমস্যা নিয়েই।

ক্রিকেট মাঠের খেলা হলেও পরিসংখ্যান অবশ্য কথা বলছে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষেই। এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে ১৭বার মুখোমুখি হয়েছে এই দুই দল। এর মাঝে প্রোটিয়াদের জয় ১১টিতে ও লঙ্কানরা জয় পায় ৫টি ম্যাচে। ১টি ম্যাচ টাই হয়। যদিও তা সুপার ওভারে জিত নেয় প্রোটিয়ারা।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আজকের আগে চারবার দেখা হয়েছে তাদের। এখানেও জয়ের পাল্লা ভারী প্রোটিয়াদের। তিনটিতে জয় দক্ষিণ আফ্রিকার, শ্রীলঙ্কা জেতে ১টি ম্যাচে। শেষ ছয় দেখাতেও একপেশে জয়ের রেকর্ড প্রোটিয়াদের, ৬ ম্যাচেই জয় তাদের।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রতিটি আসরেই অংশ নিয়েছে প্রোটিয়ারা। খেলেছে দুই-দুইবার সেমিফাইনাল। তবে আরাধ্য শিরোপা ছোঁয়া হয়নি তাদের। আগের ৮ আসরে মোট ৪০টি ম্যাচ খেলে দক্ষিণ আফ্রিকা জিতেছে ২৪টিতে।

বিপরীতে শ্রীলঙ্কাও সব আসরে খেলেছে। আগের ৮ আসরে সর্বোচ্চ ৫১ ম্যাচ খেলেছে। ৩১ জয়ের বিপরীতে ১৯টিতে হেরেছে। তবে তাদের দখলে আছে একটা শিরোপা। ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন তারা।

তবে দু’টি দলের শক্তি আর দূর্বলতার জায়গাও হচ্ছে এই ইতিহাস। ১৯৯৬ বিশ্বকাপ, ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বা ২০২২ এশিয়া কাপ, কোনোটিতেই ফেবারিট না থেকেও শিরোপা জেতে লঙ্কানরা। অন্যদিকে প্রতি আসরেই ফেভারিটের তকমা নিয়ে খেলতে আসা প্রোটিয়ারা ফাইনালেই উঠতে পারেনি কখনো!


আরো সংবাদ



premium cement

সকল