২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

নাইটদের নতুন চমক আলি : এক পাকিস্তানি যেভাবে আইপিএলে

আলি খান - ছবি : আনন্দবাজার পত্রিকা

রূপকথার মলাটে মোড়া তার জীবন কাহিনী। যে দেশ এখনো বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার সুযোগই পায়নি, সেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকেই উত্থান ২৯ বছরের ডান-হাতি পেসার আলি খানের। আইপিএলের চলতি মওসুমে হ্যারি গার্নির পরিবর্তে তাকে এ বছর নিলো কলকাতা নাইট রাইডার্স।

শৈশব কেটেছে পাকিস্তানের আটোক জেলায়। সেখানেই পড়াশোনা। কিন্তু তাকে চুম্বকের মতো টেনেছে ক্রিকেট। শোয়েব আখতারের ভক্ত তাই ঠিক করেন পেস বোলার হবেন। পাকিস্তানের অলি-গলিতে জনপ্রিয় টেপ বল ক্রিকেট থেকেই ইয়র্কার এবং স্লোয়ারে তীক্ষ্ণ হয়ে ওঠা। সেই কারণে যুক্তরাষ্ট্রে তিনি এখন পরিচিত ‘ইয়র্কার মেশিন’ নামে।

১৯ বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে উড়ে আসতে হয় যুক্তরাষ্ট্রে, বাবার চাকরির জন্য। বুঝে গিয়েছিলেন, ক্রিকেটজীবন শেষ। তাই পাকিস্তান ছাড়ার সময় ক্রিকেটের কোনো সরঞ্জামই বিমানে তোলেননি।

যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও শহরে একটি মোবাইল প্রস্তুতকারক কোম্পানির সেলস বিভাগে কাজ করতে শুরু করেন আলি। কিন্তু কাজে মন বসত না। ওহায়ো শহরের এক ক্লাবে তাকে এক শনিবারে নিয়ে যান চাচ। ম্যাচে সুযোগ পেয়েই পাঁচ উইকেট। তার দক্ষতা দেখে ওয়াশিংটন ডিসি-তে এক ক্রিকেট ক্লাবে পাঠানোর উদ্যোগ নেন চাচা। সোম থেকে শুক্র চাকরি করতেন। শুক্রবার রাতে ৪০০ কিলোমিটার যাত্রা করে পৌঁছতেন ওয়াশিংটন। শনি, রোববার ক্রিকেট খেলে ফিরে আসতেন বাড়ি।

২০১৫ সালে এক বিজ্ঞাপনে দেখেন, আইসিসি নিজের উদ্যোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দল গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজে সিরিজ খেলতে নিয়ে যাচ্ছে। ১৫ জনের দলে জায়গা করে উড়ে যান ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেখানেই তার ধারাবাহিক ইয়র্কার করার ক্ষমতা ও গতিতে মুগ্ধ হন কোর্টনি ওয়ালশ। ২০১৫ সালে সিপিএল-এ গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্স দলে সুযোগ পেয়ে প্রথম বলেই তুলে নেন কুমার সঙ্গকারার উইকেট। বদলে যায় আলির জীবন।

হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের জন্য যদিও পুরো মরসুম খেলতে পারেননি। ২০১৮ সালে সোনালি জীবন আবার ফেরে। যুক্তরাষ্ট্র টি-টোয়েন্টি লিগে তিনি ও ডোয়েন ব্র্যাভো খেলেন একই দলে। আলির বোলিংয়ে মুগ্ধ হয়ে ত্রিনব্যাগো নাইট রাইডার্সে তাকে নেয়ার পরামর্শ দেন ব্র্যাভো-ই। তার পরামর্শে সাড়া দিয়ে ২০১৮ সালেই শাহরুখ খানের দলে নেয়া হয় আলিকে। ১২ ম্যাচে ১৬ উইকেট নিয়ে টিকেআর-কে চ্যাম্পিয়ন করতে সাহায্য করেন বিস্ময় প্রতিভা।

এ বার সিপিএলেও আট ম্যাচে আট উইকেট পেয়েছেন। টিকেআর-কে চ্যাম্পিয়ন করার অন্যতম নায়ক তিনি। আলিকে তৈরি হতে দেখেছেন সাবেক ভারতীয় উইকেটকিপার কিরণ মোরে। ২০১৯ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোচ ছিলেন তিনি। মোরের কথায়, ‘‘ওর স্লিংগিং অ্যাকশন। মালিঙ্গার মতো ডেলিভারি। ইয়র্কারের সঙ্গে তাই স্লোয়ার বলটাও বুঝতে সমস্যা হয়।’’

আলির সামনে এখন নতুন লক্ষ্য। তিনি কি সফল হবেন? সময়ই বলবে।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


আরো সংবাদ



premium cement