২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

আল্লাহকে ডাকুন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ুন : মাশরাফি

- সংগৃহীত

প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের সংক্রমন থেকে রক্ষা পেতে সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহকে ডাকতে ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার অনুরোধ করলেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।

ফেসবুকে নিজের ভেরিফাইড পেইজে করোনাভাইরাস থেকে সর্তক থাকার বেশ কিছু করনীয় জানিয়ে পোষ্ট করেছেন ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সফল অধিনায়ক মাশরাফি। ৪ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও বার্তায় মাশরাফি বলেন, ‘আসসালামুু আলাইকুম। আশা করি সবাই ভাল আছেন। যদিও ‘ভাল আছেন’ কথাটা এই মুহূর্তে বলা ঠিক কিনা, কারণ সবাই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তারপরও কথা বলতে হবে। করোনাভাইরাস, আমরা সবাই জানি। অনেকেই কথা বলছি- সোশ্যাল মিডিয়ায়, যেখানেই যাবেন দেখবেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে সবাই আতঙ্কিত এবং আতঙ্কিত না হওয়ারও কোনো কারণ নাই। পৃথিবীর বড় বড় দেশগুলোও এখন বিপর্যস্ত । তারা কোনোভাবেই ট্যাকল দিতে পারছে না। এখন আমাদের কি করণীয়। আজকে যত বড় বড় দেশগুলো দেখছি, যেভাবে ভেঙে পড়ছে, আমাদের দেশটা তো এমনিতে ছোট, মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। আমাদের যদি এরকম সংকট আসে, আল্লাহ না করুক, কি হতে পারে আমরা সবাই বুঝতে পারছি। এই মুহূর্তে করণীয় অনেক কিছু আছে, যেগুলো আমি মনে করি আমাদের সবারই করা উচিৎ। এক হচ্ছে, ঘরে বসে আল্লাহকে ডাকা ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া। আল্লাহর কাছে ডাকা যে, আল্লাহ আমাদের রহমত করুন। এই ধরনের দুর্যোগ থেকে আমাদের সহযোগিতা করুন যেন না হয় এবং সবাই যেন সুস্থ থাকে।’

আল্লাহকে ডাকা ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার সাথে দ্বিতীয় করণীয় কাজ কি, তাও জানিয়েছেন মাশরাফি, ‘অবশ্যই অবশ্যই প্রবাসী ভাই-বোনেরা যারা বিদেশে থাকেন, আসছেন দেশে বা যারা বেড়াতে গিয়েছিলেন আর দেশে আসছেন, তাদের কিন্তু অনেক কিছু করার আছে। প্রথম হচ্ছে, নিয়ম-কানুনগুলো অবশ্যই মেনে চলা। কোয়ারেন্টাইন এই শব্দটা ব্যবহার করে আমি বলব, গৃহবন্দী থাকা। সেটা পরিবার নিয়ে না, আপনি আলাদা ১৪ দিন থাকা। ১৪ দিন পার হওয়ার পরে যদি আপনি অসুস্থ না হোন তখন আপনার পরিবারকে নিয়ে ঘরে থাকা। যতক্ষণ না পর্যন্ত চিকিৎসক বা সমাজের উচ্চ-পদস্থরা ঘোষণা না করছেন যে, আমরা নিরাপদ, ততক্ষণ ঘরে থাকা।

এরপরেও অবশ্যই আমাদের অনেক করণীয় আছে। যেটা হচ্ছে, নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়া। ১৫-২০ মিনিট অন্তর-অন্তর নিয়মিত পানি পান করা এবং আপনার ঘর, আপনার চারপাশটা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। আমাদের এসব নিয়ম-কানুনগুলো মেনে চলতে হবে। এর থেকে কঠিন পরিস্থিতে যাওয়ার পরে আমরা কিন্তু আর সুযোগ পাবো না। তাই আমাদের উচিৎ এখন থেকেই এই জিনিসটাকে শক্ত হাতে প্রতিহত করা। কারণ এটা একটা রাষ্ট্রীয় সংকট হয়ে যেতে পারে। আমরা কেউ জানিনা আশাপাশে কারা আছে। আমরা যে বের হচ্ছি, কার হাত ধরছি, কি করছি, কেউ জানি না আসলে এ ভাইরাসটা কি নিয়ে পথ চলছে। কারণ এ ভাইরাসটা ১৪ দিন সময় নেবে আপনার বুঝার জন্য। তাই আমার কাছে মনে হয় যে, এটা গভীরভাবে চিন্তা করার ব্যাপার।’

দেশের সবাইকে ঘরে থাকার অনুরোধও করেন মাশরাফি, ‘আমরা যেটা গুরুত্ব দিচ্ছি না, সেটা যদি আকস্মিকভাবে আমাকে, আপনাকে, আপনার পরিবারকে, পরিবারের কাউকে বা সামাজিকভাবে আঘাত করে সেটা কিন্তু সামাল দেওয়া খুব কঠিন হবে। আমি আগেও বলেছি, ইতালির মতো বড় বড় দেশ, ইংল্যান্ড-স্পেন-চীন বলেন, সবাই কিন্তু হিমশিম খেয়েছে, খাচ্ছে। সেখানে আমরা কতটুকু পারবো সেটা ভাবার এখন সময় এসেছে। কারণ দেশটা অনেক ছোট, মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। এখানে কিন্তু ভাবার সময় আছে।

আমাদের যে করণীয় জিনিসগুলো আছে, আমরা করি। এটা করা খুবই প্রয়োজন। একটা কথা মনে রাখবেন, আপনার ঘরের ক্যাপ্টেন কিন্তু এখন আপনি নিজে। আপনি যদি আপনার ঘরের ক্যাপ্টেন্সি ঠিকমত করতে পারেন, আমি নিশ্চিত, আমরা কিছুটা হলেও আক্রান্তের সংখ্যা কমাতে পারবো। অন্যথা দুর্যোগ হওয়ার সুযোগ অনেক বেশি। তাই আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ আপনার ঘরে থাকুন। প্লিজ-প্লিজ-প্লিজ ঘরে থাকুন।

আপনি নিজে সুরক্ষিত থাকুন। আপনার পরিবারকে সুরক্ষিত রাখুন। আপনার সমাজকে সুরক্ষিত রাখুন। এটা আমার, আপনার-সবার দায়িত্ব। এই মূর্হুতে আমরা কোন ভাবেই বিনা কারনে ঘর থেকে বের হতে পারি না। আমরা সবাই অনেক সময় বলি, আমরা সময় পাই না, আমাদের কাজের ব্যস্ততার কারনে আমাদের পরিবারকে সময় দিতে। আপনি এখন পরিবারকে সময় দেন। এখন আপনার কোনো কাজের ব্যস্ততা নেই। আপনি সময় দেন।

আর যারা আছেন, তারা চেষ্টা করুন। যে জায়গা থেকে পারেন চেষ্টা করুন, একটা দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করুন। যতটুকু না করলেই না। কিন্তু তারপরও আমি বলবো- প্রথমত, ঘরে থাকুন, আপনার সমাজকে আপনি রক্ষা করুন। ভালো থাকুন সবাই। আসসালামু আলাইকুম।’ সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement