ওয়ানডেতে বড় দলের তকমা পেতে বাংলাদেশের একটি আইসিসি ট্রফি দরকার : আর্থার
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:১৬
পছন্দের ফর্মেট ওয়ানডেতে বাংলাদেশের প্রমাণের সময় এসেছে বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেরা কোচদের একজন দক্ষিণ আফ্রিকার মিকি আর্থার। এই ধরনের ফর্মেটেই এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে বাংলাদেশ।
এ পর্যন্ত তিনটি আন্তর্জাতিক দলের কোচের দায়িত্ব পালন করা আর্থারের মতে, কতগুলো ট্রফি জিতেছে, তার উপর দলের বিচার-বিশ্লেষণ নির্ভর করা হয়।
শুক্রবার বাসসকে আর্থার বলেন, ‘বাংলাদেশ ওয়ানডে ক্রিকেটে ভালো খেলছে। কিন্তু ট্রফি দিয়েই শেষ পর্যন্ত বিবেচনা করা হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, অন্য দলের মতো তাদেরও ট্রফি জেতা উচিত। দল যে কঠোর পরিশ্রম করেছে সেটি প্রমাণের জন্য ট্রফির প্রয়োজন আছে। একইসাথে এর মাধ্যমে দল নির্বাচনেও বৈধতা মিলে। ক্রিকেটকে ব্র্যান্ড করার জন্য শোকেসে ট্রফির প্রয়োজন আছে। তাই বাংলাদেশের একটি ট্রফি দরকার।’
নিজ দেশ দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন আর্থার। দক্ষিণ আফ্রিকার উদাহরণ টেনে আর্থার জানান, বিশ্বের শীর্ষ দল হবার পরও মানুষ তাদের মনে রাখে না।
আর্থার বলেন, ‘আমি বলব, দক্ষিণ আফ্রিকা সবসময় এক নম্বর দল। ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি এবং টেস্ট র্যাংকিংয়ের এক নম্বর দল তারা। কিন্তু আমরা কখনো আইসিসি ইভেন্ট জিততে পারিনি।’
তিনি আরো বলেন, ‘মানুষ এমন দলকে মনে রাখে না, যারা আইসিসি ইভেন্ট জিততে পারে না। বাংলাদেশ ভালো ক্রিকেট খেলছে, তারা খুব ভালো ওয়ানডে দল। কিন্তু এটা প্রমাণ করতে তাদের কিছু জিততে হবে।’
২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে ওয়ানডে ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফরমেন্স শুরু করে বাংলাদেশ। ২০২৩ সালের প্রথম ভাগ পর্যন্ত পারফরমেন্সের ধারা ধরে রেখেছিল তারা। ওই সময়ের মধ্যে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের কাছে মাত্র দু’টি সিরিজ হেরেছিল তারা। এরপর থেকে এই ফরম্যাটে টাইগারদের পারফরমেন্সে ভাটা পড়ে। ঘরের মাঠে আফগানিস্তান এবং নিউজিল্যান্ডের কাছে হারের ফলে আইসিসি ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে নবমস্থানে নেমে যায় বাংলাদেশ।
দরজায় কড়া নাড়ছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। ২০১৭ সালে সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ী পাকিস্তান দলের কোচ ছিলেন আর্থার। তিনি মনে করেন অন্যান্য দলের মতো বাংলাদেশেরও এই শিরোপা জয়ের সুযোগ আছে।
তিনি বলেন, ‘চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খুব ভালো প্রতিযোগিতা, এটি খুব ছোট টুর্নামেন্ট। আপনাকে সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে। এখানে সেরা ৮টি দল অংশ নেয় এবং ভুল করার কোনো সুযোগ নেই।’
আর্থার আরো বলেন, ‘আমরা যখন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিলাম তখন পাকিস্তান অষ্টমস্থানে ছিল। আমরা প্রথম ম্যাচে হেরেছিলাম, তাই পরের প্রতিটি ম্যাচ জিততে হতো দলকে। পরবর্তীতে আমরা সব জিতেছি কারণ আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলা শুরু করি। একজন খেলোয়াড় তাদের ভূমিকা সর্ম্পকে জানতো এবং তারা তাদের দায়িত্ব খুব ভালোভাবে সম্পন্ন করেছিল। আমরা গতি পেয়েছিলাম। একবার ক্রিকেটে যদি গতি পাওয়া যায় সেটা খুব শক্তিশালী হয়ে উঠে। কারণ আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে যায়।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি মনে করি যেকোনো দল যেকোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারে এবং জিততে পারে। এটি একটি দুর্দান্ত টুর্নামেন্ট, এ কারণে প্রতিটি ম্যাচেই জিততে হবে। তাই এই টুর্নামেন্টে অন্যান্য দলের মতো একই সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশও।’
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) রংপুর রাইডার্সের কোচ আর্থার বিশ্বাস করেন, বিপিএলের মঞ্চে দুর্দান্ত পারফরমেন্স দিয়ে ক্রিকেটাররা নিজেদের দক্ষতার উন্নতি ঘটাতে পারবে।
আর্থার বলেন, ‘বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা অসাধারণ। আমি সত্যিই অবাক হয়েছি। তারা প্রতিভাবান। আমি যখন ঢাকা ডায়নামাইটসের কোচের দায়িত্বে ছিলাম তখন এমনটা ছিল না। প্রতিভাবান পুলটা একটু ছোট ছিল। কিন্তু এখন দেখলাম আরো অনেক খেলোয়াড় আসছে।’
তরুণ পেসার নাহিদ রানার পারফরমেন্সে মুগ্ধ আর্থার। গতিময় বোলিং দিয়ে সম্প্রতি নজর কেড়েছেন তিনি। বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের হয়ে খেলার কারণে রানাকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে আর্থারের।
রানাকে নিয়ে আর্থার বলেন, ‘আমি মনে করি, রানা খুব ভালো বোলার হবে। তার বোলিংয়ে গতি এবং দক্ষতা আছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তারকা বোলার হবার মতো সব গুণাবলী সে পেয়েছে। কখন নিজের দক্ষতা ব্যবহার করতে হবে, সেটি ভালো করে জানেন রানা। আগামী বছরগুলোতে ভিন্ন ধরনের বোলার হয়ে উঠবে সে।’
একই সময়ে রানার কাজের চাপ সামলানোর জন্য ‘ফান ব্যালেন্স’-এর উপর জোর দিয়েছেন আর্থার।
ব্যাখ্যা দিয়ে আর্থার জানান, নিজের দক্ষতার উন্নতির জন্য বোলিং করতে হবে এবং একই সাথে তার কাজের চাপ সামলাতে যথাযথ বিশ্রাম নিতে হবে রানাকে।
তিনি বলেন, ‘ফান ব্যালেন্স একটি শব্দ মাত্র। যার অর্থ হলো তিনি যতটুকু বোলিং করবেন ততটুকুই বিশ্রাম নিবেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিপিএলে মাত্র ২৪টি বল করে সে। তাকে চাপ দেয়া হয় না, তাকে যা করতে হবে তা হলো- তার দক্ষতার আরো উন্নতি করা। তাকে তার খেলা বুঝতে হবে, তাকে শিখতে হবে এবং চাপের মধ্যে পারফর্ম করতে হবে। তাকে তার দক্ষতার উন্নতি করতে হবে এবং সে যখন খেলবে তখন দক্ষতার উন্নতি ঘটবে।’
আর্থার বলেন, ‘অবশ্যই এটি তাকে মাঝে মাঝে ক্লান্ত করবে। যখন সে এমন অনুভব করবে তখন তাকে বিরতি দিতে হবে। যখন সে ক্লান্ত হয় তার অ্যাকশন খারাপ হয় বলে আমি মনে করি।’
সূত্র : বাসস
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা