১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

লজ্জার ধবলধোলাই বাংলাদেশ

লজ্জার ধবলধোলাই বাংলাদেশ - ছবি : সংগৃহীত

জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েও পেরে উঠল না বাংলাদেশ। পারলো না মান বাঁচাতে। আগেই সিরিজ নিশ্চিত করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবার টাইগারদের দিলো ধবলধোলাইয়ের লজ্জা। এক দশক পর ঘটল এমন ঘটনা। সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে হার ৪ উইকেটে।

প্রথম দুই ম্যাচে সিরিজ হাতছাড়া হবার পর তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে (বৃহস্পতিবার) ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। চার ফিফটিতে ওয়ার্নার পার্কে টসে হেরে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ৩২১ রান তুলে তারা৷

জবাবে মাত্র ৮৬ রানে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ। তবে সেই আশায় পানি ঢেলে দেন অভিষিক্ত আমির জাঙ্গো। অভিষেকেই হাঁকান শতক। তাতে ৪৫.৫ ওভারেই ক্যারিবীয়রা নিশ্চিত করে জয়।

অথচ বল হাতে শুরুটা ছিল আশা জাগানিয়া। ৩১ রানেই ৩ ব্যাটারকে সাজঘরে ফির তারা। ১০ বলে ১৫ রান করে ব্রেন্ডন কিং রানআউট হওয়ার পর অ্যালিক অ্যাথানেজকে (৭) বোল্ড করেন নাসুম। ৩ রান করে হাসান মাহমুদের বলে স্লিপে ক্যাচ দেন অ শাই হোপ।

চতুর্থ উইকেটে হাল ধরার চেষ্টা করলেও বাধা হয়ে দাঁড়ান তাসকিন আহমেদ। ৩৩ বলে ৫ চারের মারে ৩০ রান করে ক্যাচ তুলে দেন শেরফান রাদারফোর্ড। তবে এরপরই যেন ঘুরে যায় খেলার মোড়। অভিষেকেই চমকে দেন আমির।

ক্যাসি কার্থিকে নিয়ে আমির গড়ে তুলেন দারুণ এক জুটি। যেই যুগলবন্দীতে ১১৫ বলে যোগ হয় ১৩২ রান। তাতে ম্যাচটা ফের জমে উঠে। এমন সময় ক্যাসি কার্থিকে ফিরিয়ে ফের আশা দেখান রিশাদ। শতকের আক্ষেপ নিয়ে রিশাদ আউট হোন ৮৮ বলে ৯৫ করে।

দ্রুত রোস্টন চেজকেও (১২) ফেরান রিশাদ। ৩৭.১ ওভারে ২৩৪ রানে ৬ উইকেট হারায় স্বাগতিকেরা। তবে তখনো মাঠেই ছিলেন আমির। এরপর গোদাকেশ মোতিকে নিয়ে তিনিই নিশ্চিত করেন জয়। এই জুটি ছিলো আরও আগ্রাসী, ৫৩ বলেই তুলে ৯০ রান।

এর মাঝে ৩১ বলে ৪৪ রানে অপরাজিত থাকেন মোতি। আর আমির ৮৩ বলে ১০৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। জেতেন অভিষেকেই ম্যাচসেরার পুরস্কার। রিশাদ ২ উইকেট নিলেও তা কাজে আসেনি। ২০১৪ সালের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ধবলধোলাই হলো বাংলাদেশ।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ২.৪ ওভারে মাত্র ৯ রানে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। যা ধবলধোলাই এড়াতে মাঠে নামা বাংলাদেশকে শুরুতেই চাপে ফেলে দেয়।রানের খাতাই খুলতে পারেননি তানজিদ তামিম ও লিটন দাস।

জোসেফের প্রথম শিকার হয়ে ফেরেন তানজিদ। প্রথম দুই ম্যাচে দারুণ ব্যাট করলেও আজ ফেরেন ৫ বলে ০ রানে৷ তিনে নেমে ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙতে পারেননি লিটন। প্রথম দুই ম্যাচে ২৬ বলে ৬ রান করলেও এ দিন ফেরেন ২ বলে ০ করে।

এরপর হাল ধরেন মেহেদী মিরাজ ও সৌম্য সরকার। মিরাজ শুরু থেকে সাবলীল থাকলেও সময় নেন সৌম্য। তবে সময়ের সাথে সাথে দু'জনেই হাত চালাতে থাকে। ৫৬ বলে সিরিজে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন মিরাজ।

খানিকটা বাদে ৫৮ বলে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন সৌম্য। দু'জনের জুটিতে আসে ১২৬ বলে ১৩৬ রান। জুটি ভেঙে ২৩.৩ ওভারে সৌম্য ফেরেন এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়ে। ৭৩ বলে ৭৩ রানে মোতির বলে আউট হোন তিনি।

চতুর্থ ও পঞ্চম উইকেটের পতন হয় দ্রুত। রান আউট হয়ে ফেরেন মেহেদী মিরাজ। আউট হবার আগে তিনি ফেরেন রাদারফোর্ডের সরাসরি থ্রোতে ৭৩ রানে ৭৭ রান করে। কোনো রান যোগ হবার আগেই ফেরেন আফিফও। ২৯ বলে মাত্র ১৫ করেন তিনি ।

যখন দ্রুত উইকেট হারিয়ে খানিকটা শঙ্কার মুখে দল, তখন আরো একবার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। প্রথম ম্যাচে ৪৪ বলে ৫০*, দ্বিতীয় ম্যাচে ধসের মুখে ৯২ বলে ৬২ করার পর আজ রান তুলেন ঝড়ের গতিতে।

তার সাথে পাল্লা দেন জাকের আলিও। ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজের মেইডেন ফিফটি তুলে নেন এই ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত ৫৭ বলে ৬২ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। তাতে পাঁচ উইকেটে ৩২১ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।


আরো সংবাদ



premium cement