৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

এক দিনে দু’বার অলআউট হয়ে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ

- ছবি : সংগৃহীত

এক দিনে দু’বার অলআউট হয়ে ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করল বাংলাদেশ। তাতে মাত্র তিন দিনেই শেষ চট্টগ্রাম টেস্ট। সাগরিকায় বাংলাদেশের ব্যাটিং যেন ছিল অসহায়ত্বের চরম নিদর্শন। রাবাদা-মহারাজদের কাছে যেন করেছে আত্মসমর্পণ।

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা। যেখানে পাত্তাই পায়নি স্বাগতিকেরা। ঢাকা টেস্টে কোনোরকমে ইনিংস হার এড়াতে পারলেও, সাগরিকায় হার ইনিংস ও ২৭৩ রানে।

চট্টগ্রামে টসে জিতে আগে ব্যাট করে প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটে ৫৭৫ রান তুলে দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর টাইগার বোলারদের স্বস্তি দিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে তারা। ডি জর্জি ১৭৭, মুল্ডার ১০৫* ও স্টাবস করেন ১০৬ রান। তাইজুল নেন ৫ উইকেট।

জবাবে দ্বিতীয় দিনের শেষ বিকেলে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৯ ওভারে ৩৮ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিন যেখানে শেষ করেছিলো খেলা, তৃতীয় দিন যেন সেখান থেকেই শুরু করে স্বাগতিকরা। কিছু বুঝে উঠার আগেই বেড়িয়ে আসে ইনিংসের লেজ।

বাংলাদেশ খেই হারিয়েছে একদম শুরু থেকেই। বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিন শুরুর প্রথম ৬ ওভারেই হারায় আরো ৪ উইকেট। সব মিলিয়ে মাত্র ১৫ ওভারেই ৮ উইকেট হারিয়ে বসে দল। অথচ রান তখনো পঞ্চাশ পেরোয়নি।

৪ উইকেটে ৩৮ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। দিন শুরু করেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক। তবে এ দিন মাত্র ৮ রান যোগ করতে পারেন দু’জনে, আঘাত আনেন রাবাদা।

বাংলাদেশ অধিনায়ক ফেরেন ১৭ বলে ৯ রান নিয়ে। পরের ওভারেই মুশফিকুর রহিমকে ফেরান পিটারসেন। মি. ডিপেন্ডেবল খ্যাত এই ব্যাটার আজ আর ভরসা হতে পারেননি, ফেরেন ডাক মেরে।

পরের ওভারে আরো ভয়ঙ্কর রূপে দেখা দেন রাবাদা। এবার জোড়া শিকার তার। প্রথমে মিরাজকে ১ ও পরে অভিষিক্ত মাহিদুল ইসলামকে দেন ডাকের স্বাদ। তাতে মাত্র ৪৮ রানে ৮ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

এরপর থেকেই দারুণ সেই জুটি গড়ে তুলেন মুমিনুল হক ও তাইজুল ইসলাম। প্রথমে তিন অঙ্কের ঘর, এরপর দেড় শ' রানে দলকে পৌঁছে দেন দু'জনে। মুমিনুল ৮২ করে আউট হলে ভাঙে এই জুটি। শেষ ব্যাটার হিসেবে ফেরেন তাইজুল।

ফলোঅনের বুঝা মাথায় নিয়ে মাত্র ১৫৯ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ৫ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন রাবাদা। যা তার ১৬তম ফাইফার। পিটারসেন নেন ২ উইকেট। ২ উইকেট নেন কেশভ মহারাজ।

ফলোঅনেও ভালো নেই বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেও পড়েছে ধসের মুখে। চোখ রাঙাচ্ছে ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কা।

৪১৬ রানে পিছিয়ে থেকে ফলোঅন নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। তবে ১৫ ওভারে ৪৩ রান তুলতেই ভাঙন ধরেছে টপ অর্ডারে, নেই ৪ উইকেট। ৩৭৩ রানে পিছিয়ে থেকে চা বিরতিতে গেছে টাইগাররা।

দ্বিতীয় ইনিংসে সাদমান ইসলাম ও মাহমুদুল হাসান মিলে সাবধানী শুরুই করেছিলেন। তবে ষষ্ঠ ওভারে বোলিংয়ে এসেই সাদমানকে ফেরালেন ডেন পিটারসেন। কাইল ভেরেইনাকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ব্যক্তিগত ৬ রানে।

এরপর মাহমুদুল হাসান জয়কে (১১) ফেরান ম্যাথুসামি। পরের ওভারেই কেশভ মহারাজের শিকার মুমিনুল হক। প্রথম ইনিংসে ৮২ রান করা এই ব্যাটার, এবার রানের খাতা খুলতে পারেননি।২৯ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ চা বিরতিতে যাবার ঠিক আগের বলে। বলা যায় উইকেট বিলিয়ে এসেছেন জাকির। না হয় সেশনের শেষ বলে ডাউন দ্য উইকেটে কেন আসবেন তিন! উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে ডিফেন্ড করতে গিয়ে স্টাম্পড হয়েছেন এই বাঁহাতি (৭)।

চা বিরতির পরও চিত্রনাট্যে পরিবর্তন আসেনি। বিরতি থেকে ফিরেই ফেরেন মুশফিকুর রহিম। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার সিরিজটা যেন ভুলেই যেতে চাইবেন। চার ইনিংসে মাত্র ৪৬ রান তার। সাগরিকায় ফেরেন ২ রান করে।

এরপর মেহেদী মিরাজ ও নাজমুল শান্ত মিলে উইকেট আটকে রাখেন কিছুক্ষণ। তবে ৬ রানে আউট হলে ভাঙে বাধ। এরপর নাজমুল হোসেন শান্তও ফেরেন ৩৬ করে। ১ রান করে আউট হন তাইজুল। ৯৪ রানে ৮ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

এরপর মাহিদুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ খানিকটা জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। মাহিদুল ২৯ করে আউট হলেও ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন হাসান মাহমুদ।

৫৯ রানে ৫ উইকেট নেন কেশভ মহারাজ, ৪ উইকেট যায় সিনুরান ম্যাথুসামির ঝুলিতে। তাতে ১৪৩ রানেই শেষ হয় বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস।

এই হারে সিরিজেও ২-০ তে ধবলধোলাই হলো বাংলাদেশ। প্রথম টেস্টে মিরপুরে ৭ উইকেটে হেরেছিল টাইগাররা।


আরো সংবাদ



premium cement