১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

স্বাধীন ফিল্ম কমিশন গঠনের দাবি তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের

-


চলচ্চিত্র নির্মাতারা একটি স্বাধীন ফিল্ম কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে বলেছেন, ‘আমরা স্বাধীনভাবে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে চাই, যেখানে সাধারণ মানুষের কথা উঠে আসবে।’ সাংস্কৃতিক রাজনীতির মাধ্যমে শিল্পী সমাজ আর স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার তৈরি করা কাচের ঘরে বন্দী থাকবে না বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তারা।
২০২৪-এর ছাত্র-গণ-অভ্যুত্থান পর্যালোচনা প্লাটফর্ম ‘জুলাই গণপরিসর’ নামে একটি সংগঠনের উদ্যোগে ‘কালাচারাল পলিটিক্স : উছিলা সিনেমা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতারা এসব কথা বলেন।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে এই সময়োচিত উন্মুক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বিষয়ভিত্তিক আলোচনার সূত্র ধরে ভূমিকা পালন করেন চলচ্চিত্র নির্মাতা কামার আহমাদ সাইমন। একে একে ৯ জন তরুণ নির্মাতা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। তারা তাদের পূর্বসূরিদের অনেকের অপরাজনীতির কথা উল্লেখ করে তাদের আত্মসমালোচনা করেন। শেষে দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর পর্ব চলে। চলচ্চিত্র নির্মাতা কামার আহমাদ সাইমন তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে দু’ভাগে বিভক্ত করেছিল, একটি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের, আরেকটি ইসলাম ধর্মের ভিত্তিতে। আর গত ১৫ বছরে কালচারাল পলিটিক্সের সম্মুখ ভাগে ছিল সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। ’৭১-এর চেতনা বনাম মৌলবাদ। শিল্পী সমাজ কাচের ঘরে বন্দী ছিলেন। তারা একটা ফ্রাংকেনস্টাইন স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের সৃষ্টি করেছিলেন। তার দায়ভার কি শিল্পী সমাজের ওপর বর্তায় না? প্রশ্ন তোলেন তিনি।
সুমন রহমান বলেন, গত ১৫ বছর আমরা চোরাগোপ্তাভাবে ছিলাম। চলচ্চিত্র শিল্পটা ফ্যাসিজমের কাছে হারিয়ে গিয়েছিল। একটা শ্রেণী তাদের দাসত্বের দায় মিটিয়েছে ফ্যাসিবাদকে সহযোগিতা করে। আর ২০২৪ সালে এসে আমরা যারা গণ-অভ্যুত্থানে ছিলাম, আমরা আমাদের রাজনৈতিক দায় পরিশোধ করেছি।

তিনি সরকারের কাছে ‘আয়নাঘর’ নামে সিনেমা বানানোর জোর দাবি জানান।
অং রাখাইন বলেন, ‘সমাজ পরিবর্তনের অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে চলচ্চিত্র। রাষ্ট্রের সিস্টেম নিয়ে আমাদের ক্ষোভ আছে। আমি এখনো আশাবাদী না।’
তাসমিয়াহ আফরিন মৌ বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকার ফিল্মের প্রতিটি জায়গায়, ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুকে চাপিয়ে দিয়েছে। আর ১১ বিজ্ঞাপন নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান ফিল্মমেকার হিসেবে কাজ করেছে, যা একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট হিসেবে গড়ে উঠেছিল। আওয়ামী লীগ শাসনামলে তাদের বয়ানের বাইরে ভালো কাজ করার কোনো সুযোগ ছিল না। সিনেমা নির্মাতাদের একটি অংশ ওটিটি মাধ্যমে চলে গিয়েছিল। গুমের মতো ঘটনাকে তারা হাসির পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল।

তিনি বলেন, এখন কোনো সেন্সর বোর্ড চাই না, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা চাই না।
সাজেদুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে ভালো সিনেমা তৈরির সুযোগ দেয়া হয়নি। সে সময় মেধার কোনো মূল্যায়ন ছিল না। কালাচারাল পলিটিক্সের নামে ধর্মের সাথে দ্বন্দ্ব তৈরি করা হয়েছিল। আমরা এখন স্বাধীন ফিল্ম কমিশন চাই।
লাবনী আশরাফি আমলাতান্ত্রিক জটিলতার সমালোচনা করে বলেন, তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু তার নির্মিত সিনেমার একটি অংশে সাজগোজ দেখবেন না বলে, সিনেমার ওই অংশটি কেটে ফেলতে বলা হয়, যা ছিল খুবই দুঃখজনক।
আমাদের কালচারকে ফ্যাসিস্টদের বলয়মুক্ত করতে হবে উল্লেখ করে ক্ষুব্ধ কণ্ঠে তিনি বলেন, অপরাজনীতি বা অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে শিল্পীরা যদি কথা বলতে না পারেন তবে কিসের শিল্পী হলাম আমরা?

মোহাম্মদ তাওকীর ইসলাম বলেন, ‘রাষ্ট্র সবসময় তার নিজের চেহারা দেখতে ভয় পায় কেন? আমাদেরকে স্বাধীনভাবে সিনেমা বানাতে দিতে হবে। আমরা আর চোর-পুলিশ খেলা দেখতে চাই না।
জাহিন ফারুক আমিন বলেন, কালাচারাল পলিটিক্সের মাধ্যমে সেক্যুলার বনাম মুসলিম দ্বন্দ্ব বাধিয়ে রেখেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। শেখ হাসিনার মতো ফ্যাসিজমকে আমরা রক্ত দিয়ে বিদায় করেছি। এখন স্বাধীনভাবে সাধারণ মানুষের অভিপ্রায় সিনেমার মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে।
নূরুল আমিন আতিক বলেন, সিনেমায় সাধারণকে ঠেলে অসাধারণকে তুলে ধরা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষ, স্বাধীনতার ৫০ বছর, মুক্তিযুদ্ধ আর উন্নয়নের গীত গাইতে গাইতে জনগণকে শত্রুতে পরিণত করেছিল আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার। তিনি নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যতদিন দেশ আমাদের সন্তানদের হাত ধরে হাঁটবে ততদিন সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আল মামুন বলেন, ২৪-এর আন্দোলনে সমাজের সব শ্রেণিপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করে। অথচ গত ১৫ বছরেও ফ্যাসিস্ট সরকার মানুষের দুঃখ-কষ্ট দেখতে পেল না। ছাত্র-জনতার এত এত লাশ তারা চোখে দেখল না।


আরো সংবাদ



premium cement
সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেফতার সোনারগাঁয়ে শেখ হাসিনা-শেখ রেহেনাসহ ২৩৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা গাজার চলমান ঘটনাবলী সমসাময়িক বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভুল : বসনিয়া রাজনৈতিক অস্থিরতার পর থেকে ভারতের আসাম-মেঘালয় সীমান্তে আটক ৬৫ বাংলাদেশী ঐক্যের মাধ্যমেই কেবল মুসলিম উম্মাহ'র মর্যাদা প্রতিষ্ঠা সম্ভব : ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হোসেনপুরে স্কুলশিক্ষকের বসতঘর পুড়ে ছাই রাজশাহী, খুলনা ও চট্টগ্রামে ভারী বৃষ্টির আভাস 'শ্রম আইন সংস্কার করে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়ন করতে হবে' সিংগাইরে ধলেশ্বরী নদী থেকে লাশ উদ্ধার সাতক্ষীরায় বজ্রপাতে মৎস্যচাষির মৃত্যু সাংবাদিক শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল বাবুর ওপর ডিম নিক্ষেপ

সকল