স্থলবন্দর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগ
- আমিনুল ইসলাম
- ২২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০৫
ঘুষ গ্রহণসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতি অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে। শ্বশুর স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের প্রভাব খাটিয়ে অনিয়মের মাধ্যমে এই পদ বাগিয়ে নেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর যখন সব কিছু এলোমেলো তখনো তিনি তড়িঘড়ি করে নিজ ক্ষমতায় ৮ আগস্ট নিয়োগবাণিজ্য করেন। ওই নিয়োগে ইডেন কলেজের ছাত্রলীগের একজন নেত্রীর নামও রয়েছেন।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের মেয়েকে বিয়ে করার পর থেকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি জিল্লুর রহমানকে। লক্ষ্মীপুর ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, খুলনার বিভাগীয় কমিশনার এবং সবশেষে স্থলবন্দরের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। এর মধ্যে বাগিয়ে নেন অতিরিক্ত সচিব গ্রেড-১ পদটিও।
তার দখলে রয়েছে দেশের চব্বিশটি স্থল বন্দর। চেয়ারে বসেই শুরু করেন অনিয়ম-দুর্নীতি আর নিয়োগবাণিজ্য। অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই ৫ একর জমিতে গড়ে তুলেন আলিশান বাড়ি। লালমনিরহাটে স্ত্রীর নামে কিনেছেন একশত একর জমি। তার অবৈধ আয়ের অন্যতম খাত নিয়োগবাণিজ্য, বড় প্রকল্পে নিম্নমানের কাজ, টেন্ডারবাজি। আউটসোর্সিংয়ের নিয়োগ থেকে ৫ লাখ করে ঘুষ নিয়েছেন। ঘুষ নিয়ে শুধু অন্যদের চাকরি দিয়েছেন তা নয়, স্বজনদের চাকরি দিয়ে প্রতিষ্ঠানকে করেছেন পারিবারিক কেন্দ্র। ভাতিজা আবু রায়হান, তানভির আহমেদ, ভাগ্নি সামিয়া আক্তার নীলা, বড় ভাইয়ের নাতি আতাউর, বোনের ছেলে শরীফ মোল্লাসহ অনেক অত্মীয়কে নিয়োগ দিয়েছেন। বন্দর থেকে একটি গাড়ি পেলেও তার পরিবারের দখলে রয়েছে প্রতিষ্ঠানের তিনটি গাড়ি। যার কারণে গাড়ির সঙ্কট পড়ে যাওয়ায় নির্বাহী প্রকৌশলী চুক্তিভিত্তিক ভাড়ার গাড়ি ব্যবহার করেন।
ভুক্তভোগীরা বলেন, জিল্লুর রহমানের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলতে গিয়ে বন্দরের অনেককে দিতে হয়েছে মাশুল। বদলি, কারণ দর্শানোর নোটিশ, বিভাগীয় ব্যবস্থার মতো শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তার শ্বশুর সাবেক মন্ত্রী ও লালমনিরহাট-২ এর এমপি নুরুজ্জামানকে উদ্ধার করতে বন্দরের একাধিক গাড়ি ও কর্মচারীদের নিয়ে ঢাকার ন্যামভবনে যান। সেখানে শ্বশুরের মালামাল টাকা, স্বর্ণ সব কিছু ওই গাড়িগুলোতে করে নিজের বাসায় নিয়ে রাখেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সব অভিযোগ অস্বীকার করে জিল্লুর রহমান নয়া দিগন্তকে বলেন, এত সম্পদ দূরে থাক আমার একটি টাকাও সঞ্চয় নেই। আমি জীবনে কখনো ঘুষ খাইনি। লসে থাকা বন্দরের দায়িত্ব নিয়ে ১২ বছর পর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করিয়েছি। স্থল বন্দরের চরম দুর্নীতিবাজদের বদলি ও বরখাস্ত করায় তারা আমাকে এখান থেকে সরাতে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছেন। নিয়োগের প্রক্রিয়া আগেই শেষ হয়েছিল। ৮ তারিখে তারা কাজে যোগ দিয়েছেন।