১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৭ ভাদ্র ১৪৩১, ৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে : ডা: তাহের

বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সাথে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মতবিনিময় সভা : নয়া দিগন্ত -


বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা: সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীকে হিন্দুবিদ্বেষী দল হিসেবে অপপ্রচার চালানো হয় অথচ দেশে হিন্দুসহ ভিন্নধর্মাবলম্বীদের সুরক্ষার জন্য জামায়াতে ইসলামী প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। একই সাথে হিন্দুদের ব্যাপারেও দেশে একটি ধারণা প্রচলিত আছে, সেটি হলো হিন্দু মানেই মনে করা হয় আওয়ামী লীগ। জামায়াতকে যেমন হিন্দুবিরোধী অপপ্রচার দেয়া হয়েছে, তেমনি হিন্দুদেরও আওয়ামী লীগের একটা ট্যাগ লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। এজন্য হিন্দুদেরও যেমন জামায়াতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বন্ধে কাজ করতে হবে, তেমনি জামায়াতকেও হিন্দু মানেই আওয়ামী লীগ এই ‘তকমা’ দূরীকরণে কাজ করতে হবে। আমরা হিন্দুসহ ভিন্নধর্মাবলম্বীদের সুরক্ষায় জামায়াতের পক্ষ থেকে দু’টি দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছি। প্রথমত, রাষ্ট্রীয়ভাবে হিন্দু সম্প্রদায়কে সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, স্বাধীন কমিশন করে হিন্দুসহ ভিন্নধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা-নির্যাতনের বিচার করতে হবে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে গতকাল ১২ আগস্ট সোমবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে ভিন্নধর্মাবলম্বী নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে সভাপতির বক্তব্যে ডা: সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এ কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ভিন্ন ধর্মাবলম্বী জাতীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট দীনবন্ধু রায়, নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার পাল, মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শ্রী বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, বাংলাদেশ ব্রাহ্মণ সংসদের মহাসচিব বিজয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমারাথ, শ্রী শ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডিএন চ্যাটার্জি, শ্রী শ্রী ব্রাহ্মচারী আশ্রম ও মন্দির পরিচালনা পরিষদের সহসভাপতি শ্রী রবিন মুখার্জি, সাধারণ সম্পাদক বিষ্ণু পদ ভৌমিক, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা অ্যাডভোকেট প্রতিভা বাগচী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে দেলোয়ার হোসেন, কামাল হোসাইন ও ড. আবদুল মান্নান, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম কামাল উদ্দিনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোওয়ার বলেন, জামায়াত হিন্দুদের ওপর আঘাতে বিশ্বাস করে না। যেকোনো অন্যায় হিন্দু বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, মুসলমানসহ সব ধর্মেই নিষিদ্ধ। আমি নিজে হিন্দু অধ্যুষিত এলাকার এমপি ছিলাম। আমাকে হিন্দুরাও অনেক ভোট দিয়েছিলেন তারা আমাদের বিশ্বাস করে। আমাদের ওপর তাদের পুরোপুরি আস্থা আছে। এটা আমাদের আদর্শিক দায়িত্ব। জামায়াত এই আদর্শিক দায়িত্ব থেকেই সারা দেশে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় ও বাসা বাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
হিন্দু নেতৃবৃন্দ বলেন, ইতিহাস থেকে দেখা যায় বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক স্বার্থে সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আমরা এ থেকে পরিত্রাণ চাই। বর্তমান ক্রান্তিকালে জামায়াতে ইসলামী যেভাবে আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।


আরো সংবাদ



premium cement