বরিশালে সাংবাদিকদের ওপর লাঠিচার্জের নিন্দা
- বরিশাল ব্যুরো
- ০২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০৫
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচিতে লাঠিচার্জের ছবি তুলতে গিয়ে বুধবার সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের হামলায় হতবাক বরিশালবাসী। সাংবাদিক সংগঠনগুলোর নেতারা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সে সাথে দোষী পুলিশ কর্মকর্তা ও সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি জানান। গতকাল বিকেলে এক বিজ্ঞপ্তিতে বরিশাল জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আযাদ আলাউদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান হীরাসহ সাংবাদিক নেতারা পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
বরিশালের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আনিছুর রহমান খান স্বপন বলেন, ঘটনার ভিডিও দেখে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় বুঝতে পারলাম সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা বা তাদের পেটানোর বিষয়টি অনিচ্ছাকৃত নয়। এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে যদি কেউ বলে বুঝতে পারিনি-সরি, তাহলে ভবিষ্যতে বিষয়টি আরো খারাপ অবস্থায় চলে যাবে। সাংবাদিকরা যে অন ডিউটিতে ছিল তার প্রমাণ রয়েছে, কারণ মারধরের শিকার প্রত্যেকের আইডি কার্ড গলায় ঝোলানো ছিল এবং হাতে ক্যামেরা ছিল। ক্যামেরা দেখার পরও একজন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কিভাবে গণমাধ্যম কর্মীকে পেটায় সেটা বুঝি না। এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি হওয়া উচিত। এ দিকে বরিশাল জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান হীরা বলেন, কোন উদ্দেশ্যে হঠাৎ করেই বরিশালে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হলো এটি খতিয়ে দেখা উচিত। তিনি বলেন, সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অতি উৎসাহী পুলিশ সদস্যরা এ হামলা চালিয়েছে। দৈনিক যুগান্তরের ফটো সাংবাদিক শামীম আহম্মেদ বলেন, লাঠিচার্জের সময়ে আমি মাটিতে পড়ে যাই। আমার হাতে ক্যামেরা। তখনো আমাকে লাঠিপেটা করে পুলিশ। হামলায় আহত বার্তা টোয়েন্টিফোরের জেলা প্রতিনিধি এসএলটি তুহিন বলেন, আমরা অনেক সাংবাদিক একসাথে ছিলাম। শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করার সময়ে আমাদেরও পেটানো শুরু করে। আমি পায়ে আঘাত পেয়েছি। শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি। হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া অন্য দু’জন হলেন- এনটিভির ক্যামেরা পারসন গোবিন্দ সাহা ও যমুনা টেলিভিশনের ক্যামেরাপারসন হৃদয় চন্দ্র শীল।
আহত ও প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা বলেন, লাঠিচার্জকারী টিমের নেতৃত্ব দেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (ট্র্যাফিক) এস এম তানভীর আরাফাত। সাংবাদিকদের ওপর লাঠিচার্জকারী পুলিশ সদস্যের কাছেই ছিলেন তিনি। এ পুলিশ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের লাঠিচার্জ করতে নিবৃত্ত করেননি। এ সময়ে পুলিশ সদস্যরা সাংবাদিকদের গালাগাল করেছেন বলেও জানিয়েছেন কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী।
সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার প্রত্যাহার চেয়েছে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি। সংগঠনটির সভাপতি নজরুল বিশ্বাস বলেন, দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের নিন্দা জানাচ্ছি। বিনা কারণে এবং সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে সাংবাদিকদের পিটিয়েছে পুলিশ কর্মকর্তা ও তার ইউনিট। এ দিকে সাংবাদিকদের ওপর লাঠিচার্জের খবর পেয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার জিহাদুল কবির আহত সাংবাদিকদের খোঁজখবর নিয়েছেন। সে সাথে তিনি এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন বলে জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।