০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

ক্যান্সার বেশি হয় ফল ও সবজিতে ব্যবহৃত কীটনাশকে

-

ধূমপানের চেয়ে ফল ও শাকসবজিতে ব্যবহৃত কীটনাশকে ক্যান্সার বেশি হয়। গবেষকরা ফল ও শাকসবজিতে এসব বিষে কয়েক প্রকার ক্যান্সারের অনেক বেশি যোগসুত্র পেয়েছেন। স্ট্রবেরি, আপেল, চেরি, পালং জাতীয় শাক, মিষ্টি জাতীয় ফল ও আঙ্গুরের ৯০ শতাংশ নমুনায় দুই বা ততধিক কীটনাশকের অবশিষ্ট পেয়েছেন। কীটনাশক থেকে যেসব ক্যান্সার হয় সেগুলো মধে লসিকা নালীর মধ্যে থাকা লসিকা গ্রন্তির ক্যান্সার বা হপকিনস লিম্ফোমা, লিউকেমিয়া (অস্থিমজ্জার ক্যান্সার) এবং ব্ল্যাডার বা মুত্রথলির ক্যান্সার বেশি হয়ে থাকে। যেসব ফল ও শাকসবজিকে আমরা স্বাস্থ্যকর খাবার বলে জানি এসব ফল ও শাকসবজিকে পোকামাকড় থেকে রক্ষা করতে প্রচুর কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। গবেষকরা ভোক্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, খাওয়ার আগে এসব শাকসবজি ও ফল বেশি করে পানিতে ধুয়ে খেতে হবে যেন এগুলো থেকে কম বিষ মানুষের পেটে যায়।

কাটনাশক থেকে ক্যান্সার হলেও কিছু গবেষক বলছেন, কীটনাশক প্রয়োগ আধুনিক কৃষির জন্য অপরিহার্য। কারণ কীটনাশক প্রয়োগের কারণেই ফসল তোলার সময় নানা প্রকার পোকামাকড় থেকে ফসলকে রক্ষা করা যায়। কীটনাশক থেকে ক্যান্সার হওয়া ছাড়াও ফল ও শাকসবজি ধুয়ে খাওয়ার কারণে এর মধ্যে থাকা বিষ পানিতে পড়ে পানি ও মাটিকে দূষিত করে। গবেষকরা বলছেন, ফসলে কীটনাশক থাকার কারণে এর ব্যবহারকারী মানুষের রক্তে কীটনাশক চলে যাচ্ছে। গবেষকরা বলছেন, এ কারণে ৮০ শতাংশ আমেরিকানের রক্তে কীটনাশকের উপস্থিতি রয়েছে।

গবেষকরা ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভের গবেষণা ড্যাটার থেকে ৬৯ ধরনের কীটনাশকের বিশ্লেষণ করেন। তাদের গবেষণার তথ্যের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি এবং যুক্তরাজ্যের এনআইএইচের ক্যান্সারবিষয়ক তথ্যের তুলনা করেন যে কৃষিকাজে ব্যবহৃত কতো প্রকার কীটনাশকের কারণে ক্যান্সার হয়ে থাকে। গবেষকরা ধূমপানের সাথে কীটনাশক থেকে ক্যান্সার হওয়ার তুলনা করে দেখেন যে, কীটনাশকের কারণে যে ক্যান্সার হয় তা ধূমপানের কারণে ক্যান্সারে প্রায় সমান। এই গবেষণাটি ফ্রন্টিয়ার্স ইন ক্যান্সার কনট্রোল অ্যান্ড সোসাইটির জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

এই গবেষণার পক্ষে অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক টেরি স্লেভিন বলেন, কীটনাশকে যে ক্যান্সার হচ্ছে এর পক্ষে প্রমাণ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এই গবেষণাটির বিপক্ষে মত প্রকাশ করেছেন সিডনির ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের অধ্যাপক বার্নার্ড স্ট্যুয়ার্ট বলেছেন, ফ্রন্টিয়ার্স ইন ক্যান্সার কনট্রোল অ্যান্ড সোসাইটির জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় গবেষকরা তাদের পক্ষে প্রমাণ করতে পারেননি যে কীটনাশকের কারণেই যে ক্যান্সার হচ্ছে। পরিবেশবাদী কর্মীরা (ইডব্লিউজি) স্ট্রবেরি, আপেল, চেরি, পালং জাতীয় শাক, মিষ্টি জাতীয় ফল ও আঙ্গুরের ৯০ শতাংশ নমুনায় দুই বা ততধিক কীটনাশকের অবশিষ্ট পেয়েছেন। ইডব্লিউজির রিপোর্টে বলছে, একটি নমুনায় ১৩ থেকে ২৩ ধরনের কীটনাশক পাওয়া গেছে।


আরো সংবাদ



premium cement