১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

আড়াইহাজারের ৪ যুবককে শ্রীলঙ্কায় টর্চার সেলে রেখে নির্যাতন

মুক্তিপণ দিয়ে উদ্ধার, মামলা
-

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের চার যুবককে অষ্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর কথা বলে শ্রীলঙ্কায় টর্চার সেলে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের কাছ থেকে মুক্তিপণ হিসেবে আদায় করা হয়েছে ৭৬ লাখ টাকা। মুক্তিপণ দিয়ে দেশে ফিরে আসার পর প্রতারক দালাল চক্রের বিরুদ্ধে আড়াইহাজার থানায় মানবপাচার আইনে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী একজনের পিতা।
উপজেলার পাঁচরুখী এলাকার মোবারক মোল্লা গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের জানান, তার ছেলে হাসিবুল হোসাইন,একই গ্রামের স্বপন মিয়ার ছেলে আঃ আহাদ, শামিমের ছেলে সাকিব ও কাইছারের ছেলে হানিফ মোল্লাসহ মোট চারজনকে আরো অষ্ট্রেলিয়া নেয়ার কথা বলে ঢাকার মিরপুর একটি বাসায় তাদের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।

পরে ২০২৩ সালের ২৬ মে হাসিবুল হোসাইনসহ আরো তিনজনকে অষ্ট্রেলিয়া পাঠানের কথা বলে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। প্রতারক চক্র তাদের ভারতের চেন্নাই নিয়ে গিয়ে টর্চার সেলে আটক করে রেখে তাদের পরিবারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা মুক্তিপণ আদায় করে। তাদের আবার চেন্নাই থেকে অষ্ট্রেলিয়া নেয়ার কথা বলে নিয়ে যাওয়া হয় শ্রীলঙ্কায়।
সেখানে নিয়ে আবার তাদের রাখা হয় প্রতারক চক্রের নির্ধারিত টর্চার সেলে। সেখানে দ্বিতীয় দফায় তাদের আটকে রেখে দৈহিক নির্যাতন করে তাদের পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৭৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করা হয়। পরে মুক্তিপণ পাওয়ার পর ভিকটিমদের ছেড়ে দিলে শ্রীলঙ্কার পুলিশের মাধ্যমে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
নির্যাতিতরা দেশে আসার পর ভুক্তভোগী হাসিবুল হোসাইনের পিতা মোবারক হোসেন গত ৩ মে মামলার ৬ নং বিবাদি ইকবালের ভুলতা গাউছিয়া এলাকার বাড়িতে এক সমঝোতা বৈঠক বসেন। বৈঠকে প্রতারকচক্র মোবারক হোসেনকে চরম অপমান অপদস্থ ও হুমকি-ধমকি প্রদান করে। ভিকটিমদের ক্ষতিপূরণ দিবে না বলে জানায়।

এ বিষয়ে মোবারক হোসেন বাদি হয়ে মানবপাচার ট্রাইব্যুনাল, নারায়ণগঞ্জ এ চলতি বছরের মে মাসের ১৬ তারিখে মল্লিক রেজাউল হক সেলিম, তার স্ত্রী বিউটি এবং মেয়ে সূচিসহ যাদের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা দেয়া হয়েছে তাদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন । যা আদালতের নির্দেশে আড়াইহাজার থানায় রেকর্ড করা হয়। পিটিশন মোকদ্দমা নং- ২৫৪/২৪। কিন্তু মামলা হওয়ার পর প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও পুলিশ প্রধান আসামি মল্লিক রেজাউল হক সেলিমকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আড়াইহাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন জানান, মামলা গ্রহণের পর একজন আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। প্রধান আসামিসহ বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তা ছাড়া মামলাটি সিআইডির শিডিউলভুক্ত হওয়ায় এর তদন্তভার সিআইডিতে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন ওকাপের ফিল্ড অফিসার আমিনুল হক জানান, আমরা এই ব্যাপারে ভুক্তভোগীদের সহযোগিতা করব এবং তাদের পাশে থাকব। আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশতিয়াক আহমেদ জানান, আমরা মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।

 


আরো সংবাদ



premium cement