০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ জিলহজ ১৪৪৫
`

চাঁদাবাজির মামলায় ১২ বছরের শিশুও আসামি

-

গাজীপুর মহানগরীর উত্তর ছায়াবীথি এলাকায় পারিবারিক বিরোধের জেরে থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা হয়েছে। মামলায় স্বামী, স্ত্রী ও তাদের ১২ বছরের শিশুকেও আসামি করা হয়েছে। আরো একাধিক মামলায় অসহায় ও নিঃস্ব ওই পরিবারকে হয়রানি করায় স্থানীয়দের মধ্যেও বিরাজ করছে ক্ষোভ।
স্থানীয়রা জানান, সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিরোধের জেরে নগরীর উত্তর ছায়াবীথির কাজী ইমতিয়াজ উদ্দিন অমির ভগ্নিপতি লুৎফল হক সাগর গত ১৯ এপ্রিল জিএমপি সদর থানায় ৫০ লাখ টাকার চাঁদা দাবির অভিযোগে একটি মামলা করেন। মামলায় অমি ও তার স্ত্রী এবং তাদের পঞ্চম শ্রেণী পড়–য়া ১২ বছরের ছেলের বয়স গোপন রেখে তাকেও আসামি করা হয়। এর আগেও গত ২ জানুয়ারি অমির বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগে আদালতকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করা হয়। ফলে আদালতের ওই মামলায় অমির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়। এমনকি গত ১৩ ফেব্রুয়ারি পাঁচ লাখ টাকার চাঁদা দাবির মিথ্যা অভিযোগে আরেকটি এবং গত ১৮ মার্চ জালিয়াতির অভিযোগে পৃথক আরেকটি মামলা দেয়া হয়। বর্তমানে একাধিক মিথ্যা মামলার পরোয়ানা নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অমি।
ইমতিয়াজ উদ্দিন অমি বলেন, ছোট বোনের ঘরজামাই লুৎফুল হক সাগর সম্পত্তির লোভে আমার পেছনে উঠে পড়ে লেগেছেন। তার কুপরামর্শে বাবা আমাকে এখন তার সন্তান হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ আমি জন্মের পর থেকেই তাকে (কাজী মিরাজ উদ্দিনকে) জন্মদাতা বাবা ও মনোয়ারা বেগমকে মা হিসেবেই জানি। আমার জন্মসনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রসহ যাবতীয় কাগজপত্রে এই পরিচয়ই বহন করছি। এমনকি বাবা আমার ব্যবহার ও সেবা শুশ্রƒষায় সন্তুষ্ট হয়ে নিজের ছেলে হিসেবেই বিগত ২০১৫ সালে আমাকে একখণ্ড জমিও হেবা দলিল করে দেন। বর্তমানে ভগ্নিপতির কথায় আমাকে অন্যায়ভাবে মায়ের রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ করতে একের পর এক ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা হচ্ছে।
অমিদের প্রতিবেশী ও সাবেক গাজীপুর পৌরসভার কমিশনার কাজী সাহাব উদ্দিন বলেন, ইমতিয়াজ উদ্দিন অমি অত্যন্ত ভালো ছেলে। এলাকায় তার কোনো খারাপ রেকর্ড নেই। আমরা শুনেছি, অমি মায়ের গর্ভে থাকাবস্থায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় তার বাবা মারা যান এবং তার জন্মের মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় হাসপাতালে তার মায়েরও মৃত্যু হয়। এর পর মিরপুর থানায় সাধারণ ডায়েরির মাধ্যমে নিঃসন্তান মিরাজ-মনোয়ারা দম্পতির জন্য অমিকে হাসপাতাল থেকে দত্তক আনা হয়। পরে এই দম্পতির ঘরে আরো দুই মেয়েসন্তান জন্ম হলেও মনোয়ারা নিজের গর্ভজাত সন্তানের চেয়েও অমিকে আদর স্নেহ করতেন। বিগত ১৯৯৯ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মনোয়ারা বেগম মারা যাওয়ার পর তার স্বামী কাজী মিরাজ উদ্দিন অন্যত্র বিয়ে করেন। এর পর থেকে অমির ওপর দুর্দশা নেমে আসে। মনোয়ারা বেঁচে থাকলে অমির এ দুর্দশা হতো না বলে মন্তব্য করেন সাহাব উদ্দিন।
এ দিকে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে অমির পালক বাবা মিরাজ উদ্দিন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘অমির সাথে আমার ১৪ বছর ধরে কোনো যোগাযোগ নেই। তার বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারব না।’ অমির ভগ্নিপতি লুৎফুল হক সাগর বলেন, ইমতিয়াজ অমি বাইরের লোক দ্বারা পরিচালিত। আমরা জমিতে কাজ করতে গেলে তারা বাধা দেয় এবং তাদেরকে কিছু (চাঁদা) দিতে হবে এমন বোঝায়। এমনকি তারা আমার স্ত্রী ও লেবারদেরকেও মারধর করেছে। তাই মামলা দিয়েছি।


আরো সংবাদ



premium cement