১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

তাড়াইলে সিঁধ কেটে শিশু চুরি

-


দুই মাস বয়সী শিশু জুনায়েদকে নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন মা।
শেষ রাতে ঘুম থেকে জেগে দেখেন ছেলে তার পাশে নেই। বিছানা থেকে উঠে ছেলেকে খাটের আশপাশে খুঁজতে থাকেন। কোথাও নেই তার আদরের ধন। একপর্যায়ে মা সানজিদা নাজনীন দেখেন ঘরের দরজা খোলা। কাঁচা বসতঘরটির ভিটের পেছনের দিকে মাটি খুঁড়ানো, চোর সিঁধ কেটে রেখেছে! সানজিদা হাউমাউ করে উঠলেন এবং চিৎকারে কাঁদতে থাকেন।
তার কান্নায় আশপাশের লোকজন সজাগ হয়ে জড়ো হয় তার ঘরে।

এরপর সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেন। খবর নেয়া হয় আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে। কোথাও পাওয়া যায়নি জুনায়েদকে। খবর দেয়া হয় পুলিশকে। ঘটনাস্থল তারা পরিদর্শন করেন।
ঘটনাটি কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার তালজাঙ্গা ইউনিয়নের শাহবাগ পাঁচপাড়া গ্রামের।
শিশুর স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনা যেখানে ঘটেছে এটা মা সানজিদার বাবার বাড়ি। গত রোববার রাতে প্রতিদিনের মতোই খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন সানজিদা। বুকের পাশে ঘুমানো ছিল জুনায়েদ। তখন রাত ৯টা। এরপর দুইবার ছেলেকে বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য জাগেন মা। সবশেষে রাত ৩টার দিকে জুনায়েদের কান্নায় ঘুম ভাঙে সানজিদার। শিশুটিকে দুধ খাইয়ে ক্লান্ত শরীর নিয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়েন। ফজরের আজানের সময় তার ঘুম ভাঙে।

সানজিদা নাজনীনের স্বামী সাজ্জাদ হোসেনের বাড়ি চট্টগ্রামে। সেখানে তিনি গার্মেন্টে চাকরি করেন। জুনায়েদ যখন গর্ভে, তখন স্বামীর সাথেই থাকতেন তিনি। প্রসবের সময় ঘনিয়ে আসায় বাবার বাড়িতে এসেছিলেন সানজিদা। গত রমজান মাসের শেষের দিকে জুনায়েদের জন্ম হয়েছিল। রোববার ছেলে হারানোর দিন স্বামী সাজ্জাদ হোসেন চট্টগ্রামে ছিলেন। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে সানজিদা নাজনীনের বাবার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, জুনায়েদের জন্য তার মাসহ স্বজনরা বিলাপ করছেন। প্রতিবেশীরা তাদের সান্তনা দিচ্ছেন। মা কাঁদতে কাঁদতে পাগলপ্রায়। একটু পর পর তিনি অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন। জ্ঞান ফিরলেই হাউমাউ করে কেঁদে উঠে বলছেন, ‘কই গেলোরে আমার বাবা! আমি কেউর তো ক্ষিত করি নাই। আমার বাবারে কেডা নিলো। আমার বুকর ধনরে আইন্না দেও।’ জানা গেছে, আগে সানজিদার একবার বিয়ে হয়েছিল। সাজ্জাদ তার দ্বিতীয় স্বামী। এ স্বামীর ঘরে জুনায়েদ তার একমাত্র সন্তান।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নিকলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) বাহালুল খান বাহার নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। তাড়াইল থানার একাধিক টিম শিশুটাকে উদ্ধার করার জন্য কাজ করছে। থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। পরিবারকে বলে দিয়েছি একটু ধৈর্য ধরতে। আমরা শিশুটাকে উদ্ধারের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’

 


আরো সংবাদ



premium cement