বিশৃঙ্খলা এড়াতে ক্যাম্পাস বিমুখ ঢাবি ছাত্রদল
- ঢাবি প্রতিনিধি
- ০৯ জুন ২০২৪, ০০:৫৫
মরহুম প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ‘উৎপাদন রাজনীতি’ তত্ত্বে গড়ে ওঠা শিক্ষা, ঐক্য, প্রগতির সেøাগানবাহী সংগঠন বাংলাদেশ জাতিয়তাবাদী ছাত্রদল। ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরির লক্ষ্যে ছাত্র সংগঠন প্রয়োজনীয়তা থেকেই ১৯৭৯ সালের ১ জানুয়ারি ছাত্রদল প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্ন থেকে জিয়াউর রহমানের উন্নয়ন প্রকল্পের সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছে ছাত্র সংগঠনটি।
প্রতিষ্ঠাকালীন থেকেই সারা দেশের ছাত্র জনতার মনে জায়গা করে নেয় সংগঠনটি। ১৯৮০ সালের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সংসদ নির্বাচনে ৫ টিতেই জয়লাভ করে তারা । তার পর থেকে ডাকসুর নির্বাচনে একচেটিয়া বিজয় লাভ করে সংগঠনটি। তবে, ছাত্রদলের ৪৫ বছরের গৌরবময় অতীত রাজনৈতিক ঐতিহ্য থাকলেও বর্তমানে ক্যাম্পাস ভিত্তিক সাংগঠনিক কার্যক্রম বিমুখ সংগঠনটি । দীর্ঘদিন থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার রাজনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারছে না দলটি। আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ কর্তৃক বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় সামগ্রিক পরিবেশের কথা চিন্তা করে দ্রুতই ক্যাম্পাস ভিত্তিক সাংগঠনিক কার্যক্রমে আসছে না বলে জানিয়েছে ঢাবি ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। ক্যাম্পাসে সরব রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বিরাগভাজন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাও।
প্রশ্নের জবাবে ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি বলেন, আমরা চাচ্ছি না ক্যাম্পাস ভিত্তিক সাংগঠনিক কার্যক্রমে ফিরে ছাত্রলীগ আমাদের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করার সুযোগ পাক। তাই অল্প একটু সময় নিয়ে হলেও আমরা এ ব্যাপারে দৃঢ় পদক্ষেপে এগোবো। মূলত ঢাবি ক্যাম্পাসে সহাবস্থান ছাত্র রাজনীতি অনেক দিন থেকেই। কয়েকটি বাম সংগঠন ছাড়া অন্যান্য ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনের সক্রিয় কার্যক্রম দেখা মেলা ভার। মূলত ছাত্রলীগের একক প্রভাবকে দায়ী করছে ছাত্র সংগঠনগুলো।
ছাত্ররাজনীতির একটা বড় শাখা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। নবগঠিত ঢাবি ছাত্রদলের ক্যাম্পাস অসঙ্গতি নিয়ে দুটি লিখিত বিজ্ঞপ্তি দেয়া ছাড়া চোখে পড়ার মতো উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম দেখা যায়নি সংগঠটির।
রমজানে হলের ক্যান্টিনগুলোতে খাবারের মূল্যবৃদ্ধি ও নিম্নমানের খাবার সরবরাহের প্রতিবাদ এবং আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে দুটি বিবৃতি ছাড়া আর দৃশ্যমান কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করেনি ঢাবি ছাত্রদল।
এ ছাড়া, ক্যাম্পাসভিত্তিক ছাত্র সংগঠনের নতুন কমিটি হওয়ার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সাথে সাক্ষাৎ করে নবগঠিত কমিটির নেতাকর্মীরা। তবে ছাত্রদলের নতুন কমিটি হওয়ার পরেও ৩ মাসের মধ্যে ভিসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
তবে, গত কমিটি গঠনের পরে ভিসির সাক্ষাৎ ও ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গিয়ে পথিমধ্যে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এ সময় দলটির বিভিন্ন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন।
ছাত্রদলের বর্তমানে সীমাবদ্ধতা কী প্রশ্নের জবাবে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একক প্রভাবকে দায়ী করে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নয়া দিগন্তকে বলেন, বর্তমানে ছাত্রলীগ একটা সন্ত্রাসী সংগঠন, সেটা সর্বমহলে পরিচিত। চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নারী কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে তারা জড়িত। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের হলগুলোতে আধিপত্য দিয়ে রেখেছে। মধুর ক্যান্টিন, ডাকসু সংসদ সব গুলোই তারা দখল করে আছে। ক্যাম্পাসে সক্রিয় কার্যক্রমে ফিরলে সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। এর আগেও ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করতে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
ছাত্রদলের ক্যাম্পাসের ফেরার ব্যাপারে তিনি বলেন, ঢাবি একটা গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট। বিগত ৩ মাসের মধ্যে রমজান মাস এবং তাপদাহ থাকার কারণে সরাসরি কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারিনি। তবে বেশ কিছু ইস্যুতে আমরা কথা বলেছি। আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। বিগত কয়েক বছর ধরে এই ছাত্রলীগের ত্রাসের কারণে মধুতে রাজনৈতিক আড্ডা বন্ধ ছাত্রদলসহ অন্যান্য ছাত্রসংগঠনগুলোর । তবে সার্বিক বিষয় বিবেচনায় রেখে কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আমরা এগোব।
ক্যাম্পাসভিত্তিক ছাত্র সংগঠনের নতুন কমিটি হওয়ার পরে ভিসির সাক্ষাৎকার নবগঠিত কমিটি। তবে ছাত্রদলের নতুন কমিটি হওয়ার পরে ভিসির সাথে সাক্ষাৎ করেননি সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
তিনি বলেন, উনি ভিসি গত ১ মাসে প্রায়ই বাইরে থেকেছেন। উনার সাথে কথা হয়েছে দ্রুতই এ কর্মসূচিটি বাস্তবায়ন করব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা