১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

বাজেটে সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ নিয়ে অসন্তুষ্টি

-

এবারের বাজেটে সংস্কৃতি খাতে নামমাত্র বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। বিগত অর্থবছরের তুলনায় হিসাব করলে এই বরাদ্দ বৃদ্ধি হয়েছে মাত্র দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। এতে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংস্কৃতিকর্মীদের দাবি, এই খাতের উন্নয়ন করতে হলে জাতীয় বাজেটের ন্যূনতম ১ শতাংশ বরাদ্দ প্রয়োজন। এ ছাড়াও যে বরাদ্দ দেয়া হয় তার বেশির ভাগ খরচ হয় অবকাঠামো ও বেতনভাতা পরিশোধে। ফলে সংস্কৃতিচর্চা ব্যাহত হচ্ছে।
বাজেট নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন,
যদিও এ বছর সংস্কৃতি খাতে প্রস্তাবিত বাজেটে গেল বছরের তুলনায় বরাদ্দ কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু বরাবরই সংস্কৃতি খাতে মোট বাজেটের ১ শতাংশ দাবি করে এসেছে সংস্কৃতিকর্মীরা। তিনি বলেন, সরকারের যে নির্বাচনী ইশতেহার, সে অনুযায়ী সামগ্রিকভাবে আমাদের একটি দাবি ছিল। ইশতেহারে দুর্নীতি, সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাস ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে জিহাদের ঘোষণা ছিল। তার জন্য নীতি নৈতিকতা, মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ করে একটি অসাম্প্রদায়িক প্রগতিবাদী আদর্শবাদী নাগরিক তৈরি করার জন্য সংস্কৃতির যে ভূমিকা এবং তার জন্য যে বাজেট প্রয়োজন- সেটার দাবি আমরা জানিয়ে এসেছি। কিন্তু কার্যত সরকারের সংস্কৃতি খাতের বাজেট ঘোষণায় তার প্রতিফলন আমরা দেখছি না।
তিনি বলেন, উপজেলা পর্যায়ে মিলনায়তন, মুক্তমঞ্চ নির্মাণ, জেলাপর্যায়ে আধুনিক মিলনায়তন নির্মাণ, রাজধানীতে বিভিন্ন অঞ্চলে মিলনায়তন নির্মাণ- এগুলোতো ঘোষিত বাজেটে প্রতিফলন নেই। প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ-সুবিধা যেমন লাগবে, একইভাবে গ্রাম থেকে রাজধানী পর্যন্ত একটি সাংস্কৃতিক জাগরণ গড়ে তুলবার জন্য তরুণ নবীন সংস্কৃতিকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করতে যে প্রশিক্ষণ দরকার- তার জন্য শিল্পকলার সব বিভাগে উপজেলা-জেলা পর্যায়ে স্থায়ী প্রশিক্ষক নিয়োগ প্রয়োজন কিন্তু সেগুলোরও তো কোনো লক্ষণ বাজেটে নেই। তাহলে সংস্কৃতি কিভাবে বিকশিত হবে? তিনি বলেন, জেলা উপজেলার কথা তো বাদই দিলাম। রাজধানী শহরের দিকে তাকালে দেখবেন, দেড় কোটি মানুষের জন্য এখানে মিলনায়তন আছে চারটি। মিরপুর-পল্লবীতে ষাট লাখ মানুষ বাস করে, সেখানে একটি মিলনায়তন নেই। তাহলে কিভাবে সাংস্কৃৃতিক জাগরণ করবেন? শুধু সংস্কৃতিকর্মীদের গালি দেবেন, কেন দেশে মৌলবাদীদের উত্থান হচ্ছে, নারী নির্যাতন হচ্ছে- এগুলো কেন সংস্কৃতিকর্মীরা রুখতে পারে না! কিভাবে পারবে সংস্কৃতি কর্মীরা, তাদের আপনি কী দিচ্ছেন? তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন,‘আমরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে এসেছি, সংস্কৃতির যে বিষয়গুলো বাস্তবায়ন না হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, বাংলার সার্বজনীন সংস্কৃতি হুমকির মুখে পড়বে- তার জন্য সংস্কৃতি খাতকে উপেক্ষার কোনো সুযোগ নেই। এখনো বাজেট পাশ হয়নি, সংস্কৃতি খাতে সরকারের আরো বেশি মনোযোগ আমরা আশা করব।’


আরো সংবাদ



premium cement