শৈলকুপা ও নড়াইলে সংঘর্ষ ২৯ জন আহত
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ০৪ জুন ২০২৪, ০১:৫৩
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী চেয়ারম্যান এবং পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ২৫ জন আহত হয়েছেন। নড়াইল সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনপরবর্তী সহিংসতায় চারজন আহত হয়েছেন।
শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) সংবাদদাতা জানান, ঝিনাইদহের শৈলকুপায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী চেয়ারম্যান ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল দুপুরে নিত্যানন্দনপুর ইউনিয়নের বাগুটিয়া গ্রামে এ সংঘর্ষ হয়। উভয় গ্রুপই আওয়ামী লীগের সমর্থক। এ সময় দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে উভয় পক্ষের ২৫ জন গুরুতর আহত হন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। আহতদের শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নিত্যানন্দনপুর ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধরে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী নেতা মফিজ বিশ্বাস ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী নেতা ফারুক বিশ্বাসের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। তার জের ধরে বাগুটিয়া গ্রামে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক বিশ্বাসের সমর্থক আব্দুর রশিদ বিজয়ী চেয়ারম্যান মোটরসাইকেল মার্কার মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নুর পক্ষে ও ইউপি চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন বিশ্বাসের সমর্থক কোবাদ বিশ্বাস পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী দোয়াতকলম মার্কার শামীম হোসেন মোল্যার পক্ষে অবস্থান নেন। এ নিয়ে বাগুটিয়া গ্রামে ভোট পরবর্তী সময়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এ উত্তেজনার কারণে গতকাল দুপুরের দিকে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে কোবাদ বিশ্বাস ও আব্দুর রশিদ সমর্থকরা ঢাল সড়কি রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দীর্ঘ সময় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। মোটরসাইকেল মার্কার সমর্থক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন বিশ্বাস বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পর থেকে বাগুটিয়া গ্রামে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন বিশ্বাস তার সমর্থকদের দিয়ে বাগুটিয়া গ্রামে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এ সংঘর্ষ তারই অংশ।
এ দিকে সংঘর্ষের এ ঘটনায় ১২নং নিত্যানন্দনপুর ইউপি চেয়ারম্যান দোয়াতকলম মার্কার সমর্থক মফিজ উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পর থেকে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক বিশ্বাস বাগুটিয়া গ্রামের সমর্থকরা তার সমর্থকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাগুটিয়া গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
নড়াইল প্রতিনিধি জানান, নড়াইল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার জের ধরে সিংগাশোলপুর ইউনিয়নের গোবরা গ্রামে স্থানীয় নিউটন গাজীর (৩৮) প্রাইভেটকার পুড়িয়ে দিয়েছে প্রতিপক্ষরা। গত রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে। গাড়ি পোড়ানোর পাশাপাশি নিউটনের ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুরসহ প্রায় এক ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং প্রায় এক লাখ টাকা লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া নিউটন গাজীর বাবা আবুল হোসেন গাজী (৭০), স্ত্রী নাসরিন আক্তার (৩৫), শিশুপুত্র সাব্বির গাজী (১০) ও ছয়মাস বয়সী আরাব এবং প্রতিবেশী মোহাম্মদ লিটনকে (৪২) মারধর করে আহত করা হয়েছে। সিংগাশোলপুর পরিষদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান উজ্জ্বল শেখের নেতৃত্বে একদল ৫০ লোক প্রাইভেটকারে অগ্নিসংযোগ এবং বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
গত ২১ মে অনুষ্ঠিত নড়াইল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনারস প্রতীকের বিজয়ী প্রার্থী আজিজুর রহমান ভূঁইয়ার পক্ষে কাজ করায় নিউটন গাজীর প্রাইভেটকারে অগ্নিসংযোগসহ বাড়িঘরে এ হামলা এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া প্রতিবেশি মোহাম্মদ লিটনের বাড়িতেও হামলা চালায় প্রতিপক্ষরা। ভুক্তভোগী নিউটনের স্ত্রী নাসরিন জানান, গত রোববার রাত ১২টার পর সাবেক চেয়ারম্যান উজ্জ্বল শেখের নেতৃত্বে রাজু বিশ্বাস, রিপন শেখ, মিটুল শেখ, টুটুল শেখ, সামাদ, সোহাগ, অয়ন শেখ, ইমন, জাহিদ, আব্দুর রাজ্জাক, রাশেদ, রবিউল, পিয়াসসহ ৫০-৬০ জন লোক তাদের প্রাইভেটকারে অগ্নিসংযোগ করে ভস্মীভূত করেছে। এ সময় নিউটন গাজী বাড়িতে ছিলেন না।
এ দিকে উজ্জ্বল শেখের নেতৃত্বে গোবরা বাজারে দোকানপাট এবং এলাকার জমি জোরপূর্বক দখলসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সিংগাশোলপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান উজ্জ্বল শেখ বলেন, আমি এলাকার বাইরে আছি। ঘটনার সাথে আমি এবং আমার লোকজন জড়িত নয়। উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের নামে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
নড়াইল সদর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা