আন্দোলনের মুখে জবির ইমামকে জুমার নামাজের অনুমতি
- জবি প্রতিনিধি
- ০১ জুন ২০২৪, ০০:০০
আন্দোলনের মুখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের ইমাম মো: ছালাহ উদ্দিনকে নামাজ পড়ানোর অনুমতি দেয়া হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার জবির কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ইমাম মো: ছালাহ উদ্দিন জুমার নামাজ পড়িয়েছেন।
অনুমতি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মো: আইনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ইমাম মো: ছালাহ উদ্দিনকে সহকারী ইমামের সাথে সমন্বয় করে নামাজ পড়াতে বলা হয়েছে। তবে তদন্ত চলমান থাকবে।
এর আগে ইমামকে অব্যাহতির প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ মিছিল ও মানববন্ধন করেন। তবে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন শেষ করার আগেই বাধা প্রদান করে ব্যানার কেড়ে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মিছিলে বাধা প্রদানে নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো: জাহাঙ্গীর হোসেন।
এর আগে গতকাল শুক্রবার জনসংযোগ অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মধ্যরাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় মসজিদে ছাত্রীকে ঘুমন্ত অবস্থায় পাওয়ার ঘটনায় তদন্তের স্বার্থে তাকে ইমামতি থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে কোনো কোনো গণমাধ্যম খতিবকে অপসারণ করা হয়েছে বা অব্যাহতি দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে বিষয়টি ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে, যা অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে গত ১৫ মে রাত ১১টা ২০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থীর অবস্থানের ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে মসজিদের ইমামসহ (খতিব) সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বে অবহেলার বিষয়ে তদন্তপূর্বক একটি নিরপেক্ষ প্রতিবেদন প্রদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, কেন্দ্রীয় মসজিদ ও ইমাম ইস্যুতে একটি বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল। তাই আমরা বিষয়টি স্পষ্ট করলাম। তদন্ত শুরু হওয়ায় মৌখিকভাবে ইমামকে নামাজ পড়ানো থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছিল। অব্যাহতি দেয়া হয়নি। ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে গত ২৭ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম লুৎফর রহমানকে আহ্বায়ক এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খালেদ সাইফুল্লাহকে সদস্যসচিব করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এ দিকে ইমামের অব্যাহতির বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিবাদ ও সমালোচনার ঝড় তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলছেন, মূল ঘটনার সূত্রপাত গত ১৭ মার্চ থেকে। সে দিন জাতীয় শিশু দিবস এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার মৃত্যুতে তার রূহের মাগফিরাত কামনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মাহফিলে মসজিদের মিম্বরের পাশে নারী-পুরুষ সবাইকে একসাথে বসিয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন মহিলা ভিসি সাদেকা হালিম। এ ঘটনার ছবি ভাইরাল হলে ঘটনাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় কয়েকটি গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরা ইমামকে প্রশ্ন করলে বক্তব্য দেন ইমাম সালাহ উদ্দিন। বক্তব্যে মসজিদে নারী-পুরুষ একত্রে বসা ইসলামী বিধানের লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেন তিনি। এরপর ইমামকে ভিসি দফতরে ডেকে নিয়ে তিরস্কার করা হয়। এ ঘটনার জের ধরেই ইমামকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে শিক্ষার্থীদের ধারণা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা