বিল উত্তোলনের জটিলতায় রাবিতে গবেষণা প্রকল্প নিতে অনীহা শিক্ষকদের
- রাবি প্রতিনিধি
- ২৪ মে ২০২৪, ০০:৪৬
গবেষণার বিল উত্তোলন জটিলতায় গবেষণা প্রকল্প নেয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষকরা। কেউ কেউ গবেষণায় বাজেট ঘাটতির ওপর দায় চাপালেও এখন প্রতি বছরই বরাদ্দকৃত অর্থের একটি বড় অংশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে ফেরত যাচ্ছে। ঠিক এ কারণে কমে যাচ্ছে গবেষণার সংখ্যা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক স্বতন্ত্র গবেষণা সেল চালু করলে এই সমস্যা অনেকটাই কমে আসবে বলে মনে করছেন জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা।
এ বছর ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত ইউজিসির সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১০ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ থেকে ২০২১-২২ পর্যন্ত পাঁচ অর্থবছরের মধ্যে শুধু ২০১৯-২০ অর্থবছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা বরাদ্দের তুলনায় বেশি অর্থ ব্যয় করেছিল। এ ছাড়া বাকি চার অর্থবছরেই ৪০-৭০ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ অব্যয়িত ছিল। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রাবির গবেষণা খাতে মোট বরাদ্দ ছিল চার কোটি ২৫ লাখ টাকা। এর বিপরীতে বিশ্ববিদ্যালয়টি ব্যয় করেছিল মাত্র এক কোটি ২৫ লাখ ৮৭ হাজার টাকা এবং অব্যয়িত ছিল প্রায় ৭০ দশমিক ৩৮ শতাংশ অর্থ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল চার কোটি ৭০ লাখ টাকা এবং প্রকৃত ব্যয় ছিল মাত্র এক কোটি ৯৯ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। অব্যয়িত ছিল ৫৭ দশমিক ৫২ শতাংশ অর্থ। ২০২০-২১ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল পাঁচ কোটি টাকা এবং প্রকৃত ব্যয় ছিল দুই কোটি ৭২ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। ব্যয় করতে পারেনি ৪৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল আট কোটি টাকা এবং প্রকৃত ব্যয় ছিল চার কোটি ৬৪ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। ব্যয় হয়নি ৪১ দশমিক ৯০ শতাংশ অর্থ। শিক্ষকদের অভিযোগ, গবেষণার বিল উত্তোলনে বিভিন্ন জটিলতা, গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার সরঞ্জাম সরবরাহের প্রশাসনের ব্যর্থতা থাকায় প্রকল্প হাতে নিতে অনাগ্রহের অন্যতম কারণ। ফলে শিক্ষকদের একাংশ গবেষণা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
গবেষণার প্রক্রিয়া আরো অনেক সহজ হওয়া উচিত জানিয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, যারা প্রকল্পের জন্য আবেদন করেন, তাদের চিন্তা থাকে গবেষণায়, সুতরাং পেপার ওয়ার্ক করার সাথে সব ডকুমেন্টস প্রস্তুত রাখা একধরনের জটিলতা। কত শতাংশ ভ্যাট, ট্যাক্স কত টাকার উপরে গেলে টেন্ডারে যেতে হবে কত কমে গেলে টেন্ডারে যেতে হবে না, কোনো আইটেম রিসার্চ গ্রেন্টের মধ্যে থাকতে পারে কোনটায় পারে না এ ব্যাপারে পরিষ্কার একটা নির্দেশনা থাকা দরকার। অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন ড. মো: ইলিয়াস হোসাইন বলেন, গবেষণা খাতে খরচের হিসাবগুলো মেলানো একটি সাধারণ সমস্যা। এ খাত, সে খাত নানাবিধ হিসাবনিকাশেও জটিলতা হচ্ছে। এ ছাড়া গবেষণায় বরাদ্দের টাকার তুলনায় খরচ বেশি হচ্ছে। একজন রিসার্চ ডিরেক্টর দরকার যিনি এগুলোর দায়িত্বে থাকবেন।
প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. খালেদ হোসাইন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, মূলত আমাদের গবেষণার আগ্রহ কমছে তবে বিল ভাউচারেও ঝামেলা হচ্ছে অস্বীকার করা যাবে না। এটা মাইনোর সমস্যা, এতে আলাদা একটা বিভাগ কাজ করলে প্রক্রিয়াটা সহজ হয়ে যেত।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা