পরিবেশ রক্ষায় সারা দেশের গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণ প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৮ মে ২০২৪, ০০:০৫
পরিবেশ রক্ষায় সারা দেশের গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পর্যায়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি মো: খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে এ রুল জারি করেন।
রুলে সারা দেশে গাছ কাটা বন্ধে (ব্যক্তি মালিকানাধীন গাছ ব্যতীত) ব্যবস্থা নিতে বিবাদিদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না; ঢাকা শহরসহ অন্যান্য জেলা এবং উপজেলা শহরে গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না; সামাজিক বনায়ন বিধিমালা ২০০৪ এর বিধানে গাছ লাগানোর চুক্তিভুক্ত পক্ষকে অর্থ প্রদানের বিধান সংযুক্ত করার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে ৭ দিনের মধ্যে পরিবেশবাদী, পরিবেশ বিজ্ঞানী, প্রফেসর, পরিবেশ বিজ্ঞান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রফেসর পরিবেশ বিজ্ঞান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে একটি সাত সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করার কেন নির্দেশ দেয়া হবে না; গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৭ দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার ইস্যু করে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা পরিবেশ অফিসার, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি/সেক্রেটারি এবং সিভিল সার্জনের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না; গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৭ দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার ইস্যু করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে; কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, সমাজকল্যাণ অফিসার, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অব ল্যান্ড এবং এলজিইডির এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না; এবং কমিটি গঠন হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সব বিবাদি নিজ নিজ এলাকায় যাতে কোনো গাছ কাটা না হয় সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না মর্মে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
সাম্প্রতিককালে তাপমাত্রা অত্যধিক বৃদ্ধি ও জনজীবন অতিষ্ঠ হওয়ার মধ্যেও বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে মর্মে সংবাদ মিডিয়ায় প্রকাশিত হলে জনস্বার্থে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) গত ৫ মে হাইকোর্টে রিট আবেদন করে। এই রিট আবেদনের পর গত ৬ মে এবং ৭ মে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন আইনজীবী সঞ্জয় মণ্ডল, নাছরিন সুলতানা এবং সেলিম রেজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এ এ জি মো: রেজাউল হক।
শুনানিতে সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রাক্কালে এবং সরকারের অঙ্গীকার পরিবেশ রক্ষা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যত্রতত্র গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। বিভিন্ন মিডিয়ায় যেভাবে রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে গাছ কাটার এক মহা উৎসব চলছে।
শুনানিতে তিনি আরো বলেন, যে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ঢাকা শহরে যে পরিমাণ গাছপালা থাকা দরকার তা দিন দিন কমছে এবং সম্প্রতি তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে মানুষের জীবনযাত্রা আরো দুর্বিষহ হয়ে উঠছে যার কারণে সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। অন্য দিকে সামাজিক বনায়ন চুক্তিতে সারা দেশে লাগানো গাছগুলো কেটে ফেলার কারণে পরিবেশের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে। যা বন্ধ না হলে বাংলাদেশে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে ও মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এইচআরপিবির পক্ষে রিট পিটিশনার হলেন- আইনজীবী মো: ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, মো: এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া এবং রিপন বাড়ৈই।
বিবাদিরা হলেন- সচিব কেবিনেট বিভাগ; মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়; সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়; সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়; সিনিয়র সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়; সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ; ডিরেক্টর জেনারেল পরিবেশ বিভাগ; মেয়র, ঢাকা উত্তর দক্ষিণ সিটি করপোরেশন; প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ঢাকা উত্তর দক্ষিণ সিটি করপোরেশন; প্রধান প্রকৌশলী, এলজিইডি, প্রধান বন সংরক্ষক; প্রধান প্রকৌশলী, সড়ক মহাসড়ক বিভাগ ও আইজিপি বাংলাদেশ পুলিশ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা