১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি

হতাহতদের স্বজনের কান্না আজো থামেনি

-

গতকাল ছিল সাভারের ‘রানা প্লাজা’ ট্র্যাজেডি দিবস। ২০১৩ সালের এই দিনে সাভারে ধসে পড়েছিল রানা প্লাজা নামের ৯তলা ভবনটি। এর মধ্যে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার প্রায় ২০ জন শ্রমিক হতাহত হন। এখনো নিখোঁজ আছেন কয়েকজন। ১১ বছর আগের হৃদয়বিদারক এই ঘটনায় আজো কান্না-আতঙ্ক থামেনি ওইসব পরিবারের স্বজনদের। সম্প্রতি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে শোনা গেল হতাহত ও নিখোঁজ স্বজনদের দুঃখ-বেদনার এক শোকগাঁথা গল্প। বেদনাবিধুর স্মৃতিতে হাউমাউ কের কেদে ওঠেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দামোদরপুর ইউনিয়নের মধ্য ভাঙ্গামোড় গ্রামের ওয়াহেদ আলী ও মনজিলা বেগম দম্পতির ছেলে পোশাক শ্রমিক সবুজ মিয়া (২০) রানা প্লাজা ধসে নিহত হন। এ ছাড়া এই পরিবারের নিখোঁজ রয়েছেন আব্দুল বারি ও আনজুয়ারা দম্পতির মেয়ে বিথি খাতুন (২০)। নিখোঁজের ১১ বছরেও তাকে খুঁজে পাইনি স্বজনরা। আর বিথির ছোট বোন ফাইমা খাতুন (১৮) ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়লেও উদ্ধার কর্মীদের। আজো বিথির সন্ধানে ছবি বুকে নিয়ে অঝড়ে কাঁদছেন আনজুয়ারা বেগম। এ ঘটনার ১১ বছর অতিবাহিত হলেও আজো কান্না থামেনি ছেলে হারা মা মনজিলা বেগমের। ছেলে হারা শোকে বাকরুদ্ধ অবস্থা তার। ওই ইউনিয়নের কিশামত দশলিয়া গ্রামের ভূমিহীন পঞ্চনন বাবুর মেয়ে স্মৃতি রানী (২০) নিজে জায়গা জমি কিনে ঘরবাড়ি করবেন, এমন স্বপ্নে পাড়ি দিয়েছিলেন ঢাকার সভারে। কিন্তু সেখানকার রানা প্লাজা ধসে প্রাণ হারিয়েছে তিনি। চোখেমুখে চরম হতাশার ছাপ নিয়ে এ তথ্য জানালেন তার মা সন্ধ্যা রানী। তিনি জানান, ইচ্ছে ছিল মেয়ের বেতনের টাকা জমিয়ে কয়েক শতক জায়গা কিনে ঘরবাড়ি করবে। কিন্তু সেই ইচ্ছেটুকু পূরণ হওয়ার আগেই স্মৃতি রানীকে প্রাণ দিতে হয়েছে রানা প্লাজা ভবনে। ফলে মেয়েটি হারানোর শোক নিয়ে এখনো অন্যের জমিতে বসবাস করতে হচ্ছে।

রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত উদ্ধার হয়েছিলেন সাদুল্লাপুর উপজেলার বাসিন্দা জিয়াউর রহমান ও মনিফা বেগম দম্পতি। সেই ভয়বহ দুর্ঘটনার আতঙ্ক এখনো কাটেনি তাদের। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকাল পৌনে ৯টার দিকে রানা প্লাজা ধসে পড়ার ঘটনা ঘটে। সেইদিন এ ঘটনায় কেউ হারিয়েছেন তার মাকে, কেউ তার বাবা, কেউ তার ভাই, কেউ বোন, কেউ তার স্ত্রী, কেউ আবার স্বামীকে। আর ইট-কংক্রিটের ধ্বংস্তূপের চিপায় আটকা পড়ছিলেন হাজার হাজার শ্রমিক। তাদের মধ্যে জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রী মনিফা বেগমও ছিলেন। ইট- খোয়ার আঘাতে মাথা ফেটে যায় জিউয়ার রহমানের। এ সময় ভবন ধসে পড়া ছাদের ফাঁকে কোনো মতে শুয়ে ছিলেন তারা। সেখানে বসে থাকার সুযোগ ছিল না। যেন বুকের ওপরে লেগে রয়েছে ছাদটি। সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এক অন্ধকার অবস্থায় শুয়ে থাকতে হয়েছে তাদের। এরই মধ্যে উদ্ধারকর্মী দলের আওয়াজ শুনতে পান। তাদের কথামতে শুয়ে শুয়ে এগোতে থাকে জিউয়ার ও মনিফা। এরপর একটা ফাঁকা যায়গার ভেতর দিয়ে হাত উঠিয়ে দেয়া হয়। এর মধ্যে উদ্ধারকর্মীরা তাদের টেনে উপরে উঠায়। এভাবে প্রাণে বেঁচে যায় আহত দম্পতি জিয়াউর ও মনিফা।
অপর দিকে ওই ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন কিশামত দশলিয়া গ্রামের দিনমজুর সোনা মিয়ার স্ত্রী কামনা বেগম (২৫)। নিখোঁজের ১১ বছরেও তাকে খুঁজে পায়নি তার একমাত্র ছেলে কামরুল ইসলাম। এখন মা হারা হয়ে অতিকষ্টে বড় হচ্ছে দাদীর কোলে। আর এই কামনাকে হারানোর শোকে বৃদ্ধা মা মফিজান বেগমের এখনো নির্ঘুম রাত কাটে।
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুরের দামোদরপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম জানান, রানা প্লাজা ভবন ধসের ঘটনায় এ এলাকায় প্রায় ২০ জন শ্রমিক হতাহত এবং আরো কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছে। পরিষদের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করা হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement
ইনসাফভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চায় জামায়াত : রেজাউল করিম টি-টোয়েন্টি সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাতে চান সৌম্য ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংকটে দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানে সমর্থন ইতালির আবাহনীকে হারিয়ে শীর্ষে মোহামেডান ভারতকে ‘অসহযোগী’ দেশ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন : ডিএমপিতে ২ দিনে ১৭৯৯ মামলা কোরআনের সমাজ প্রতিষ্ঠায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি : নূরুল ইসলাম বুলবুল বিআরটি করিডোরে বিআরটিসির এসি বাস সার্ভিস চালু হচ্ছে রোববার বাংলাদেশে বিজেপির হিন্দুত্ববাদের বিকাশ ঘটছে! আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরে আমির দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাই একসাথে কাজ করব : আব্দুল হালিম

সকল