ছাত্ররাজনীতির ধরন পাল্টাতে হবে
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
ডাকসুর সাবেক ভিপি ও সংসদ সদস্য আখতারউজ্জামান বলেছেন, ছাত্ররাজনীতি মানে শুধু কয়েকটি স্লোগান নয়। ছাত্ররাজনীতির ধরন পাল্টাতে হবে। বর্তমান ছাত্রদের রাজনীতির লক্ষ্য হওয়া উচিত চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রস্তুতির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে বিশ্ব প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়া।
গতকাল রাজধানীর বিএফডিসিতে বুয়েটের চলমান অস্থিরতা নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
আখতারউজ্জামান বলেন, বুয়েট অধ্যাদেশ ও নীতিমালা কী হবে তা নির্ধারণ করার অধিকার বুয়েট কর্তৃপক্ষের রয়েছে। বুয়েটের ছাত্ররা ক্লাস করবে, পরীক্ষা দেবে, যখন রাজনীতির প্রয়োজন হবে তখন রাজনীতিতে অংশ নেবে, এমন পরিবেশই প্রয়োজন। বুয়েটের ছাত্র সংসদ সবসময় তাদের মতো করেই হয়, সেটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো নয়। বর্তমান সমস্যার সমাধান ছাত্রশিক্ষকসহ সব পক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে হওয়া উচিত। গত ৫ বছরে রাজনীতিমুক্ত বুয়েটে অনেক সফলতা যেমন রয়েছে তেমনি অতীতে রাজনীতি চলমান রেখেও বুয়েটের শিক্ষার্থীরা দেশে ও বিদেশে কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছে। আমরা ছাত্র সংসদ চাই, কিন্তু মারামারি হানাহানির ছাত্র সংসদ চাই না।
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির পর হলের সিট প্রদানের প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে দলীয় কর্মী হিসেবে মিছিল মিটিংয়ে তিনি বলেন, অংশগ্রহণে বাধ্য করা খারাপ দৃষ্টান্ত। বর্তমান ছাত্ররাজনীতির ধারা কী হবে এ বিষয়ে জাতীয় সংসদও অবদান রাখতে পারে বলে।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, আদালতের আদেশে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি থাকবে, নাকি বুয়েট কর্তৃপক্ষ সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতকে আদালতে তুলে ধরবেন তা বুঝতে আরো কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে বুয়েট কর্তৃপক্ষ সেখানে ছাত্র রাজনীতি থাকবে কি থাকবে না তা আদালতে তুলে ধরার শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভোটের আয়োজন করতে পারেন। ওই ভোটের ফলাফল আদালতে তুলে ধরা হলে আমরা আশা করি বুয়েটের চলমান সঙ্কটের একটি সমাধান বেরিয়ে আসবে। তবে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে লেজুড়ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতির পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব বিকাশে ও ন্যায্য দাবি-দাওয়া আদায়ে বুয়েটে অরাজনৈতিক স্টুডেন্ট কেবিনেট গঠন করা যেতে পারে।
এ সময় তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে ১০ দফা সুপারিশ করেন। সেগুলো হলো ১. উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে ছাত্র রাজনীতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি থাকবে কি থাকবে না সে বিষয়ে ভোটাভুটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মতামত আদালতের কাছে তুলে ধরা। ২. শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের হাতিয়ার না বানানো। ৩. লেজুড়ভিত্তিক ছাত্র সংগঠন বা দলীয় পরিচয়ের পরিবর্তে ব্যক্তি পর্যায়ে অংশগ্রহণের মাধ্যমে স্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচন করা। ৪. বিগত সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাসে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, যৌন হয়রানি, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিচার দ্রুততম সময়ে করার লক্ষ্যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা। ৫. বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সাদা, নীল, বগুনী ইত্যাদি নামকরণের মাধ্যমে শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করা। ৬. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র্যাগিং, টর্চার সেল, হল দখল, সিট দখল, আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস দমনে কর্তৃপক্ষকে কঠোর হওয়া। ৭. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মতাদর্শের শিক্ষার্থীদের হলে সহাবস্থান নিশ্চিত কর। ৮. শিক্ষক নিয়োগে রাজনৈতিক বিবেচনার পরিবর্তে যোগ্যমেধাবীদের সুযোগ তৈরি করে দেয়া। ৯. আসন্ন বাজেটে উচ্চা শিক্ষা প্রদানকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য গবেষণা, বৃত্তি ও কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিজের জন্য বরাদ্দ বাড়ানো। ১০. উচ্চশিক্ষার মান বৃদ্ধিতে ইংরেজি ভাষার ওপর দক্ষতা বাড়াতে হবে।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে ‘ছাত্র রাজনীতি শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের সহায়ক’ শীর্ষক ছায়া সংসদে স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বিতার্কিকদের পরাজিত করে প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটি বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়।
প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মল্লিক, মাহবুব কবির চপল ও শামীমা সুলতানা। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেয়া হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা