১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

সারাহর কিডনি কাউকেই বাঁচাতে পারল না

মারা গেলেন শামীমাও
-

ব্রেইনডেথ ঘোষিত সারাহ ইসলামের দুই কিডনি-গ্রহীতার কেউ আর বেঁচে নেই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) গত বছরের ১৯ জানুয়ারি সারাহ ইসলামের দুই কিডনি দুই গ্রহীতার দেহে প্রতিস্থাপন করে দেয়া হয়। সারাহর সেই কিডনি নিয়ে বেঁচে থাকা সর্বশেষ শামীমা আক্তারও গত মঙ্গলবার রাতে মারা গেলেন। তিনি এই হাসপাতালেই চিকিৎসারত ছিলেন। অপর কিডনি-গ্রহীতা হাসিনা আক্তার এর আগেই মারা যান। হাসিনা কিডনি প্রতিস্থাপনের আট মাসের মাথায় মারা যান। তার কিডনিটি সারাহ ইসলামের লাশ থেকে নিয়ে মিরপুরের কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। এর আগে দেশে মৃত ঘোষিত কোনো ব্যক্তির কিডনি কোনো গ্রহীতার দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়নি। উল্লেখ্য, বিরল রোগে আক্রান্ত সারাহ ইসলামের দু’টি কিডনিতেই জটিলতা ছিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সে কারণে তার কিডনি-গ্রহীতার দু’জনের দেহ গ্রহণ করতে পারেনি। সংক্রমণ শুরু হয় কিডনি প্রতিস্থাপনের কিছু দিন পর থেকেই।

শামীমা আক্তারের মারা যাওয়ার খবরটি সংবাদমাধ্যমকে প্রথমে বিএসএমএমইউ’র কিডনি প্রতিস্থাপন সার্জন অধ্যাপক হাবিবুর রহমান দুলাল নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘কিডনি-গ্রহীতা হাসিনা আক্তার ফুসফুসের সংক্রমণে মারা গেছেন। এবার দ্বিতীয় গ্রহীতা শামীমা আক্তারও চলে গেলেন একই সমস্যায়।’ অধ্যাপক হাবিবুর রহমান বলেন, শেষ ছয় মাস আমাদের আওতার বাইরে ছিলেন শামীমা। সম্প্রতি তার ভাই জানিয়েছিলেন, শামীমার ক্রিটিনিন বেড়ে খাওয়ায় তিনি শুকিয়ে গেছেন। তিন সপ্তাহ বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে শুরুর দিকে তার শরীরের কিছুটা উন্নতি দেখা দেয়; কিন্তু তার (শামীমা) শুকিয়ে যাওয়া থামাতে পারছিলেন না চিকিৎসকরা। ক্রিটিনিন পুনরায় বাড়ায় ওয়ার্ড থেকে তাকে কেবিনে আনার পর আবারো অবস্থার অবনতি হওয়ায় চার দিন আগে আইসিইউতে নেয়া হয়েছিল।
মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে ডা: হাবিবুর রহমান জানান, শামীমার রক্তে সি ভাইরাস ও বিরল নিউমোনিয়া ধরা পড়েছিল। সে অনুযায়ী ডায়ালাইসিসও শুরু করা হয়। বাইরের হাসপাতালেও এক দিন নেয়া হয়েছিল। অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় আবারো বিএসএমএমইউ’র আইসিইউতে নেয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
তিনি বলেন, কোনো রোগীর হেপাটাইটিস সি পজিটিভ হলে রক্ত কাজ করে না। এ জন্য বিশেষ রক্ত লাগে, সেটিও দেয়া হয়েছিল; কিন্তু শেষ মুহূর্তে আর শরীর সাড়া দেয়নি। তিনি বলেন, বাড়িতে থাকার সময় অবস্থা খারাপ হলেও সময়মতো আমাদের জানানো হয়নি। শামীমার বাড়ি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায়। সেখানেই তাকে দাফন করা হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল