সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচন নিয়ে পাল্টাপাল্টি তফসিল ঘোষণা
আদালত অঙ্গন উত্তপ্ত হওয়ার শঙ্কা- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১:১৫
আইনজীবীদের শীর্ষ সংগঠন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের নির্বাচন নিয়ে পাল্টাপাল্টি তফসিল ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাডহক কমিটি। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৬ ও ৭ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট বার সম্পাদক আবদুন নূর দুলাল এবং অ্যাডহক কমিটির সদস্যসচিব শাহ আহমেদ বাদল স্বাক্ষরিত নির্বাচনের পৃথক নোটিশে দু’টি তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।
এ দিকে অ্যাডহক কমিটি ও সুপ্রিম কোর্ট বারের পাল্টাপাল্টি তফসিল ঘোষণা নিয়ে আইনজীবীদের নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে। গত বছর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে সরকার সমর্থক ও বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের মুখোমুখি অবস্থান ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনায় আদালত অঙ্গন উত্তপ্ত হয় এবং নির্বাচনের প্রথম দিন সুপ্রিম কোর্ট বারে পুলিশ প্রবেশ করে আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর লাঠিচার্জ করে। এবারো যাতে সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য একটি দক্ষ, নিরপেক্ষ এবং শক্ত নির্বাচন সাব কমিটি চান আইনজীবীরা। একই সাথে সুপ্রিম কোর্ট বারকে রাজনীতির বাইরে রাখতে হবে বলে তারা মনে করেন।
এ বিষয়ে এবারের নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী হতে ইচ্ছুক সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান বলেন, প্রকৃত অর্থে গত বছর নির্বাচন হয়নি। নির্বাচনের নামে একটা নির্বাচন করে নিয়েছে। কিন্তু নির্বাচন হয়নি। এটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়নি। তিনি বলেন, এই নির্বাচন হওয়ার জন্য একটি দক্ষ, নিরপেক্ষ এবং শক্ত নির্বাচন সাব কমিটি করতে হবে। নির্বাচন সাব কমিটিকে সর্বোতভাবে সহায়তা করতে হবে। তিনি বলেন, সুপ্রিমকোর্ট বারকে এখানে রাজনীতির বাইরে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, এর আগে সাবেক বিচারপতি মো: মনসুরুল হক চৌধুরী প্রধান বিচারপতি ও অন্য বিচারপতিদের অনুরোধে নির্বাচন উপকমিটির আহ্বায়ক হতে রাজি হন। কিন্তু তিনি ঠিকমতো নির্বাচন করতে যে কাজটি করার দরকার তা তিনি করতে পারেননি। এ কারণে তিনি পদত্যাগ করেন এবং অপমাণিত হয়ে রিজাইন করেছেন। সবাই সেটা জানে।
দুই পক্ষে নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী ১২ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া যাবে। ২২ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টায় মনোনয়নপত্র বাছাই এবং ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টার মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ঘোষণা করা হয়।
কার্যকরী কমিটির সভাপতি পদে একটি, সহসভাপতি পদে দু’টি, সম্পাদক পদে একটি, কোষাধ্যক্ষ পদে একটি, সহসম্পাদক পদে দু’টি এবং কার্যকরী কমিটির সদস্য পদে সাতটি পদসহ সর্বমোট ১৪টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে গত সমিতির ২০২৩-২৪ সেশনের নির্বাচন নিয়েও পাল্টাপাল্টি নির্বাচন উপকমিটি ঘোষণা করেছে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরা। তখন সমিতির কার্যকরী কমিটির সিনিয়র সহসম্পাদক (বিএনপি সমর্থিত) মাহফুজ বিন ইউসুফ আইনজীবী ড. এ জেড এম ফরিদুজ্জামান ফরহাদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের উপকমিটি ঘোষণা করেন।
সমিতির সম্পাদক (আওয়ামী লীগ সমর্থিত) আবদুন নূর দুলাল আইনজীবী শাহ খসরুজ্জামানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের উপকমিটি ঘোষণা দেন। তখন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের মুখোমুখি স্লোগানে উত্তপ্ত হয় আদালত অঙ্গন।
আওয়ামী ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আলাদা নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটির ঘোষণা করে পাল্টাপাল্টি তফসিল ঘোষণা করে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা বিবদমান দুই পক্ষকে নিয়ে গত বছরের ২ মার্চ বৈঠকে বসেন। সেই বৈঠক থেকেই সুপ্রিম কোর্টর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরীকে প্রধান করে উপকমিটি ঘোষণা করা হয়। তবে সমিতির কার্যকরী কমিটির নির্বাচনের আগের দিন অসহযোগিতার অভিযোগে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান মো: মনসুরুল হক চৌধুরীর আকস্মিকভাবে পদত্যাগ করেন।
এরপর গত বছরের ১৫ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের প্রথম দিনে সারা দিনব্যাপী বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতি, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, সংঘর্ষ, ভোটকেন্দ্র ও আইনজীবীদের কক্ষ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশের লাঠিচার্জ ও মারধরের শিকার হন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক ও আইনজীবী।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা