হাওয়া ছবির বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ
- সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক
- ০৪ আগস্ট ২০২২, ০০:০০
মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত ‘হাওয়া’ ছবির বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। পরিবেশবিদরা বলছেন, ছবিটিতে আইন ভেঙে খাঁচায় বন্যপ্রাণী প্রদর্শন ও হত্যার দৃশ্য রয়েছে, যা সংশ্লিষ্ট আইনের লঙ্ঘন। এ নিয়ে ছবিটির বিরুদ্ধে আইনি জটিলতায় পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ছবির একাধিক দর্শক জানান, ছবিটির একটি দৃশ্যে একটি পাখি হত্যা করে চিবিয়ে খেয়েছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। দৃশ্যের বিবরণ দিতে গিয়ে তারা বলেন, মাছ ধরা বোট নয়নতারার সরদার চান মাঝি একটা পাখি পোষে। এক সময় সমুদ্রে পথ হারিয়ে চান মাঝি এই শালিককে উড়িয়ে দেয়। কিন্তু পাখিটি কিছুদূর দিয়ে আবার ফিরে আসে। এরপর ছবির চানমাঝি পাখিটিকে হত্যা করে পুড়িয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে পাখিটির হাড়মাংস খান। ছবিটির এমন দৃশ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনেকে এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থারও দাবি জানান।
পরিবেশবিদরা বলছেন, এমন দৃশ্য বন্যপ্রাণী আইনের সরাসরি লঙ্ঘন। এরই মধ্যে এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক মো: ছানাউল্যা পাটওয়ারী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও দর্শকদের রিভিউ থেকে তারা জানতে পেরেছেন হাওয়া চলচ্চিত্রে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ লঙ্ঘন করা হয়েছে। তাই ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে তারা তদন্ত শুরু করেছেন। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইন অনুযায়ী পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে। এ দিকে হাওয়া ছবিতে কোরীয় ছবি নকলের অভিযোগ উঠেছে। অনেকে বলেছেন, কোরিও ‘সি ফগ’র সাথে ‘হাওয়া’র মিল আছে। ২০১৪ সালে মুক্তি পেয়েছিল কোরিয়ান ভাষার ছবি ‘সি ফগ’। নির্মাণ করেছিলেন সাং বু শিম। ছবির কাহিনীতে দেখানো হয়, চীন থেকে কোরিয়াতে অবৈধ মানবপাচারের জন্য ভাড়া করা হয় মাছ ধরার নৌকা। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়াসহ নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে সেই নৌকা। তবে ‘সি ফগ’ নকল করে ‘হাওয়া’ নির্মাণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, যারা নকল বলছেন তাদের প্রতি আমার আহ্বান, তারা দুটি সিনেমা পাশাপাশি রেখে দেখুক।’ তার পর এরকম দাবি তুলুন। আমি আগে থেকেই জোর গলায় বলে আসছি এটা এ অঞ্চলের গল্প। এখনো বলব এটা আমাদের ছবি।
তিনি আরো বলেন, ছবি দু’টির শুটিং সাগরে হয়েছে বলে অনেকে হয়ত এরকম ভাবছেন। তাদের ধারণা ভুল। সাগরে দৃশ্যধারণ করা হলেই তো আর সিনেমা এক হয় না। পৃথিবীতে সমুদ্রের গল্পে নির্মিত অসংখ্য চলচ্চিত্র আছে। আর যে সিনেমাটির কথা বলা হচ্ছে সেটা মানবপাচারের গল্পে নির্মিত হয়েছে। আমার সিনেমার সাথে ওই ছবিটির কোনো মিল নেই। এটা খুবই হাস্যকর। এ দিকে দেশের পর বিদেশে মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি। আগামী ১৩ আগস্ট ‘হাওয়া’ মুক্তি পাবে অস্ট্রেলিয়ায়। এ ছাড়া ২ সেপ্টেম্বর মুক্তি পাবে আমেরিকা ও কানাডায়। সিনেমাটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সান মিউজিক অ্যান্ড মোশন পিকচার্স লিমিটেড এই তথ্য জানিয়েছে । দেশের ২৪টি হলে মুক্তি পেয়েছে ‘হাওয়া’। ছবিটি স্টার সিনেপ্লেক্সের পাঁচটি শাখায় প্রতিদিন চলছে ২৬ শো, যা সাম্প্রতিক সময়ের বাংলা সিনেমার ক্ষেত্রে রেকর্ড বলছে স্টার কর্তৃপক্ষ। রাজধানীর ব্লকবাস্টার সিনেমাতে ‘হাওয়া’র দৈনিক ১৩টি শো থাকছে। তারকাবহুল এ সিনেমায় অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুষি, শরিফুল রাজ, সুমন আনোয়ার, নাসির উদ্দিন খান, সোহেল মণ্ডল, রিজভী রিজু, মাহমুদ হাসান ও বাবলু বোস।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা