২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণে ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি

-

উপকূলীয় সুরক্ষায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণে ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ, জনপ্রতিনিধি ও নাগরিক সমাজ। গতকাল শনিবার ‘বাজেট ২০২১-২২ উপকূলীয় সুরক্ষা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ দাবি করেন।
ভার্চুয়াল এ সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে কোস্ট ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর সাসটেইনেবল রুরাল লাইভলিহুড (সিএসআরএল), সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি) এবং কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট অ্যাকশান নেটওয়ার্ক (ক্লিন)। কোস্ট ফাউন্ডেশনের রেজাউল করিম চৌধুরী সিএসআরএলের জিয়াউল হক মুক্তার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেনÑ নারায়ণ চন্দ্র এমপি (খুলনা-৫), মীর মোশতাক আহমেদ রবি এমপি (সাতক্ষীরা-২), নুরুন্নবী চৌধুরী এমপি (ভোলা-৩), নাহিম রাজ্জাক এমপি (শরীয়তপুর -৩), আশেক উল্লাহ রফিক এমপি (কক্সবাজার-২), শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি (গাইবান্ধা -২), জাফর আলম এমপি (কক্সবাজার-২), পানি বিশেষজ্ঞ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা: আইনুন নিশাত, সিপিআরডির মো: শামসুদ্দোহা এবং ক্লিন-খুলনার হাসান মেহেদী। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের সৈয়দ আমিনুল হক।
সৈয়দ আমিনুল হক উল্লেখ করেন, প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড়সহ অন্যান্য দুর্যোগ উপকূলীয় এলাকার জীবিকার কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং দরিদ্র লোকেরা সবচেয়ে ঝুঁকি থাকা উপকূলবর্তী অঞ্চলে বসবাস করায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এরপরেও বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য সরকারের বাজেট বরাদ্দ গতানুতিক এবং সঙ্কট মোকাবেলায় অপর্যাপ্ত। তিনি বাঁধ নির্মাণে প্রতি বছর কমপক্ষে ১২-১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখাসহ তিনটি সুনির্দিষ্ট দাবি উপস্থাপন করেন।
সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি বলেন, একটি জাতীয় ঝুঁকি মূল্যায়ন প্রয়োজন, যা সরকারকে উপযুক্ত বাজেট বরাদ্দের দিকনির্দেশনা দিতে পারে। বেড়িবাঁধ উন্নয়ন নীতিমালা তৈরির পাশাপাশি আমরা এই বিষয়ে একটি রোডম্যাপের জন্য কাজ করছি। এটি সত্য উপকূলীয় সুরক্ষা ব্যতীত উন্নত বাংলাদেশের কল্পনা করা অসম্ভব, তাই উপকূলের সমস্যাকে কোনো অঞ্চলের আলাদা কোনো সমস্যা হিসেবে বিবেচনা না করে এটিকে জাতীয় সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।
ডা: আইনুন নিশাত বলেন, বাজেট বরাদ্দ করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্টতা যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে, বাঁধবিষয়ক পরিকল্পনায় এই পরিস্থিতি অনুপস্থিত। ‘ডেল্টা প্ল্যান’-এর আওতাধীন প্রকল্পগুলো পরবর্তী পঞ্চাশ বছরের দুর্যোগ পূর্বাভাসকে বিবেচনা না করেই গ্রহণ করা হয়েছে।
মীর মোশতাক আহমেদ রবি এমপি বলেন, উপকূলীয় সুরক্ষায় বিনিয়োগ করলে সেটি জাতীয় অর্থনীতিতে দ্বিগুণ ফেরত দিতে পারে। আমরা স্থায়ী সমাধানের দাবি জানাচ্ছি। নীতিমালায় উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জন্য বিকল্প আয় তৈরিতে সক্ষম শিক্ষাবিস্তারকেও অন্তর্ভুক্ত রাখতে হবে। রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, উপকূলীয় সুরক্ষা ব্যবস্থার জন্য দীর্ঘমেয়াদি সমন্বিত এবং দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাসের জন্য পরিবেশবান্ধব নীতিমালা তৈরি করতে হবে। জিয়াউল হক মুক্তা বলেন, দুর্যোগের প্রভাবের ওপর ভিত্তি করে বাঁধগুলোর একটি মূল্যায়ন হতে হবে এবং সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে প্রতিবেশগত বিষয়গুলো বিবেচনা করেই উদ্যোগ নিতে হবে।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement