২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
এসডিজির এক-তৃতীয়াংশ সময় শেষ

অনেক সূচকে পিছিয়ে দেশ

-

টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জনের এক-তৃতীয়াংশ সময় বিদায়। অথচ উপাত্তে বড় ধরনের ঘাটতি ও দুষ্প্রাপ্যতা এখনো বিদ্যমান। আর এ কারণে সব সূচকের একই ভিত্তিবছর নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি আজো। সঠিক উপাত্তের সঙ্কটে বাংলাদেশ। অন্য দিকে মন্ত্রণালয়গুলোর হালনাগাদ তথ্য নেই বলে জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ। আর এসডিজি অর্জনের বিষয়ে দ্বিতীয় অগ্রগতি প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, কৃষিমুখীতাসহ বেশকিছু সূচকে পিছিয়ে রয়েছে দেশ। বিশেষ করে বাল্যবিবাহ রোধ, ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের নিয়োগ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অনেক বিষয়েই পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। আগারগাঁওস্থ পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে গত বৃহস্পতিবার ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট : বাংলাদেশ অগ্রগতি প্রতিবেদন ২০২০’ শীর্ষক এ প্রতিবেদনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও গণমাধ্যমকে অবহিত করা হয়। জিইডির সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলমের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় অবহিতকরণ ও মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ, পরিকল্পনা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব আসাদুল ইসলাম এবং পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। সম্মানিত অতিথি ছিলেন ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি।
প্রতিবেদনটি বিশ্লেষণ করে জানা যায়, কৃষিমুখীতা বা এওআই সূচকের মান যদি ১-এর অধিক হয়, তাহলে বুঝতে হবে সরকার অর্থনীতিতে কৃষির অবদানের তুলনায় এ খাতে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। আর যদি সূচকের মান ১-এর নিচে হয়, তাহলে ধরে নেয়া হয় অর্থনীতির অন্যান্য খাত সরকারের কাছে কৃষির চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।
কৃষিমুখীতা সূচকে ২০০১ সালে বাংলাদেশে প্রাপ্ত মান ছিল শূন্য দশমিক ০.২। ২০১৬ সালে এ মান দ্বিগুণ হয়। তবে ২০১১ সালের পর থেকে এটা বর্তমানে সর্বনি¤েœ অবস্থান করছে। এ চিত্র নির্দেশ করে জিডিপিতে অবদানের ক্ষেত্রে অর্থনীতির অন্যান্য খাতের তুলনায় সরকারি বিনিয়োগ প্রাপ্তিতে কৃষি কম গুরুত্ব পাচ্ছে। অর্থাৎ, বাজেট বরাদ্দ পাওয়ার ক্ষেত্রে কৃষিবহির্ভূত খাত বেশি অগ্রাধিকার পাচ্ছে।
বৈষম্যের বিষয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সামষ্টিক অন্তর্ভুক্তি ও সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান আয়বৈষম্য প্রধান অন্তরায়। আয়বৈষম্য কমাতে সরকারের নীতিকাঠামোয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এসব পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো উন্নয়নের সুফল মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া ও বণ্টনব্যবস্থার জন্য সহায়ক আর্থিক (ফিসক্যাল) নীতি গ্রহণ, যাতে একটি প্রগতিশীল ব্যক্তিগত আয়কর পদ্ধতি চালুর মাধ্যমে দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জীবনচক্রভিত্তিক রোজগার নিশ্চিত করা যায়।
অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপনায় ড. শামসুল আলম জানান, নেদারল্যান্ডস মাত্র ৪৮ হাজার বর্গকিলোমিটারের একটি দেশ। কৃষিখাত থেকে ৯৬ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয় অর্জন করে দেশটি। কৃষিতে বাংলাদেশের যে সম্ভাবনা রয়েছে, তা কাজে লাগাতে পারলে এ খাত থেকে বাংলাদেশেরও ব্যাপক পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু সেক্ষেত্রে কৃষির ব্যাপকহারে বাণিজ্যিকীকরণ প্রয়োজন। তিনি বলেন, ১৬৫টি সূচকের ক্ষেত্রে উপাত্তের ভিত্তিবছর নির্ধারণ করা সম্ভব হয়েছে। তবে এগুলোর মধ্যে ১৪২টি সূচকের ক্ষেত্রে পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়গুলোর কাছে এর হালনাগাদ তথ্য নেই। এখানে প্রস্তাবিত সূচক হলো ২৩২টি।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, এসডিজির অগ্রগতি পরিমাপের ক্ষেত্রে অনেক সূচকের জন্য প্রয়োজনীয় উপাত্তের ঘাটতি রয়েছে। এ ঘাটতির কথা আর শুনতে চাই না। উপাত্ত প্রস্তুত করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে (বিবিএস) এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ সরকারের সমন্বিত আনুষ্ঠানিক উপাত্ত প্রণয়নের জন্য তারা আইনত দায়বদ্ধ।
নারী উন্নয়নের বিষয়ে তিনি উষ্মা প্রকাশ করে তিনি বলেন, একটি পীড়াদায়ক বিষয় হলো এখনো দেশে বাল্যবিবাহের ব্যাপকতা বিরাজমান। এটি যেকোনো মূল্যে কমিয়ে আনতে হবে। আর একটি বিষয় হলো শিশুদের জন্য এখনো পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়নি। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। শিশুদের নিরাপত্তা না থাকলে রাষ্ট্রের কোনো মানেই হয় না। এসব বিষয়ে অবশ্যই দ্রুত অগ্রগতি অর্জন করতে হবে।
সামাজিক বৈষম্যের বিষয়ে তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন, নারী শিক্ষার উন্নয়ন, স্বাস্থ্যখাতের নানা বিষয়ে অগ্রগতি সাধনের পাশাপাশি সামাজিক অনেক সূচকে বাংলাদেশ পার্শ্ববর্তী অনেক দেশের তুলনায় এগিয়ে থাকলেও এখানে আয়বৈষম্য উদ্বেজনকভাবে বাড়ছে। এ বিষয়টি অস্বীকার করার সুযোগ নেই। এ বৈষম্য দূর করতে কার্যকর পদক্ষেপ অত্যাবশ্যক।
করোনার কারণে অনেক বিষয়ই পরিবর্তিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদি এসডিজি অর্জন প্রক্রিয়ার কোনো বিষয়েও পরিবর্তন আনতে হয় তাহলে তা আনা হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় মূল্যায়ন শেষে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে।


আরো সংবাদ



premium cement
প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে বাংলাদেশ বছরে ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলার জলবায়ু অর্থায়নের দাবি বাংলাদেশ অরবিসের সাথে কাজ করতে আগ্রহী : অধ্যাপক ইউনূস ঢাবি সিন্ডিকেটে এখনো বহাল আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা হাসিনা বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করতে দিগন্ত টেলিভিশনসহ অসংখ্য গণমাধ্যম বন্ধ করেছে : ফখরুল শীত শুরু হচ্ছে তবু কমেনি ডেঙ্গুর প্রকোপ ব্যয়বহুল তদন্তেও শনাক্ত হয়নি লাশটি কার ‘রহস্যজনক’ কারণে নেয়া হয়নি ডিএনএ নমুনা নবনির্মিত ওয়ামি কমপ্লেক্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন যুদ্ধবিরতির মার্কিন চেষ্টার মধ্যে লেবাননে ইসরাইলি হামলায় চিকিৎসাকর্মী নিহত অস্বস্তিতে ক্রেতারা : কমিয়ে দিতে হচ্ছে কেনাকাটা গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৪৪ হাজার ছাড়াল

সকল