পঞ্চগড়ে চিতাবাঘ আতঙ্কে পরিত্যক্ত চা বাগান কেটে সাফ করা হচ্ছে
- পঞ্চগড় সংবাদদাতা
- ২২ আগস্ট ২০২০, ০১:৩৪
একটি পরিত্যক্ত বিশালাকার চা বাগানে তিনটি বাচ্চাসহ দু’টি চিতাবাঘ লুকিয়ে আছে এমন সন্দেহে ওই বাগান কেটে পরিষ্কার করার কাজ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে চা বাগান ও জঙ্গল কাটার নির্দেশ দেয়ার পর গতকাল শুক্রবার সকাল থেকেই চা বাগানের গাছ কাটার কাজ শুরু করা হয়। পঞ্চগড় জেলার সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের মুহুরীজোত এলাকার চা বাগান ও জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করার কাজ করছে বেশ কয়েকজন শ্রমিক।
সাতমেরা ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান খান জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আরিফ হোসেন ও তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহা এবং সদর থানার ওসি আবু আক্কাছ আহমেদ ও তেঁতুলিয়া থানার ওসি মো: জহুরুল ইসলামসহ বন বিভাগের লোকজন এসে ওই চা বাগান ও জঙ্গল কাটার নির্দেশনা দেন। তাদের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা বাগান কাটার কাজ শুরু করেছি। শুক্রবার সকাল থেকেই ইউপি সদস্য মিন্টু কামালের তদারকিতে ১৯ জন শ্রমিক দিয়ে বাগান কাটার কাজ শুরু করা হয়েছে। তবে চা বাগান ও জঙ্গলটি খুবই ঘন হওয়ায় কাটতে সময় লাগছে। তিনি আরো জানান, তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার ও তার সম্বন্ধী (স্ত্রীর বড় ভাই) রমজান আলীর সঙ্গে ওই চা বাগানের মালিকানা নিয়ে ৭-৮ বছর ধরে আদালতে মামলা চলমান আছে। এ কারণে চা বাগান থেকে পাতা উত্তোলন না হওয়াসহ বাগান পরিচর্যা না করায় চা বাগানটি জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। চা বাগানের দু’পক্ষের সম্মতিক্রমে প্রশাসনের নির্দেশে এটি কাটা হচ্ছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। বন বিভাগের পঞ্চগড় বিট কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ বলেন, বাঘ ধরার জন্য ঢাকা থেকে আসা দু’জন প্রশিক্ষিত বনকর্মীসহ আমরা এলাকাতেই অবস্থান করছি। স্থানীয়রা ধারণা করছেন বড় পরিত্যক্ত চা বাগানটি বাঘ লুকিয়ে রয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশে শুক্রবার সকাল থেকে ওই বাগানের গাছ ও জঙ্গল কাটার কাজ শুরু করা হয়েছে। তবে বিকেলে বৃষ্টির কারণে বাগান কাটার কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। শনিবার সকালে প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হবে।
উল্লেখ্য, পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেড়া ইউনিয়নের বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তসংলগ্ন মুহুরিজোত, সাহেবীজোত, উষাপাড়া ও বাদিয়াগছ এলাকার গ্রামবাসীরা বাঘের অস্তিত্ব টের পাচ্ছেন এক মাস ধরে। গত বুধবার বিকেলে উষাপাড়া গ্রামের আবুল কালাম ওই চা বাগানের পাশ দিয়ে গরু নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তার একটি গরুর ওপর আক্রমণ করে সেটিকে মেরে ফেলে একটি চিতাবাঘ। পরে তার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এলে পালিয়ে যায় বাঘটি। এরপর বাঘ আতঙ্ক আরো প্রকট আকার ধারণ করে। স্থানীয়রা এখন একা একা বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছেন। এখন রাতে শান্তিতে ঘুমাতেও পারছেন না তারা। প্রতিটি বাড়িতে বড় টর্চলাইট রাখা হয়েছে। বাঘ আতঙ্কে পালা করে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন গ্রামের মানুষ। তাদের ধারণা মুহুরিজোত গ্রামের শেষ প্রান্তের প্রায় চার একরের পরিচর্চাহীন জঙ্গলাকীর্ণ একটি চা বাগানে বাঘ লুকিয়ে থাকতে পারে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা