১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
একনেকে উঠছে কাল

ঢাকা-না’গঞ্জ লিংক রোড ৬ লেন হচ্ছে

-

বাণিজ্যিক নগরী নারায়ণগঞ্জে শহর থেকে বের হওয়ার মোট তিনটা সড়ক রয়েছে। এর একটি হলো ঢাকা নারায়ণগঞ্জ (পাগলা বাজার)পুরাতন সড়ক। নারায়ণগঞ্জ ডেমরা (আদমজী) সড়ক অন্যটি হলো ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড। মূলত ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড দিয়ে প্রতিদিন বেশি যানবাহন চলাচল করে। গার্মেন্ট, হোসিয়ারি সিমেন্ট, লবণসহ ১৯টি শিল্প পণ্য পরিবহন ছাড়াও যাত্রীবাহী বাস, পিকআপ মালাবাহী ট্রাক এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে। চাষাড়া থেকে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের সংযোগ সড়কের দূরত্ব সোয়া আট কিলোমিটার। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটির প্রস্থ খুবই ক্ষীণ। সড়কটি যে আয়তনের তার চেয়ে ৩০ গুণ বেশি যানবাহন চলাচল করে এ সড়কে। ফলে গুরুত্ব বিবেচনায় নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়কটি ছয় লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড ছয় লেনে উন্নীতকরণ নামে প্রকল্প হাতে নিয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। এতে খরচ ধরা হয়েছে ৪৪৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটির প্রস্তাব পাওয়ার পর ২০১৯ সালের ৮ জুলাই প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দেয়া সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়েছে। ফলে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) কাল মঙ্গলবার সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে। অনুমোদন পেলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর।
সূত্র জানায়, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ঢাকার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের দ্রুত, নিরাপদ, সময় ও ব্যয়সাশ্রয়ী সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এ ছাড়া প্রকল্প এলাকার জনগণের সার্বিক আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত সড়কটি একটি আঞ্চলিক মহাসড়ক যার দৈর্ঘ্য ৮.১৫ কিলোমিটার। এটি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়ক নামেও পরিচিত। সড়কটি নারায়ণগঞ্জ জেলা শহরকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। এই সড়কের পাশেই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, সিভিল সার্জন অফিস, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা কারাগার, গণপূর্ত অধিদফতর, পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ অফিস, বিজিবি-৬২, পিবিআই অফিস, পরিবেশ অধিদফতর, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, জেলা পরিষদ, যুব উন্নয়ন অধিদফতর,বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি- বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অবস্থিত।
এছাড়া সড়কের ছয় কিলোমিটারে রয়েছে খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম। এই স্টেডিয়ামটি আন্তর্জাতিকপর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক খেলা বিশেষ করে ক্রিকেট খেলার ভেনু হিসেবে সমাদৃত। ঢাকার পাশের এই অঞ্চলে সম্প্রতি অসংখ্য শিল্পকারখানা ও নতুন বসতি গড়ে উঠেছে। ফলে বিদ্যমান সড়কে যানবাহন সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে। নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির জন্য নারায়ণগঞ্জ সদর ও বন্দর উপজেলার একাংশ নিয়ে এর আগে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গত কয়েক বছরে নারায়ণগঞ্জ জেলা সদরে বেসরকারি হাসপাতাল, বেসরকারি ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানসহ বড় আকারের বেসরকারি আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠেছে।
এসব কারণে নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীত করার জন্য সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে ডিপিপি প্রণয়ন করে প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। ওই সভার সুপারিশ অনুযায়ীই ডিপিপি পুনর্গঠন করা হয়েছে।
প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে সড়কবাঁধ-পেভমেন্ট প্রশস্ত, বিদ্যমান পেভমেন্ট মজবুত করা, সার্ভিস সড়ক, হার্ড শোল্ডার, রিজিড পেভমেন্ট মজবুত-প্রশস্ত করা ও সার্ভিস লেন, কংক্রিট রোড ডিভাইডার, আরসিসি বক্স কালভার্ট সম্প্রসারণ, ফুটওভার ব্রিজ এবং ভূমি অধিগ্রহণ।
প্রকল্পটি অনুমোদন প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য শামীমা নার্গিস বলেন, এটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকার সাথে নারায়ণগঞ্জের নিরাপদ, সময় ও সাশ্রয়ী সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপিত হবে। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের যানজট নিরসনে ভূমিকা রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন এই কর্মকর্তা।


আরো সংবাদ



premium cement