আবরার হত্যার আসামির জেল পলায়ন : মধ্যরাতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
- ঢাবি প্রতিনিধি
- ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যাকারী ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমি কারাগারের কনডেম সেল থেকে পালানোর ঘটনায় গভীর রাতে উত্তাল হয়ে ওঠে বুয়েট ক্যাম্পাস। হত্যাকারী জেমির গ্রেফতার এবং ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা বুয়েটের শহীদ মিনার থেকে মিছিল বের করেন। মিছিলটি পলাশী মোড়, ভিসি চত্বর হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে পৌঁছায়। সেখানে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভকালে ‘ফাঁসির দড়ি ঝুলাই দে, সব খুনিদের গর্দানে’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনিদের ফাঁসি চাই’, ‘আবরার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেবো না’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘জুলাই/২৪ এর অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ক্ষমতা না জনতা, জনতা জনতা’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘জুলাই এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’ ইত্যাদি স্লোগান শোনা যায়।
সংবাদ সম্মেলনে বুয়েটের ১৯তম ব্যাচের দুই শিক্ষার্থী আবু ওবাইদা মায়াজ ও আরাফাত সাকিব লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তারা বলেন, ২৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমি ৫ আগস্টের পর থেকে পলাতক রয়েছে বলে জানানো হয়। তারা এটিকে শহীদ আবরার ফাহাদের সাথে প্রতারণা এবং বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার ইতিহাসে নিকৃষ্ট দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেন।
তারা আরো বলেন, ফাঁসির আসামিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কনডেম সেলে থাকা উচিত। কিন্তু এত শীর্ষ সন্ত্রাসীর পলায়ন ন্যক্কারজনক। এই পলায়ন শহীদ আবরার ফাহাদের রক্তের সাথে গাদ্দারি। তারা দাবি করেন, সরকার দ্রুত জেমিকে গ্রেফতার করে বিচারিক প্রক্রিয়ায় আনবে এবং তার পলায়নে সহায়তাকারী প্রত্যেককে শনাক্ত করে বিচার করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনের পর আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ বলেন, আজকে হাইকোর্টে শুনানির সময় জানতে পারলাম আমার ভাইয়ের খুনি জেমি পালিয়েছে। আমার ভাইয়ের খুনির পলায়নের জন্য রাষ্ট্র দায়ী। বর্তমান সরকার এই দায় এড়াতে পারবে না। সরকারের ঊর্ধ্বতনরা বিষয়টি জানতেন, তবে তা লুকিয়ে রেখেছিল। বিষয়টি রাষ্ট্রের জন্য লজ্জাজনক।
এর আগে সোমবার রাতে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে এক পোস্টে আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জেল থেকে পালিয়েছে বলে জানান ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ।
পোস্টে তিনি লেখেন, আবরার ফাহাদ হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জেমি জেলখানা থেকে পালিয়ে গেছে গত বছরের ৫ আগস্টের পরে। অথচ আমাদের জানানো হচ্ছে আজকে, যখন ওর আইনজীবী কোনো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে আসেনি তখন।
তিনি আরো লেখেন, ফাঁসির আসামি তো কনডেম সেলে থাকার কথা ছিল, সে পালায় কিভাবে! পালানোর পরও এ তথ্য বাইরে না আসাতে এটাই প্রমাণ করে, তাকে ধরতেও কোনো চেষ্টা করা হয়নি। পূর্ব থেকেই আরো তিনজন পলাতক আছে।