শেখ হাসিনা অত্যাচারী শাসকে পরিণত হয়েছিল : অধ্যাপক কাসেম
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

একুশের চেতনায় উজ্জীবিত হয়েই দেশের ছাত্র-জনতা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতন ঘটিয়েছে। আওয়ামী সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা নিজেকে একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী মনে করতেন। নির্বিচারে গুম খুনের নির্দেশদাতা হিসেবে জাতির কাছে তিনি অত্যাচারী শাসকে পরিণত হয়েছিলেন। বিচার বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রশাসনসহ সব প্রতিষ্ঠানই প্রধানমন্ত্রীর একক নির্দেশে পরিচালিত হতো। যার ফলে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট তার মর্যাদা হারিয়েছিল। দীর্ঘদিনের অপশাসন, অন্যায়, অত্যাচার ও দুনীর্তির কারণে তিনি রাষ্ট্র পরিচালনার যোগ্যতা হারিয়ে গণ-অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। টর্চার সেলে বহু মানুষকে বন্দী রেখে ঠাণ্ডা মাথায় নির্যাতন করা ছিল বিগত সরকারের একটি বড় অপরাধ। এ ধরনের অপরাধে দণ্ডিতদের বিচারে ফাঁসিও হতে পারে। দেশবাসী আশা করে বন্দিবিনিময় চুক্তির আওতায় ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।
গতকাল রোববার ঢাকার এফডিসিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ও একুশের চেতনা নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসি আয়োজিত ছায়া সংসদে বাংলা অ্যাকাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে যত মানুষ শহীদ হয়েছে তার চাইতে বহু মানুষ শহীদ হয়েছে জুলাই বিপ্লবে আওয়ামী সরকারের পুলিশ ও গুণ্ডাবাহিনীর গুলিতে। বাংলাদেশের ইতিহাসে দৃশ্যমানভাবে গুলি করে এরকম হত্যাকাণ্ড আর কখনো ঘটেনি। তাই জুলাই বিপ্লবসহ আওয়ামী শাসনামলে গত ১৫ বছরের সকল গুম, খুন, হত্যার বিচার যতদ্রুত করা যাবে ততই সাধারণ মানুষের আইনের শাসনের প্রতি আস্থা বাড়বে। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর দেশ এখন গণতন্ত্রের সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছে। দেশের এই সঙ্কটকালে ছাত্র-জনতাসহ বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোকে ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তা না হলে দেশী বিদেশী অপশক্তিগুলো অনৈক্যের সুযোগ নিয়ে জুলাই বিপ্লবে অর্জিত সুফলকে ব্যর্থ করার অপচেষ্টা করতে পারে। জুলাই বিপ্লবের শহীদদের রক্ত দান বৃথা যেতে দেয়া যাবে না। রাজনীতির মধ্যে আদর্শগত মতপার্থক্য থাকতে পারে। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু আদর্শগত মতপার্থক্য হানাহানির পর্যায়ে গেলে পতিত রাজনৈতিক গোষ্ঠী সুবিধা পাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসির আয়োজনে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে একুশের চেতনা বৃথা যায়নি’ শীর্ষক ছায়া সংসদে সেন্ট যোসেফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিতার্কিকদের পরাজিত করে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট গার্লস পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, অধ্যাপক ড. এ কে এম মাজহারুল ইসলাম, সাংবাদিক সাইদুল ইসলাম ও সাংবাদিক মাঈনুল আলম। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ও একুশের চেতনা নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে চ্যাম্পিয়ন দলের বিতার্কিকদের ট্রফি প্রদান করছেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক ও ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা