কেরানীগঞ্জে শতাধিক ব্যক্তির ২ হাজার একর জমি জবর দখল আ’লীগ নেতার
- ঢাকা জেলা প্রতিনিধ
- ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
সন্ত্রাসের জনপদ ঢাকার কেরানীগঞ্জে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহিন আহমেদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, আনোয়ার হোসেনের সোনার বাংলা আবাসন প্রকল্পে শতাধিক মানুষের প্রায় ২ হাজার একর জমি, বসতবাড়ি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দখলের কারণে অনেকে গ্রামছাড়া হয়েছেন। অনেকের বাড়ির চারপাশে ওয়াল দিয়ে ঢেকে রাখায় বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। তারা যেন স্বপ্নের নিজ বাড়িতে থেকেও জেলখানায় বন্দী আছেন।
গতকাল বেলা ১২টায় কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন মাঠে মানববন্ধনে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ভুক্তভোগী পরিবার ও সম্মিলিত সচেতন
নাগরিকের ব্যানারে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয় । এতে বক্তব্য রাখেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আল আমিন মিজি, কেরানীগঞ্জ দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সমন্বয়ক একেএম কাউসার আহমেদ, ভুক্তভোগী মোঃ আনিস, ফৌজিয়া বেগম, দেলোয়ার হোসেন ও কৃষক সুরজ মিয়া প্রমুখ।
কেরানীগঞ্জ দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সমন্বয়ক এ কে এম কাউসার আহমেদ জানান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিন আহমেদ তার ভগ্নিপতি মনিরুজ্জামানের উপজেলার সাকতা মৌজায় ১৯ শতাংশ জমি দখল করে নিয়েছে । যার বাজার মূল্য সাড়ে চার কোটি টাকা। কৃষক সুরুজ মিয়া জানায়, সোনাকান্দার মৌজায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের নামে শাহীন চেয়ারম্যান তার নিজের ১৪ পাখি জমি এবং তাদের এলাকার লিয়াকত আলির ১৩ পাখি, আশরাফ আলীর ৩ পাখি, নুর আলী ৩ পাখি, আহসানুল্লাহ ৭ পাখি জমিসহ প্রায় এক হাজার একর তিন ফসলি কৃষি জমি জবরদখল করে মাটি ভরাট করে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক বানিয়েছে। ভুক্তভোগী মোঃ আনিস জানায়, তার ৪ শতাংশ জমির ওপর বসতবাড়ি রয়েছে। বাড়ির চারপাশে ওয়াল উঠিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন। যাতে আমরা তার কাছে জমি বিক্রি করতে বাধ্য হই। আমি বাড়ি থেকে বের হতে পারি না। আমার স্বপ্নের বাড়ি এখন কারাগারে পরিণত হয়েছে। আরেক ভুক্তভোগী দেলোয়ার হোসেন জানায়, মুসলিমবাগ ব্রাহ্মণ কিত্তা মৌজায় তাদের ১৪৮ শতাংশ জমি দখল করে নিয়েছে শাহিনের সহযোগী ও ছাত্রলীগের সভাপতি সালিম উল্লাহ শিমুল। সাকতা মৌজায় সাকতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আলামিনের নেতৃত্বে দখল হয়েছে সাড়ে ২৭ শতাংশ জমি। আরেক ভুক্তভোগী দুলাল জানায়, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আনোয়ারের নেতৃত্বে সোনার বাংলা আবাসন প্রকল্পে দুই হাজার একর জমি দখল করে মাটি ভরাট করেছে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।
খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বর্তমানে জেলে আটক এবং সোনার বাংলা আবাসন প্রকল্পের আনোয়ার ও কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিন আহমেদ পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিণাত ফৌজিয়া, সহকারী কমিশনার (ভূমি) দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ সার্কেল আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) কেরানীগঞ্জ মডেল থানা সার্কেল জান্নাতুল মাওয়া এ দখলের সত্যতা স্বীকার করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রীনাত ফৌজিয়া বলেন, কেরানীগঞ্জের জমি দখলের বিরুদ্ধে তার কাছে ১০/১২টি অভিযোগ রয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের না পাওয়ায় অভিযোগগুলো সমাধান হচ্ছে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা