সবার ঐক্য থাকলেই সমাজ পরিবর্তন সম্ভব : ঢাবি ভিসি
- ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০, আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২:৪৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেছেন, সবার মধ্যে ঐক্য থাকলেই সমাজ পরিবর্তন সম্ভব। দেশকে ঘিরে অনেকবার ষড়যন্ত্র হয়েছে। তারুণ্যের শক্তিকে ব্যবহার করে প্রতিবারই এদেশের মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। দেশের ডাকে সাড়া দিয়ে তারুণ্যের সর্বজনীন শক্তি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জাতিকে নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে। আমাদের আর পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। দেশের স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এখনই সময়। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে তিন দিনব্যাপী ‘তারুণ্যের উৎসব’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ প্রতিপাদ্য নিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এই উৎসব আয়োজন করেছে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসবের উদ্বোধন করেন।
উৎসব উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: রেজাউল মাকছুদ জাহেদী এবং যুব উন্নয়ন অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. গাজী মো: সাইফুজ্জামান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এ সময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ভিসি অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, তারুণ্য শুধু বয়সের বিষয় নয়। এটি একটি মানসিক অবস্থান। সব বয়সের মানুষকেই তারুণ্য ধারণ করতে হবে। তারুণ্যের একটি সর্বজনীন রূপ আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারুণ্যের শক্তি সবার মধ্যে মেলবন্ধন সৃষ্টি করে। তরুণ ছাত্রসমাজের সাথে এদেশের তরুণ রিকশাচালক, তরুণ কৃষক, তরুণ সবজি বিক্রেতাসহ সব শ্রেণীপেশার তরুণ ঐক্যবদ্ধভাবে জুলাই আন্দোলনে শামিল হয়। সর্বস্তরের মানুষ তাদের পাশে দাঁড়ায়। ফলে একটি সফল গণ-অভ্যুত্থান সম্ভব হয়। তারুণ্যের এই উৎসব জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে সম্মান জানানোর একটি উপলক্ষ হিসেবে আমরা দেখতে পারি।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান দীর্ঘদিনের ফ্যাসিবাদী শোষণ থেকে এদেশের মানুষকে মুক্ত করেছে। যে তরুণদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা এই মুক্তি পেয়েছি, তাদের শক্তিকে জাগ্রত রাখতে দেশব্যাপী তারুণ্যের উৎসব আয়োজন করা হচ্ছে। প্রতিটি জেলা, উপজেলাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আয়োজিত এই উৎসবে তরুণ সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিচ্ছে। তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এদেশের তরুণ সমাজ মানুষকে নতুন স্বপ্ন দেখানোর একটি প্রেক্ষাপট সৃষ্টি করেছে। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও দেশ পুনর্গঠনে তরুণ সমাজ অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ঘোষিত তারুণ্যের উৎসব গত ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে দেশব্যাপী উদযাপিত হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে তিন-দিনব্যাপী এই উৎসব আয়োজন করা হয়েছে। তারুণ্যের শক্তি, আবেগ ও উদ্যোগী চেতনা ধারণ করে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা, পারস্পরিক সহযোগিতার মানসিকতা গড়ে তোলা এবং বাংলাদেশের বৈচিত্র্য ও সংস্কৃতির সৌন্দর্যকে তুলে ধরার লক্ষ্যে উদ্যাপিত হচ্ছে এই উৎসব। উৎসব উপলক্ষে তরুণ উদ্যোক্তাদের স্টল নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে মেলা। এ ছাড়া চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, ক্লিন ক্যাম্পেইন, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, কেস কম্পিটিশন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং জনপ্রিয় ব্যান্ডদলের অংশগ্রহণে মেগা কনসার্ট নিয়ে সাজানো হয়েছে তিন-দিনব্যাপী এই উৎসব। বিজ্ঞপ্তি।