প্রভোস্ট প্রক্টরসহ ছাত্রলীগের ২৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
- ঢাবি প্রতিনিধি
- ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:৪১, আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:৪১
২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আরবি বিভাগের ছাত্র ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থী মো: নাজমুল বাশারকে রাতভর নির্যাতন করে হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনার প্রায় ৮ বছর পর গত ৫ ফেব্রুয়ারিতে শাহবাগ থানায় ২৬ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ তৎকালীন হল প্রভোস্ট ও প্রক্টরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন নাজমুল বাশার।
মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৭ সালের ৯ জানুয়ারি ছাত্রলীগের তৎকালীন হল শাখা সভাপতি বরিকুল ইসলাম বাঁধনের নেতৃত্বে কয়েক দফা বঙ্গবন্ধু হলের ২২২ নম্বর রুমে ও ৩১৭ নম্বর রুমে আমাকে নির্যাতন চালানো হয়। নির্যাতনের সময় দুই হাত বেঁধে ও চোখ বেঁধে কিল-ঘুষি মারাসহ রড স্টাম্প দিয়ে পেটানো হয়। এ ছাড়াও হাতের নখ উপড়ে ফেলার জন্য প্লাস দিয়ে নখ টানা হয় ও হাতে প্লাস দিয়ে বাড়ি দিয়ে হাত থেঁতলে দেয়া হয়।
মামলার এজাহারে নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, আমার দেহ নিস্তেজ হয়ে পড়লে আসামিরা মৃত মনে করে আনুমানিক রাত ১২.৩০ ঘটিকার দিকে আমাকে হলের গেটে ফেলে রাখে। আমাকে হলের মধ্যে নির্যাতনের বিষয়ে হলের তৎকালীন প্রভোস্ট মফিজুর রহমান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর ড. এ এম আমজাদ অবগত থাকলেও আমাকে আসামিদের নির্যাতন থেকে বাঁচানোর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। বরং আসামিদেরকে নির্বিঘেœ নির্যাতন করতে প্রশাসনিক সহায়তা দিয়েছেন, উসকানি দিয়েছেন এবং হল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে আসামিদের নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছেন। আসামিদের বর্বর নির্যাতনে আমার বাম হাত ও বাম পা ভেঙে যায় এবং শরীরে অসংখ্য নিলাফুলা জখম হয়।
এ বিষয়ে শিবির নেতা মো: নাজমুল বাশার জানান, আমাকে সেদিন রাত ১০টা থেকে নির্যাতন করা শুরু হয়। আমার ১২টার পর আর কোনো হুঁশ ছিল না। রাত সাড়ে ৩টার দিকে আমি নিজেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দেখতে পাই। এক্স-রে রিপোর্টে দেখি আমার বাম পা ও হাত ভেঙে গিয়েছে। আমাকে হল প্রশাসন থেকে বাঁচানোর জন্য কোনো চেষ্টা করা হয়নি। আমি এরপর আর কোনো ক্লাস করতে পারিনি। পরে অনেক অনুরোধ করে শুধু পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলাম। আমি শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম বলেই আমাকে এমন নির্যাতন করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন : বরিকুল ইসলাম বাঁধন, সজিব হোসেন, সানাউল্লাহ সূর্য, আবু জাফর সোহাগ, সবুজ রেজা, রাকিব হাসান, নাহিদ উকিল জুয়েল, মুনতাসির বিল্লাহ, আল আমিন, শাকিল, আসিফ আলম, রাইয়ান কামাল, আব্দুল কাদের, মৃধা মো: জাহিদুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান পলাশ, আল আমিন, আরিফুল ইসলাম, শেখ জামি, ইরফান চৌধুরী, তানভির আহমেদ শাওন, মুসা, ফয়সাল, রবিউল, আসিফ, তুষার, হাসান। এজাহারে উল্লেখ করা আসামিরা বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগ ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাকর্মী।