ডিসি সম্মেলনে উঠছে ৩৫৪ প্রস্তাব
- শামছুল ইসলাম
- ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:১৯
মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে সরকারের সবচেয়ে বড় আয়োজন হচ্ছে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন। এবার প্রধান উপদেষ্টা তার কার্যালয়ে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। ১৬ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য এ সম্মেলনের কার্য অধিবেশনগুলো রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে হবে। স্থানীয় পর্যায়ের সকল বিভাগের কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধি, অংশীজন ও সেবা প্রত্যাশীদের সাথে আলোচনা করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্ট ১২৮৫টি প্রস্তাব জেলা প্রশাসক সম্মেলনে উপস্থাপনের জন্য প্রেরণ করেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা প্রস্তাবগুলো যাচাই-বাছাই করে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধির সাথে সভা করে সম্মেলনে উপস্থাপনের জন্য ৩৫৪টি প্রস্তাব চূড়ান্ত করে কার্যপত্রে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। মন্ত্রিপরিষদ সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
রেওয়াজ অনুযায়ী, ডিসি সম্মেলনে আট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনাররাও উপস্থিত থাকেন। সম্মেলনের সব কার্য অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
কর্মকর্তারা জানান, সম্মেলনের সব প্রস্তুতি এরই মধ্যে সম্পন্ন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তারিখ ঠিক করে তা প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের জন্য পাঠানো হলে তাতে তিনি সম্মতি দেন। ফলে কোনো জটিলতা তৈরি না হলে ফেব্রুয়ারির ১৬ তারিখ থেকে ডিসি সম্মেলন শুরু হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক সম্মেলনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকদের সাথে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের স্থানীয় জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সরকারের আইন, নীতি, বিধিসহ নানাবিধ বিষয়ে মতবিনিময় করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনাররা প্রধান উপদেষ্টার সাথে মুক্ত আলোচনার এবং প্রধান বিচারপতির সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও দিকনির্দেশনা গ্রহণের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতবিনিময় করবেন।
এবারের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে ৪টি অধিবেশন এবং ২৯টি কার্য-অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এসব অধিবেশনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা, বিশেষ সহকারী, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, তিন বাহিনী প্রধান, অ্যাটর্নি-জেনারেল, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, সিনিয়র সচিব, সচিব এবং বিভিন্ন দফতর ও সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সম্পর্কিত বিষয়ে মতবিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনাররা সম্মেলনে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জন্য নির্ধারিত অধিবেশনে জেলাপ্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনাররা তাদের প্রেরিত প্রস্তাবসমূহ আলোচনার জন্য উপস্থাপন করবেন। এ ছাড়া তারা সর্বসম্মত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সম্মেলনে উপস্থাপিত প্রস্তাবসমূহ পরবর্তীতে কার্যবিবরণী আকারে সব মন্ত্রণালয় এবং বিভাগে বাস্তবায়নের জন্য প্রেরণ করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তথ্যানুযায়ী, গত বছরের ডিসি সম্মেলনে ২১২টি সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এগুলোর মধ্যে ১৩০টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন বা নিষ্পত্তি হয়েছে, ৮২টি বাস্তবায়নাধীন। গত বছরের ডিসি সম্মেলনের ৬২ শতাংশ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়েছে। ২০২৩ সালের ডিসি সম্মেলনের ৮৪ শতাংশ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়েছিল।
গতবারের ডিসি সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম জোরদারকরণ; ভূমি ব্যবস্থাপনা; আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম; স্থানীয় পর্যায়ে কর্ম-সৃজন ও দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন; সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি বাস্তবায়ন; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ই-গভর্ন্যান্স; শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ; স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ; পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ রোধ; ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয়।
জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জেলা ও মাঠ প্রশাসন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীম বলেন, জেলা প্রশাসক সম্মেলনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকরা যে সব প্রস্তাব পাঠিয়েছেন তা যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত করা হচ্ছে। আশা করছি, নির্ধারিত সময়ে জেলা প্রশাসক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা