সচিবালয় থেকে ওয়ার্ডে শাসনব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে : মান্না

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, সচিবালয় থেকে শুরু করে নিম্ন স্তরের ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড পর্যায়ে শাসন ও ক্ষমতার পরিবর্তন আনতে হবে। নতুবা পরিবর্তনের কোনো সুফল পাওয়া যাবে না।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণশক্তি সভা আয়োজিত ‘শাসন ব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তন ও নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূইয়ার সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন। গণশক্তি সভার সভাপতি সাদেক রহমানের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আমিনুল করিম। এতে প্রবন্ধকার ছিলেন বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান বীরপ্রতীক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফেরদৌস আজিজ, মেজর (অব.) রেজাউল হান্নান শাহীন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাবিবুর রহমান, সাংবাদিক কাজী ফারুক, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক আলাউদ্দিন কামরুল প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান মান্না চলমান সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় উত্থাপন করে অন্তর্বর্তী সরকারের নানামুখী সমালোচনা করেন। এ সময় তিনি সরকারকে বিভিন্ন পরামর্শও দেন। মান্না বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান কয়েক দিনের ব্যবধানে সংবিধান পরিবর্তন করে বাকশাল কায়েম করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিল। এখন কেন জনগণ যেভাবে চায় সেভাবে সংবিধান পরিবর্তন করা যাবে না? এজন্য অবশ্যই জনগণের ম্যান্ডেট মেনে নিতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কেউ নিজ ইচ্ছায় বসেনি, তাদেরকে সরকারে বসানো হয়েছে। অথচ কোনো কোনো দল এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে!
কেন এসব হুমকি-ধমকি প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, এই সরকার ক্ষমতা ধরে রাখতে আসেনি, রাখবে না, রাখতে পারবেও না। এই সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনের চেষ্টা করছে। তবে শুধু সংস্কার নয় গণহত্যার বিচার কাজও সম্পন্ন করা প্রয়োজন। রাজনৈতিক সরকার গণহত্যার বিচার রাজনৈতিক বিবেচনায় করবে, ফলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে না এবং বিচার জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এ জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের মূল দায়িত্ব ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থপাচার এবং গণহত্যার সাথে জড়িত ও মদদদাতাদের বিচার করা এবং রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করা। অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করলে বিপ্লব ব্যর্থ হবে। বিপ্লবের সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধভাবে এই সরকারকে সহায়তা করা।