৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩১, ২৯ রজব ১৪৪৬
`

রূপগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলে সংঘর্ষ, গাড়িতে আগুন

গুলিবিদ্ধসহ আহত ২০
-

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে প্রভাব বিস্তার ও আড়ত দখলকে কেন্দ্র করে সেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, গুলিবর্ষণ ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় জিপগাড়ি, মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও আগুন দেয়া হয়। সংঘর্ষে রাফি আহমেদ স্বপন ও রাজু ভুইয়া নামে দু’জন গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের সাওঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন সাওঘাট এলাকায় বিসমিল্লাহ আড়ত নিয়ে জাপান-বাংলাদেশ গ্রুপের চেয়ারম্যান সেলিম প্রধানের সাথে স্থানীয় ব্যবসায়ী মুজিবর রহমানের বিরোধ চলে আসছিল। মজিবুর রহমানের দাবি, সেলিম প্রধানের মালিকানাধীন জমি তিনি ১০ বছরের জন্য চুক্তি ভিত্তিতে ভাড়া নেন। পরে সেখানে বালু ভরাট ও সেড নির্মাণ করে কাঁচামালের আড়ত গড়ে তোলেন। বর্তমানে পেশি শক্তি খাটিয়ে আড়তটি দখলের চেষ্টা করছেন সেলিম প্রধান। অপরদিকে সেলিম প্রধানের দাবি, ভুয়া চুক্তিনামা তৈরি করে জোরপূর্বক জমি দখল করে আড়ত গড়ে তোলেন মজিবুর রহমান। এদিকে আড়তটি দখল করতে সেলিম প্রধানের পক্ষ নেয় জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান ও তার লোকজন। অপরদিকে মজিবুর রহমান ও আড়তের ব্যবসায়ীদের পক্ষ নেয় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম ও তার লোকজন।

এ অবস্থায় গতকাল দুপুরে আড়তের পাশে সেলিম প্রধানের বাড়িতে মাসুদুর রহমানের লোকজন অবস্থান নেয়। এ সময় আড়তের পাশের সড়ক দিয়ে রফিকুল ইসলাম নেতাকর্মীদের নিয়ে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসবিরোধী মিছিল বের করেন। এ সময় সেলিম প্রধানের বাড়ির ভেতর থেকে ওই মিছিলে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। এতে উভয় পক্ষে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, গুলিবর্ষণ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় কয়েকজনকে পিস্তল হাতে গুলি করতে দেখা গেছে।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। এর মধ্যে রাজু ও স্বপন নামের দু’জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ সময় সেলিম প্রধানের একটি জিপগাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়। এ ছাড়া ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেয়া হয়। সংঘর্ষ চলাকালে গাউছিয়া মার্কেট, তাঁতবাজার, হাজী শপিং কমপ্লেক্সসহ আশপাশের মার্কেট ও হাঁট-বাজারের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। জনমনে চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ইউএনও সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মেহেদী ইসলাম বলেন, সেলিম প্রধানের সাথে মুজিবুর রহমানের বিসমিল্লাহ আড়ত নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। যেহেতু এখানে গুলিবষর্ণের ঘটনা ঘটেছে আমরা অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চালাবো। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
ইউএনও সাইফুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আড়তের আসল মালিক কে সেটির জন্য আমরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবো।

 


আরো সংবাদ



premium cement