রঙ-ব্রাশের মাখামাখিতে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে অমর একুশের গ্রন্থমেলা
- আবুল কালাম
- ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
আর মাত্র তিন দিন পরই শুরু হচ্ছে একুশে গ্রন্থমেলা। জ্ঞানপিপাসুদের প্রাণের এ মেলা শুরুর পূর্বমুহূর্তে রঙ-ব্রাশের মাখামাখিতে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। তারই আলোকে মেলার দুই প্রাঙ্গণে দেখা যায় বিরামহীন কর্ম।
গতকাল বিকেলে মেলার দুই প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, কোথায় স্টলের কাজ চূড়ান্ত পর্বে চলছে রঙের কাজ। কোনোটাতে এখনো ২০ শতাংশ কাজ বাকি। সব মিলিয়ে পুরো প্রাঙ্গণজুড়ে বইছে উৎসবের ছোঁয়া।
অন্যদিকে মেলায় প্রবেশপথের প্রতিটিতে বিছানো হয়েছে ইট। তার ওপর বালু ফেলা হলেও তার কাজ অসমাপ্ত। যার কারণে মানুষের আনাগোনায় তাতে উড়ছে ধুলো। অনেক স্টলে ঝুলানো হয়েছে সাইনবোর্ড। আবার কোথাও চলছে র্যাক তৈরির কাজ। এভাবে সময় ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে ব্যস্ততা বেড়েছে মেলা মাঠে।
শ্রমিকরা জানান, সময় ঘনিয়ে আসায় তারা রাতদিন কাজ করছেন। একাধিক শিফটে ভাগ হয়ে বিরতি ছাড়াই তাদের কাজ চলছে। তাদের দাবি নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ পুরোপুরি শেষ হবে।
এবারের মেলার থিম হচ্ছে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ’। তাই স্টলে কিছুটা ভিন্নতা আনা হচ্ছে। লাল, কালো ও সাদা রঙের মাধ্যমে মেলায় জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতা বিপ্লবের প্রেক্ষাপট ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। লাল বিপ্লবের এবং কালো হবে শোকের প্রতীক। থাকবে জুলাই চত্বর নামে আলাদা চত্বর। পাশাপাশি নানাভাবে ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানকে উপস্থাপন করা হবে। এ ছাড়া মেলাকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সেগুলোর নামকরণ ভাষাশহীদদের নামে করা হয়েছে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি মেলা উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অন্যদিকে ১০০টি নতুন প্রকাশনা সংস্থা যুক্ত হওয়াতে এবার মেলার পরিধি আরো বাড়ানো হয়েছে। সাধারণত প্রতি বছর চার থেকে সাড়ে চার শ’ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিয়ে থাকে। এর মধ্যে প্যাভিলিয়ন হিসেবে রয়েছে ৩৪টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান, চার ইউনিটে ২৫টি প্রতিষ্ঠান, তিন ইউনিট ৫০টি প্রতিষ্ঠান, দুই ইউনিট ১৬৫টি এবং এক ইউনিট ১৬৬টি প্রতিষ্ঠান।
তবে বৈষম্যবিরোধী সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি ও বাংলাদেশ সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবার পরিচালনা পর্ষদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে কালো তালিকাভুক্ত প্রকাশকদের প্যাভিলিয়ন বাতিল করেছে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ। মেলা পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্যাভিলিয়ন বাতিল হওয়া প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- তাম্রলিপি, কাকলী প্রকাশনী, পাঠক সমাবেশ, পুঁথিনিলয়, সময়, মিজান পাবলিশার্স, চারুলিপি, জিনিয়াস পাবলিকেশন, নালন্দা, পার্ল পাবলিকেশন, বিশ্বসাহিত্য ভবন ও শব্দ শৈলী। এ ছাড়া বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসেবে প্রকাশনা জগতে পরিচিত আগামী প্রকাশনী, অন্য প্রকাশ ও অনুপম প্রকাশনীর প্যাভিলিয়ন সাইজ ২৪/২৪ থেকে কমিয়ে ২০/২০ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর আগে গতবারের মেলার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবারের মেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিবর্তে পূর্বাচল নয়তো অন্যত্র আয়োজনের নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু হাসিনা সরকারের পতনের পর দৃশ্যপট পাল্টে যায়। নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক পদেও পরিবর্তন আসে। এরপর বইমেলার বিষয়টি সামনে এলে তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা করে বাংলা একাডেমি। তাতে পুরাতন স্থান বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই মেলা হওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা